স্পোর্টস ডেস্ক: সেমিফাইনালে যেতে শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়েছেন হারমানপ্রীত কৌর। দ্বিতীয় বলে অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের স্লোয়ার ফুলটসে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে ফেরেন পূজা ভাস্তকর। পরের বলে ফিরেছেন অরুন্ধুতি রেড্ডিও। হারমানপ্রীতকে স্ট্রাইক দিতেই নিজের উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন তিনি। শেষ তিন বলে যখন ১৩ রান প্রয়োজন তখন আরও একবার সিঙ্গেল নিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক। তাতে জয়ের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে ভারতের। শেষ ওভারে সব মিলিয়ে ৪ রান তুলতে ৪ উইকেট হারায় তারা। এমন অবস্থায় হারমানপ্রীতের অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতকে ৯ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেরা চারে জায়গা করে নিতে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ভারতকে।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৫২ রান তাড়ায় জয়ের জন্য ভারতের যেমন শুরু প্রয়োজন ছিল সেটাই করেছিলেন স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা। প্রথম তিন ওভারে তারা দুজনে মিলে বিনা উইকেটে ২৫ রান যোগ করেছিলেন। তবে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন অ্যাশলে গার্ডনার। ডানহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মারার চেষ্টায় অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন শেফালি। দারুণ শুরু করা ওপেনারকে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে ১৩ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পঞ্চমবারের মতো গার্ডনারের বলে আউট হয়েছেন শেফালি। আরেক ওপেনার মান্ধানা ফিরেছেন পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই। সোফি মোলিনিউয়ের গুড লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে পুল করতে চেয়েছিলেন মান্ধানা। তবে বল খানিকটা নিচু হওয়ায় প্যাডে আঘাত করে। আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে ৬ রান করা ভারতের ওপেনারকে ফেরায় অস্ট্রেলিয়া। সবমিলিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪১ রান তুলতে ২ উইকেট হারাতে হয় ভারতকে।
তিনে নেমে শুরুটা বেশ ভালো করেছিলেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। তবে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এসেছেন তিনি। মেগান শুটের লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে থাকা গার্ডনারকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ রান করা জেমাইমা। পাঁচে নামা দীপ্তি শর্মাকে দ্রুতই ফেরানোর সুযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তবে সাদারল্যান্ডের স্লোয়ার ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি মোলিনিউ।
ব্যক্তিগত ১৫ রানের সময় জীবন পেয়েছেন হারমানপ্রীতও। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে ক্যাচ নিতে পারেনি ডার্সি ব্রাউন। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ৬৩ রানের জুটি গড়েন হারমানপ্রীত ও দীপ্তি। তাদের দুজনের জমে ওঠা জুটি ভাঙেন মোলিনিউ। বাঁহাতি স্পিনার বলে মিড উইকেটর উপর দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা জর্জিয়া ওয়ারেহামকে ক্যাচ দিয়েছেন। ভারতের অলরাউন্ডার ফিরেছেন ২৫ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে। পরের ওভারে ফিরে গেছেন রিচা ঘোষও। শুটের বলে কভার পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছেন ভারতের উইকেটকিপার ব্যাটার। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ভারতকে জয়ের আশা দেখাচ্ছিলেন হারমানপ্রীত। দলের বিপর্যয়ের মুখে ৪৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। তবে ভারতকে জয় এনে দিতে পারেননি ৫৪ রান করা ভারতীয় অধিনায়ক। শেষ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হেরেছে ৯ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোলিনিউ ও সাদারল্যান্ড।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানের পুঁজি গড়ে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন গ্রেস হ্যারিস। এ ছাড়া ৩২ রান করে এসেছে তাহলিয়া ম্যাকগ্রা ও এলিস পেরির ব্যাট থেকে। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রেনুকা সিং ও দীপ্তি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাধা যাদব, শ্রেয়াঙ্কা পাতিল ও পূজা ভাস্তকর।
বিজনেস আওয়ার/ ১৪ অক্টোবর / রানা