বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে। এমন বাজারে বিপরীত পথে হেঁটেছে কিছু প্রতিষ্ঠান। দাম বাড়ার বদলে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম সপ্তাহজুড়ে কমেছে। দাম কমার এ তালিকায় নেতৃত্ব দিয়েছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ।
বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়া এ কোম্পানিটির শেয়ার গত সপ্তাহে কিনতে আগ্রহী হননি শেয়ারবাজারের বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ওপর থেকে আগ্রহ হারানোর ফলে ডিএসইতে দাম কমার শীর্ষ তালিকায় স্থান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৫ দশমিক ২১ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৪ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ২৬ টাকা ৩০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
শেয়ারের এমন দাম কমা কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসইর ওয়েবসাইটে নেই। তবে আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের পর বছর ধরে লোকসানে রয়েছে কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ৩২ পয়সা লোকসান করা কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ৩০ পয়সা লোকসান করে। এরপর ২০২১ সালে ৩৩ পয়সা, ২০২০ সালে ৩১ পয়সা এবং ২০২৩ সালে ৩০ পয়সা শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় কোম্পানিটির।
আর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৬ পয়সা। লোকসানে নিমজ্জিত হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ফলে শেয়ারবাজারে পঁচা বা ‘জেড’ কোম্পানির তালিকায় স্থান হয়েছে মেঘন পেট ইন্ডাস্ট্রিজের।
১২ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। এর মধ্যে ৪৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫০ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ শেয়ার আছে।
দাম কমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের শেয়ারের দাম কমেছে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ দাম কমার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রানার অটোমোবাইল।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং চাটার্ড ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দাম কমেছে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
বিজনেস আওয়ার/ ১২ অক্টোবর / রহমান