বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শিল্পকারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দূর হলে আগামী দিনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যদি উন্নতি হয়, শ্রমিক অসন্তোষ যদি দূর হয় আগামী দিনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবো। প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান প্রয়োজন। মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান ও শামস মাহমুদ।
ডিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে আহসান খান চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্য দূর করা। মানুষের অবস্থার উন্নতি, কর্মসংস্থান, মূল্যস্ফীতির উন্নতি। ব্যবসায়ীরাও দেশপ্রেমিক, তারা দেশের উন্নয়ন চান, মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে চান।
কারখানায় চলমান শ্রমিক অসন্তোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারলে দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি আমাদের সমস্যা দেখে তাহলে তাদের পরামর্শ নিতে চাই। যারা এখন অসন্তোষ করছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে এই সংস্কৃতি আমাদের ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা দিতে হবে।
নিজের কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের অভিজ্ঞতা জানিয়ে আহসান খান বলেন, আমাদের কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের কোনো ঘটনা কখনোই আগে হয়নি। এবারই প্রথম শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা দেশের আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সরকারের সহায়তায়, শ্রমিক ও মালিকের বোঝাপাড়ার মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় দেড় লাখ মানুষ আমার কারখানায় কাজ করে। আজ কারখানায় ঢুকতে ভয় লাগে। আমি কী নিজের জীবন নিয়ে ফেরত আসতে পারবো। যদি এ ধরনের শঙ্কা থাকে তাহলে আগামী দিনে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মানুষ ব্যবসায়ীদের কাছে কর্মসংস্থান প্রত্যাশা করে জানিয়ে তিনি বলেন, অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান করা আমাদের গুরু দায়িত্ব।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যদি উন্নতি হয়, শ্রমিক অসন্তোষ যদি দূর হয় আগামী দিনে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবো। প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কর্মসংস্থান প্রয়োজন। মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে ব্যবসায়ীরা কষ্টে আছে।
ব্যবসায়ীদেরও অনেক সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, চায়না থেকে অনেক ব্যবসা আমরা বাংলাদেশে এনেছি। সেগুলো ধরে রাখতে আমাদের স্থিতিশীলতা দরকার। ঋণের সুদ ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬ শতাংশ গেলে এটা কীভাবে পরিশোধ করবো জানি না। এই ঋণের সুদ নিয়ে আমাদের বসা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, মূলধনি যন্ত্রপাতি বসাতে ও আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিল্প মালিকদের প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে কিছু অর্থ সাহায্য দেওয়া যেতে পারে।
ব্যবসায়ীরাও পরিবেশকে ভালোবাসে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু পরিবেশের নামে প্লাস্টিক ব্যবসা হারিয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক বিদেশে রপ্তানি করি। আমাদের পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিকের ব্যবসা করারও সুযোগ আছে।
বিজনেস আওয়ার/ ০৫ অক্টোবর / রহমান