ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রতন টাটা সম্পর্কে জানুন কিছু অজানা তথ্য

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
  • 28

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: রতন টাটা ছিলেন ভারতের অন্যতম ব্যবসায়ী। ভারতের এই সফল ব্যবসায়ী এবং টাটা গ্রুপের কর্ণধার বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ভারতের অন্যতম এই টাইকুন টাটা গ্রুপকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। লবণ থেকে সফটওয়্যার কী নেই টাটা গ্রুপে? দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়েছেন রতন টাটা। শতাধিক কোম্পানি এবং ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে কাজ করছে ভারতের অন্যতম শীর্ষ এই গ্রুপটি। টাটা গ্রুপের বার্ষিক রাজস্ব আয় ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি।

১৫৫ বছরের পুরোনো টাটা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জামশেতজি টাটা। তাকে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের পথপ্রদর্শক হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে ইস্পাত থেকে শুরু করে সফটওয়্যার, উড়োজাহাজ থেকে লবণের মতো খাতে তাদের ব্যবসা রয়েছে।

পিটার ক্যাসির ‘দ্য স্টোরি অব টাটা’ নামের বইয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির নীতি সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বলা হয়, পুঁজিবাদকে পরোপকারের সঙ্গে যুক্ত করে এমনভাবে ব্যবসা করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল যেন তা অন্যদের জীবনমান আরও ভালো করতে পারে।

টাটা গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি টাটা সন্সের আওতায় অনেকগুলো কোম্পানি রয়েছে। সেগুলি মূলত একটি জনহিতকর ট্রাস্টের মালিকানাধীন।

রতন টাটা ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক পারসি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ এই পরিবারের পূর্বপুরুষরা ব্রিটিশ আমলে ইরান থেকে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯৪০ সালে রতন টাটার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

স্কুলজীবন শেষ করে রতন টাটা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে যান। সেখানে তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যে ডিগ্রি লাভ করেন। সেখানে দীর্ঘ সাত বছর থাকার সময় তিনি গাড়ি চালানো এবং হেলিকপ্টার চালানো শিখেছিলেন। তবে সে সময় কিছু বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা ছিল তার। কলেজে হেলিকপ্টার চালানোর সময় তিনি একবার একটি ইঞ্জিন হারিয়ে ফেলেন এবং দুবার তার প্লেনের একক ইঞ্জিন হারিয়েছিলেন।

১৯৬২ সালে তার দাদি লেডি নাভাজবাইয়ের অসুস্থত হয়ে পড়ায় তিনি ভারতে ফিরে আসেন। সে সময়ই জেআরডি টাটা তাকে টাটা গ্রুপে যোগ দিতে বলেন। রতন টাটা জানান, তিনি জেআরডি টাটাকে গুরু মানতেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, জে আরডি টাটা তার কাছে বাবা ও ভাইয়ের মতো।

রতন টাকাকে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে নিজেদের ইস্পাতের কারখানায় পাঠানো হয়। তিনি সেখানে কয়েক বছর কাজ শিখেন। সেখানে ব্যবস্থাপকের প্রযুক্তিবিষয়ক সহকারীর দায়িত্ব পান। ৭০ এর দশকের শুরুতে তিনি টাটার রেডিও, টেলিভিশন ও অন্যান্য টেক্সটাইলের দায়িত্ব পান।

অর্ধশতক ধরে টাটা গ্রুপকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর জেআরডি টাটা ১৯৯১ সালে রতন টাটাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর রতন টাটাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের পরিশ্রম আর সাধনা দিয়ে তিনি ভারতের একজন অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পান।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ১০ অক্টোবর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

রতন টাটা সম্পর্কে জানুন কিছু অজানা তথ্য

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: রতন টাটা ছিলেন ভারতের অন্যতম ব্যবসায়ী। ভারতের এই সফল ব্যবসায়ী এবং টাটা গ্রুপের কর্ণধার বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ভারতের অন্যতম এই টাইকুন টাটা গ্রুপকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। লবণ থেকে সফটওয়্যার কী নেই টাটা গ্রুপে? দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিয়েছেন রতন টাটা। শতাধিক কোম্পানি এবং ৬ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে কাজ করছে ভারতের অন্যতম শীর্ষ এই গ্রুপটি। টাটা গ্রুপের বার্ষিক রাজস্ব আয় ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি।

১৫৫ বছরের পুরোনো টাটা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জামশেতজি টাটা। তাকে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের পথপ্রদর্শক হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে ইস্পাত থেকে শুরু করে সফটওয়্যার, উড়োজাহাজ থেকে লবণের মতো খাতে তাদের ব্যবসা রয়েছে।

পিটার ক্যাসির ‘দ্য স্টোরি অব টাটা’ নামের বইয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির নীতি সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বলা হয়, পুঁজিবাদকে পরোপকারের সঙ্গে যুক্ত করে এমনভাবে ব্যবসা করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল যেন তা অন্যদের জীবনমান আরও ভালো করতে পারে।

টাটা গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি টাটা সন্সের আওতায় অনেকগুলো কোম্পানি রয়েছে। সেগুলি মূলত একটি জনহিতকর ট্রাস্টের মালিকানাধীন।

রতন টাটা ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক পারসি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষিত ও সমৃদ্ধ এই পরিবারের পূর্বপুরুষরা ব্রিটিশ আমলে ইরান থেকে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯৪০ সালে রতন টাটার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

স্কুলজীবন শেষ করে রতন টাটা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে যান। সেখানে তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যে ডিগ্রি লাভ করেন। সেখানে দীর্ঘ সাত বছর থাকার সময় তিনি গাড়ি চালানো এবং হেলিকপ্টার চালানো শিখেছিলেন। তবে সে সময় কিছু বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা ছিল তার। কলেজে হেলিকপ্টার চালানোর সময় তিনি একবার একটি ইঞ্জিন হারিয়ে ফেলেন এবং দুবার তার প্লেনের একক ইঞ্জিন হারিয়েছিলেন।

১৯৬২ সালে তার দাদি লেডি নাভাজবাইয়ের অসুস্থত হয়ে পড়ায় তিনি ভারতে ফিরে আসেন। সে সময়ই জেআরডি টাটা তাকে টাটা গ্রুপে যোগ দিতে বলেন। রতন টাটা জানান, তিনি জেআরডি টাটাকে গুরু মানতেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, জে আরডি টাটা তার কাছে বাবা ও ভাইয়ের মতো।

রতন টাকাকে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে নিজেদের ইস্পাতের কারখানায় পাঠানো হয়। তিনি সেখানে কয়েক বছর কাজ শিখেন। সেখানে ব্যবস্থাপকের প্রযুক্তিবিষয়ক সহকারীর দায়িত্ব পান। ৭০ এর দশকের শুরুতে তিনি টাটার রেডিও, টেলিভিশন ও অন্যান্য টেক্সটাইলের দায়িত্ব পান।

অর্ধশতক ধরে টাটা গ্রুপকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর জেআরডি টাটা ১৯৯১ সালে রতন টাটাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর রতন টাটাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের পরিশ্রম আর সাধনা দিয়ে তিনি ভারতের একজন অন্যতম সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পান।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ১০ অক্টোবর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: