ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেসিডেন্ট পদে যোগ্য নন ট্রাম্প, ১১১ সাবেক রিপাবলিকান এমপির চিঠি

  • পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে
  • 11

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির ১১১ জন সাবেক আইনপ্রণেতা মনে করেন, এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী ও সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে ডোনাল্ড প্রার্থীর। এমনকি, এসব এমপি তাদের দলীয় প্রার্থী ট্রাম্পের পরিবর্তে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমালা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়ে চিঠিও দিয়েছেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্ব) একটি চিঠি প্রকাশ করে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির। সেখানে স্বাক্ষর রয়েছে এই ১১১ জন সাবেক এমপির। স্বাক্ষরকারী এমপিরাও চিঠিটির বিষয়বস্তু ও নিজেদের নাম দস্তখতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে এমপিরা বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যেসব গুণাবলী ও সক্ষমতা প্রয়োজন- তা কমলা হ্যারিসের রয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেই।

ট্রাম্পের গত মেয়াদের শাসনকাল স্মরণ করে চিঠিতে আইনপ্রণেতারা বলেন, এর আগে যখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন, সে সময় প্রায় প্রতিদিন সরকারের মধ্যে কোনো না কোনো ইস্যুতে হট্টগোল বাধতো। এছাড়া ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে (যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন) হামলার পেছনে তার উসকানি ছিল। এর মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্টের শপথ ভঙ্গ করেছেন।

‘ট্রাম্প যদিও নিজের সম্পর্কে প্রশাংসা করে বলেন, তিনি সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি আলোচনায় বিশ্বাসী। কিন্তু তার অনিশ্চিত স্বভাব এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে তার আচরণ ও তার উপদেষ্টাদের বেপরোয়া ব্যবহার খুবই দায়িত্বহীন, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্যই নন, বরং জনগণের আস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদের জন্য আনফিট।

আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন কমলা হ্যারিস, যিনি বর্তমানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন।

বুধবার প্রকাশিত চিঠিটিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন, তাদের বেশিরভাগই রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা। এদের অনেকে ট্রাম্পের সময় দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। এমনকি এমন সাক্ষরকারীও বেশ কয়েকজন আছেন, যারা সাবেক রিপাবলিকান মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান, জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এবং জর্জ বুশের সময়ে কংগ্রেসের এমপি ছিলেন।

আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিয়ে রিপাবলিকান পার্টিতে দিন দিন প্রকট হচ্ছে বিভাজন। এই সুযোগে ট্রাম্পবিরোধী রিপাবলিকানদের দলে টানতে ‘রিপাবলিকানস ফর হ্যারিস’ নামে একটি উইংও খুলেছে কমালার প্রচারণা শিবির।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ডিক চেনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, নির্বাচনে তিনি কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করবেন। অন্যদিকে, তার মেয়ে ও বর্তমানে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য লিজ চেনি রিপাবলিকান পার্টিতে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় সমর্থক।

মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিভাজনের ফলে লাভবান হচ্ছেন কমলা। কারণ, গত দুই মাসে প্রায় ২ ডজন রিপাবলিকান এমপি তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি, রিপাবলিকানপন্থি কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতাও প্রকাশ্যে কমলাকে সমর্থন দিয়েছেন।

সূত্র : সিএনবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ২০ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রেসিডেন্ট পদে যোগ্য নন ট্রাম্প, ১১১ সাবেক রিপাবলিকান এমপির চিঠি

পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির ১১১ জন সাবেক আইনপ্রণেতা মনে করেন, এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলী ও সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে ডোনাল্ড প্রার্থীর। এমনকি, এসব এমপি তাদের দলীয় প্রার্থী ট্রাম্পের পরিবর্তে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমালা হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়ে চিঠিও দিয়েছেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্ব) একটি চিঠি প্রকাশ করে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির। সেখানে স্বাক্ষর রয়েছে এই ১১১ জন সাবেক এমপির। স্বাক্ষরকারী এমপিরাও চিঠিটির বিষয়বস্তু ও নিজেদের নাম দস্তখতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে এমপিরা বলেছেন, আমরা বিশ্বাস করি যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যেসব গুণাবলী ও সক্ষমতা প্রয়োজন- তা কমলা হ্যারিসের রয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেই।

ট্রাম্পের গত মেয়াদের শাসনকাল স্মরণ করে চিঠিতে আইনপ্রণেতারা বলেন, এর আগে যখন তিনি ক্ষমতায় ছিলেন, সে সময় প্রায় প্রতিদিন সরকারের মধ্যে কোনো না কোনো ইস্যুতে হট্টগোল বাধতো। এছাড়া ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে (যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন) হামলার পেছনে তার উসকানি ছিল। এর মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্টের শপথ ভঙ্গ করেছেন।

‘ট্রাম্প যদিও নিজের সম্পর্কে প্রশাংসা করে বলেন, তিনি সমস্যার সমাধানের জন্য তিনি আলোচনায় বিশ্বাসী। কিন্তু তার অনিশ্চিত স্বভাব এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে তার আচরণ ও তার উপদেষ্টাদের বেপরোয়া ব্যবহার খুবই দায়িত্বহীন, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্যই নন, বরং জনগণের আস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদের জন্য আনফিট।

আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। এই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন কমলা হ্যারিস, যিনি বর্তমানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন।

বুধবার প্রকাশিত চিঠিটিতে যারা স্বাক্ষর করেছেন, তাদের বেশিরভাগই রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা। এদের অনেকে ট্রাম্পের সময় দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। এমনকি এমন সাক্ষরকারীও বেশ কয়েকজন আছেন, যারা সাবেক রিপাবলিকান মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান, জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এবং জর্জ বুশের সময়ে কংগ্রেসের এমপি ছিলেন।

আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিয়ে রিপাবলিকান পার্টিতে দিন দিন প্রকট হচ্ছে বিভাজন। এই সুযোগে ট্রাম্পবিরোধী রিপাবলিকানদের দলে টানতে ‘রিপাবলিকানস ফর হ্যারিস’ নামে একটি উইংও খুলেছে কমালার প্রচারণা শিবির।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ডিক চেনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, নির্বাচনে তিনি কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করবেন। অন্যদিকে, তার মেয়ে ও বর্তমানে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য লিজ চেনি রিপাবলিকান পার্টিতে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় সমর্থক।

মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিভাজনের ফলে লাভবান হচ্ছেন কমলা। কারণ, গত দুই মাসে প্রায় ২ ডজন রিপাবলিকান এমপি তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি, রিপাবলিকানপন্থি কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতাও প্রকাশ্যে কমলাকে সমর্থন দিয়েছেন।

সূত্র : সিএনবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ২০ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: