ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাইটে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের বছর পার না হতেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ নভেম্বর ২০২০
  • 77

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ গত বছরের ডিসেম্বরে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে প্রায় ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। ভালো ব্যবসা দেখিয়ে এই টাকা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এরপরে প্রথম বছরের ব্যবসাতেই ধস দেখিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার মতো হতাশাজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির পর্ষদ।

গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ বিভিন্ন ড্রাই ফুড, আইসক্রীম, দুধ ইত্যাদি পণ্য তৈরী ও বাজারজাতকরন করে।  করোনাভাইরাসের মধ্যেও এসব পণ্যের চাহিদা ছিল। এমনকি অস্বাভাবিক চাহিদার কারনে দুধের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া করোনার মধ্যে ঠান্ডা জাতীয় পণ্যে বিশেষ সতর্ক থাকতে বললেও লাভেলো আইসক্রীম মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু গোল্ডেন হার্ভেস্ট তা পারেনি বলে আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে।

এসব কারনে গোল্ডেন হার্ভেস্টের রাইট শেয়ার ইস্যুর আগের ও পরের আর্থিক হিসাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সন্দেহের দাঁনা বেধেছে। কোম্পানিটি রাইট ইস্যুর জন্য পূর্বে অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখিয়েছে, অন্যথায় এখন শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারনার জন্য ব্যবসায় ধস দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। যে কারনে বিভিন্ন কোম্পানির ন্যায় গোল্ডেন হার্ভেস্টের আর্থিক হিসাব পূণ:নিরীক্ষার দাবি তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানিটি গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে শেয়ারবাজার থেকে রাইট ইস্যুর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। ৪টি সাধারন শেয়ারের বিপরীতে ৩টি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ২৩ হাজার ৪২০ টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা মূল্যে ইস্যুর মাধ্যমে এই টাকা সংগ্রহ করে।

এই অর্থ সংগ্রহের পরে ৬ মাসের ব্যবধানের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় এমন হতাশার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অথচ রাইট ইস্যুর জন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক বা প্রথম প্রান্তিকেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৮) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) দেখায় ১.৪৬ টাকা। আর সেই কোম্পানির ২০১৯-২০ এর পুরো অর্থবছরে ০.০৪ টাকা বা ৪ পয়সা ইপিএস হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনায় কোম্পানির ব্যবসায় তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কারন উল্লেখ করতে বলা হলেও গোল্ডেন হার্ভেস্ট তা পরিপালন করেনি।  আগের অর্থবছরের ১.৯৩ টাকার ইপিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪ পয়সায় নেমে আসার পরেও তার কোন কারন তারা ডিএসইর মাধ্যমে প্রকাশ করেনি। এর মাধ্যমে এক প্রকার  বিএসইসির এই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে গোল্ডেন হার্ভেস্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, শনিবার (৩১ অক্টোবর) কোম্পানিটির শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ১৬.৭০ টাকায়।  এটি কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

রাইটে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের বছর পার না হতেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড

পোস্ট হয়েছে : ০১:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ নভেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ গত বছরের ডিসেম্বরে রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে প্রায় ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। ভালো ব্যবসা দেখিয়ে এই টাকা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এরপরে প্রথম বছরের ব্যবসাতেই ধস দেখিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার মতো হতাশাজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির পর্ষদ।

গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ বিভিন্ন ড্রাই ফুড, আইসক্রীম, দুধ ইত্যাদি পণ্য তৈরী ও বাজারজাতকরন করে।  করোনাভাইরাসের মধ্যেও এসব পণ্যের চাহিদা ছিল। এমনকি অস্বাভাবিক চাহিদার কারনে দুধের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া করোনার মধ্যে ঠান্ডা জাতীয় পণ্যে বিশেষ সতর্ক থাকতে বললেও লাভেলো আইসক্রীম মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু গোল্ডেন হার্ভেস্ট তা পারেনি বলে আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে।

এসব কারনে গোল্ডেন হার্ভেস্টের রাইট শেয়ার ইস্যুর আগের ও পরের আর্থিক হিসাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সন্দেহের দাঁনা বেধেছে। কোম্পানিটি রাইট ইস্যুর জন্য পূর্বে অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখিয়েছে, অন্যথায় এখন শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে প্রতারনার জন্য ব্যবসায় ধস দেখাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। যে কারনে বিভিন্ন কোম্পানির ন্যায় গোল্ডেন হার্ভেস্টের আর্থিক হিসাব পূণ:নিরীক্ষার দাবি তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানিটি গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে শেয়ারবাজার থেকে রাইট ইস্যুর জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। ৪টি সাধারন শেয়ারের বিপরীতে ৩টি রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৮৯ কোটি ৯৩ লাখ ২৩ হাজার ৪২০ টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা মূল্যে ইস্যুর মাধ্যমে এই টাকা সংগ্রহ করে।

এই অর্থ সংগ্রহের পরে ৬ মাসের ব্যবধানের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় এমন হতাশার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অথচ রাইট ইস্যুর জন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক বা প্রথম প্রান্তিকেই (জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৮) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) দেখায় ১.৪৬ টাকা। আর সেই কোম্পানির ২০১৯-২০ এর পুরো অর্থবছরে ০.০৪ টাকা বা ৪ পয়সা ইপিএস হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনায় কোম্পানির ব্যবসায় তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কারন উল্লেখ করতে বলা হলেও গোল্ডেন হার্ভেস্ট তা পরিপালন করেনি।  আগের অর্থবছরের ১.৯৩ টাকার ইপিএস ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪ পয়সায় নেমে আসার পরেও তার কোন কারন তারা ডিএসইর মাধ্যমে প্রকাশ করেনি। এর মাধ্যমে এক প্রকার  বিএসইসির এই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে গোল্ডেন হার্ভেস্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, শনিবার (৩১ অক্টোবর) কোম্পানিটির শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ১৬.৭০ টাকায়।  এটি কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস।

বিজনেস আওয়ার/০১ নভেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: