ঢাকা , বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জরিমানা শেয়ার কারসাজির দায়ে

  • পোস্ট হয়েছে : ৩ ঘন্টা আগে
  • 16

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত-সমালোচিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির দায়ে চার ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এটি কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার করা সর্বোচ্চ জরিমানা।

মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির ৯২৪তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজিকারীদের এ জরিমানা করা হয়।

সভা শেষে বিএসইসির মুখপাত্র ফারহানা ফারুকী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় চার ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, আব্দুর রউফকে ৩১ কোটি ও মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া শেয়ার কারসাজির দায়ে পাঁচ প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি, আর্ট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে ৭০ কোটি, জুপিটার বিজনেস লিমিটেডকে সাড়ে ২২ কোটি, অ্যাপোলো ট্রেডিং লিমিটেডকে ১৫ কোটি ১ লাখ ও ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে ৪ কোটি ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আলোচ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১ সালের ২৮ জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯০ থেকে বেড়ে ১১৯ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়ায়।

আলোচ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো এ সময়ে করাসাজির মাধ্যমে দর বাড়িয়ে বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রি করে ১৫৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার মূলধনি মুনাফা অর্জন করেছে। এ সময় তাদের কাছে থাকা অবিক্রীত শেয়ারে মুনাফার পরিমাণ ছিল ৯৮৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ১৪৮ থেকে বেড়ে ১৫২ টাকায় দাঁড়ায়। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার বিক্রি করে ৩১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার মূলধনি মুনাফা অর্জন করেছে।

পাশাপাশি তাদের কাছে থাকা অবিক্রীত শেয়ারে মুনাফার পরিমাণ ছিল ৫২৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বিএসইসির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুনানির জন্য ডাকা হলেও তারা উপস্থিত হননি।

বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর ২১ টাকা ১২ পয়সা ছিল। ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর দর বেড়ে ১৭৮ টাকা ২৮ পয়সায় দাঁড়ায়।

ডিএসইর একটি সূত্র জানায়, বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির ঠিক আগে আগে বিপুল পরিমাণ শেয়ার ৪০ টাকার কাছাকাছি দামে রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি থেকে কারসাজিকারীরা ব্লক মার্কেটে কিনে নিয়েছিল। এতে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। সেই সময়ে এটি ছিল শেয়ারবাজারের আলোচনায় ‘টক অব দ্যা টাউন’। কিন্তু তদন্ত রিপোর্টে এ অনিয়মের বিষয়ে কোন তথ্য আনা হয়নি এবং আইসিবি’র কোন শাস্তিও আরোপ হয়নি। বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করার দাবি জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিজনেস আওয়ার/ ০২ অক্টোবর/ এন এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ জরিমানা শেয়ার কারসাজির দায়ে

পোস্ট হয়েছে : ৩ ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত-সমালোচিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির দায়ে চার ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এটি কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার করা সর্বোচ্চ জরিমানা।

মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির ৯২৪তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজিকারীদের এ জরিমানা করা হয়।

সভা শেষে বিএসইসির মুখপাত্র ফারহানা ফারুকী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় চার ব্যক্তি ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, আব্দুর রউফকে ৩১ কোটি ও মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া শেয়ার কারসাজির দায়ে পাঁচ প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি, আর্ট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে ৭০ কোটি, জুপিটার বিজনেস লিমিটেডকে সাড়ে ২২ কোটি, অ্যাপোলো ট্রেডিং লিমিটেডকে ১৫ কোটি ১ লাখ ও ট্রেডনেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে ৪ কোটি ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আলোচ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১ সালের ২৮ জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯০ থেকে বেড়ে ১১৯ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়ায়।

আলোচ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো এ সময়ে করাসাজির মাধ্যমে দর বাড়িয়ে বেক্সিমকোর শেয়ার বিক্রি করে ১৫৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার মূলধনি মুনাফা অর্জন করেছে। এ সময় তাদের কাছে থাকা অবিক্রীত শেয়ারে মুনাফার পরিমাণ ছিল ৯৮৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ১৪৮ থেকে বেড়ে ১৫২ টাকায় দাঁড়ায়। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার বিক্রি করে ৩১৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকার মূলধনি মুনাফা অর্জন করেছে।

পাশাপাশি তাদের কাছে থাকা অবিক্রীত শেয়ারে মুনাফার পরিমাণ ছিল ৫২৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বিএসইসির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুনানির জন্য ডাকা হলেও তারা উপস্থিত হননি।

বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর ২১ টাকা ১২ পয়সা ছিল। ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর দর বেড়ে ১৭৮ টাকা ২৮ পয়সায় দাঁড়ায়।

ডিএসইর একটি সূত্র জানায়, বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির ঠিক আগে আগে বিপুল পরিমাণ শেয়ার ৪০ টাকার কাছাকাছি দামে রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি থেকে কারসাজিকারীরা ব্লক মার্কেটে কিনে নিয়েছিল। এতে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। সেই সময়ে এটি ছিল শেয়ারবাজারের আলোচনায় ‘টক অব দ্যা টাউন’। কিন্তু তদন্ত রিপোর্টে এ অনিয়মের বিষয়ে কোন তথ্য আনা হয়নি এবং আইসিবি’র কোন শাস্তিও আরোপ হয়নি। বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করার দাবি জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বিজনেস আওয়ার/ ০২ অক্টোবর/ এন এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: