বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: যারা বিশ্বকে একটি সুন্দর আবাসভূমি করে তোলায় অবদান রেখেছেন, আগামী সপ্তাহের নোবেল পুরস্কার তাদের মাথায় কৃতিত্বের মুকুট পরাবে। মধ্যপ্রাচ্যে চাঞ্চল্যকর উত্তেজনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সুদানে দুর্ভিক্ষ ও জলবায়ু সংকটের মধ্যে যারা আশার অলো সঞ্চার করেছেন, পুরস্কারের জন্য তাদের নামই ঘোষণা করা হবে। পুরস্কারের প্রবর্তক সুইডিশ জনহিতৈষী আলফ্রেড নোবেল তার ১৮৯৫ সালের উইলে শর্ত দিয়েছিলেন, যারা মানবজাতিকে সবচেয়ে বেশি সেবা দিতে পারবেন, তারাই এ পুরস্কার পাবেন।
আগামী ৭ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। স্টকহোম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ছয়টি নোবেলের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ শান্তি পুরস্কারটি নিয়ে ১১ অক্টোবর নরওয়ের নোবেল কমিটির সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার বাছাইয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ড্যান স্মিথ বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এ বছর কাউকে শান্তি পুরস্কার না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘অনেকে খুব কঠোর পরিশ্রম করছেন, কিন্তু পুরস্কারটি কেউ পাচ্ছেন না। আমাদের জেগে উঠতে হবে ও বুঝতে হবে, আমরা অত্যন্ত এক বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আছি।
এখন বিশ্বজুড়ে ৫০টিরও বেশি সশস্ত্র সংঘাত হচ্ছে। গত দুই দশকে সশস্ত্র সংঘাতের প্রাণঘাতী বৈশিষ্ট্য নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।’তবে শান্তি পুরস্কার প্রদান না করাকে পুরস্কার কমিটির ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হবে, তাই এ পুরস্কার অবশ্যই দেওয়া হবে। কমিটির সেক্রেটারি ওলাভ এনজোলস্টাড এএফপিকে বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত, এ বছরও শান্তি পুরস্কারের জন্য একজন যোগ্য প্রার্থী থাকবেন।
গত বছর ইরানে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কারাগারে থাকা নার্গিস মোহাম্মদীকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এ বছর শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬টি মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষিত হবে ১০ অক্টোবর। স্টকহোমের সাহিত্যিকদের তালিকায় অস্ট্রেলিয়ান ঔপন্যাসিক জেরাল্ড মুরনানে, ব্রিটেনের সালমান রুশদি, অ্যান্টিগুয়ান-আমেরিকান লেখক জ্যামাইকা কিনকেড, কানাডিয়ান কবি অ্যান কারসন, হাঙ্গেরির লাসলো ক্রাসনাহোরকাই, রুমানিয়ার মিরসিয়া কার্তারেস্কু, কেনিয়ার এনগুগি ওয়া থিওং’ও ও জাপানের হারুকি মুরাকামির নাম রয়েছে। গত বছর নরওয়েজিয়ান নাট্যকার জন ফস এই সম্মান অর্জন করেন।
ফিজিওলজি বা মেডিসিনে পুরস্কারের মধ্য দিয়ে আগামী সোমবার নোবেল মৌসুম শুরু হচ্ছে। গত বছর ফিজিওলজি বা মেডিসিনের পুরস্কারটি গবেষক ক্যাটালিন কারিকো ও ড্রু উইসম্যানকে দেওয়া হয়েছিল। কভিড-১৯ ভ্যাকসিনের যুগান্তকারীর পথ প্রশস্তকারী মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তিতে তাদের অবদানের জন্য পুরস্কারটি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার পদার্থবিদ্যায় ও বুধবার রসায়নের পুরস্কার দেওয়া হবে। পরের সোমবার (১৪ অক্টোবর) অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে নোবেল মেমোরিয়াল পুরস্কারের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে ২০২৪ সালের নোবেল মৌসুম।
এই বছর প্রতিটি বিষয়ের বিজয়ীরা পুরস্কার হিসেবে ১১ মিলিয়ন ক্রোনার (১০ লাখ ডলার) পাবেন। একাধিক বিজয়ীর ক্ষেত্রে পুরস্কারের অর্থ তাদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
সূত্র : বাসস
বিজনেস আওয়ার/ ০৩ অক্টোবর / হাসান