ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ের আগে কেন করবেন মেডিকেল টেস্ট?

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • 26

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। আর এই বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দু’জন মানুষ একসঙ্গে, একই ছাদের তলায় বসবাস শুরু করেন। বিবাহিত জীবনের সূচনা ঘটে সংসারের মাধ্যমে। আর একই সংসারে বসবাসকালে দু’জনের মধ্যে নানা বিষয়ে ঝামেলা হতে পারে। শুধু মতামতের অমিল নয়, কখনো কখনো দেখা দেয় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণেও সম্পর্কে ফাটল ধরে।

এজন্য বিয়ের আগে হবু বর-কনের উচিত কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট করানো। এতে বিরক্ত বা রাগান্বিত হওয়ার কিছু নয়, বরং সচেতন মানুষ হিসেবে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে প্রতিটি হবু দম্পতিরই উচিত কয়েকটি টেস্ট করানো। জেনে নিন কী কী-

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা

হবু বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে গর্ভাবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে বিয়ের আগে দু’জনেরই আরএইচ ফ্যাক্টর একই হওয়া দরকার।

থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষাও জরুরি। দু’জনের মধ্যে একজনের শরীরেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে সন্তানও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা

বিয়ের আগে নারীর ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা করালে জানা যাবে হবু কনে রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না। কারণ সন্তান ধারণের জন্য শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক থাকা দরকার।

নারীর ওভারি পরীক্ষা

জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের কারণে অনেক নারীই ওভারির নানা সমস্যায় ভোগেন। তাই বিয়ের আগে নারীর ওভারি টেস্ট করানো প্রয়োজন। ওভারিতে সমস্যা থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণু তৈরির পরিমাণও কমতে শুরু থাকে। এক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা

ভবিষ্যতে সন্তান হবে কি না তা জানতে হবু বর ও কনে দু’জনেরই বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ক্ষেত্রে স্পাম টেস্ট করালে শুক্রাণুর স্থিতি ও কাউন্ট কতটা আছে তা জানা যায়। সময় থাকতে থাকতে এর চিকিৎসাও করা সম্ভব।

এসটিডি পরীক্ষা

নারী-পুরুষ উভয়েরই এসটিডি বা যৌন রোগের পরীক্ষা করা উচিত। বিয়ের আগে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক থাকলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা জানা যায়।

এইচআইভি

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের এইচআইভি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে রক্ত, শরীরের সিরাম নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা রোধকারী ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।

এইচআইভি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এই ভাইরাস শরীরে থাকলে তার থেকে এইডস পর্যন্ত হতে পারে। অনেকেই আগে থেকে শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পান না।

ফলে ওই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক করলে তা সঙ্গীর শরীরে এমনকি গর্ভের সন্তানেরও হতে পারে এইডস। যদি হবু বর বা কনের কারও এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কয়েকবার ভাবা উচিত।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে দু’জনকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। বর্তমানে অনেকেই মানসিক নানা সমস্যায় ভোগেন। কেউ হয়তো অতিরিক্ত রাগ করেন, আবার কারও সন্দেহপ্রবণতা বেশি, হঠাৎ হতাশ হয়ে পড়া, অবসন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে। তাই বিয়ের পর ঝামেলা এড়াতে সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে মেন্টাল হেলথেও যাচাই করুন।

জেনেটিক টেস্ট

বিয়ের আগে হবু বর ও কনে উভয়েরই জেনেটিক পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে জানা যাবে আপনার হবু সঙ্গীর কোনো জিনঘটিত সমস্যা আছে কি না।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ অক্টোবর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিয়ের আগে কেন করবেন মেডিকেল টেস্ট?

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। আর এই বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দু’জন মানুষ একসঙ্গে, একই ছাদের তলায় বসবাস শুরু করেন। বিবাহিত জীবনের সূচনা ঘটে সংসারের মাধ্যমে। আর একই সংসারে বসবাসকালে দু’জনের মধ্যে নানা বিষয়ে ঝামেলা হতে পারে। শুধু মতামতের অমিল নয়, কখনো কখনো দেখা দেয় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণেও সম্পর্কে ফাটল ধরে।

এজন্য বিয়ের আগে হবু বর-কনের উচিত কয়েকটি মেডিকেল টেস্ট করানো। এতে বিরক্ত বা রাগান্বিত হওয়ার কিছু নয়, বরং সচেতন মানুষ হিসেবে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে প্রতিটি হবু দম্পতিরই উচিত কয়েকটি টেস্ট করানো। জেনে নিন কী কী-

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা

হবু বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে গর্ভাবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে বিয়ের আগে দু’জনেরই আরএইচ ফ্যাক্টর একই হওয়া দরকার।

থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষাও জরুরি। দু’জনের মধ্যে একজনের শরীরেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে সন্তানও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা

বিয়ের আগে নারীর ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা করালে জানা যাবে হবু কনে রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না। কারণ সন্তান ধারণের জন্য শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক থাকা দরকার।

নারীর ওভারি পরীক্ষা

জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের কারণে অনেক নারীই ওভারির নানা সমস্যায় ভোগেন। তাই বিয়ের আগে নারীর ওভারি টেস্ট করানো প্রয়োজন। ওভারিতে সমস্যা থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণু তৈরির পরিমাণও কমতে শুরু থাকে। এক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা

ভবিষ্যতে সন্তান হবে কি না তা জানতে হবু বর ও কনে দু’জনেরই বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ক্ষেত্রে স্পাম টেস্ট করালে শুক্রাণুর স্থিতি ও কাউন্ট কতটা আছে তা জানা যায়। সময় থাকতে থাকতে এর চিকিৎসাও করা সম্ভব।

এসটিডি পরীক্ষা

নারী-পুরুষ উভয়েরই এসটিডি বা যৌন রোগের পরীক্ষা করা উচিত। বিয়ের আগে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক থাকলে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা জানা যায়।

এইচআইভি

বিয়ের আগে হবু বর ও কনের এইচআইভি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে রক্ত, শরীরের সিরাম নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা রোধকারী ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।

এইচআইভি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এই ভাইরাস শরীরে থাকলে তার থেকে এইডস পর্যন্ত হতে পারে। অনেকেই আগে থেকে শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি টের পান না।

ফলে ওই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক করলে তা সঙ্গীর শরীরে এমনকি গর্ভের সন্তানেরও হতে পারে এইডস। যদি হবু বর বা কনের কারও এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কয়েকবার ভাবা উচিত।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে দু’জনকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। বর্তমানে অনেকেই মানসিক নানা সমস্যায় ভোগেন। কেউ হয়তো অতিরিক্ত রাগ করেন, আবার কারও সন্দেহপ্রবণতা বেশি, হঠাৎ হতাশ হয়ে পড়া, অবসন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে। তাই বিয়ের পর ঝামেলা এড়াতে সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে মেন্টাল হেলথেও যাচাই করুন।

জেনেটিক টেস্ট

বিয়ের আগে হবু বর ও কনে উভয়েরই জেনেটিক পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এই পরীক্ষা করলে জানা যাবে আপনার হবু সঙ্গীর কোনো জিনঘটিত সমস্যা আছে কি না।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ অক্টোবর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: