ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেকর্ড সর্বোচ্চ মুনাফায় বিএসসি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • 35

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্টায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসি ৫২ বছরের ইতিহাসে ৩০ জুন, ২০২৪ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৫০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির এমন সফলতায় আজ বৃহস্পতিবার বিএসসি শেয়ারবাজারে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় শীর্ষে উঠেছে। কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহের কারণে মুনাফার সর্বোচ্চ উচ্চতার পাশাপাশি শেয়ারবাজারে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনের নেতৃত্বে সমানে সমানে স্থান নিয়েছে।

আগেরদিন বুধবার অনুষ্ঠিত কর্পোরেশনের পর্ষদ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিপিং কর্পোরেশনের মুনাফা ছিল মাত্র ১৭ কোটি টাকা। ছয় বছরের মধ্যে মুনাফা প্রায় ১,৩৭০ শতাংশ বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

এদিকে, ২০১৯ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের যেখানে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে, সেখানে ২০২৪ সালে ডিভিডেন্ডের পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে আগের বছর ২০২৩ সালেও কোম্পানিটি ২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থানা পরিচালক কমোডোর মাহমুদুল মালেক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্পোরেশনের ব্যবসা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নতুন নতুন গন্তব্যে জাহাজ পরিচালনাসহ নানামুখী উদ্যোগের প্রেক্ষিতে ৫২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে যা হয়নি, তা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছি আমরা। সরকারি অর্থায়নে জাহাজ কিনলেও এবার নিজেদের অর্থায়নে জাহাজ কিনবে শিপিং কর্পোরেশন, যা প্রতিষ্ঠানটির নিজের সক্ষমতার বড় উদহারণ। নতুন জাহাজ যুক্ত হলে জাহাজের বহর বাড়বে, পাশাপাশি ব্যবসারও উন্নয়ন হবে।’

সরকারের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীন সরকারের সঙ্গে জি-টু-জি চুক্তিতে শিপিং কর্পোরেশন ৬টি জাহাজ কিনেছে। বাংলাদেশ সরকার জাহাজ কেনার ওই টাকা চীনকে পরিশোধ করেছে। সরকারের সঙ্গে একটি ঋণ পরিশোধ-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের পর বোর্ড সভায় প্রথম ধাপে ৪৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগে আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় সরকারকে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন সেই টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে সব টাকাই পরিশোধ করা হবে।’

এ বিষয়ে বিএসসির কর্মকর্তারা জানান, দুটি জাহাজ কিনতে কর্পোরেশনের ব্যয় হতে পারে ৭৫০ কোটি টাকা থেকে ৮০০ কোটি টাকার মতো। তবে জাহাজ কেনা প্রকল্প প্রস্তাব চুড়ান্ত হওয়ার পর এই ব্যয় কম-বেশি হতে পারে।

এর আগে সরকারি অর্থায়নে জি-টু-জি ভিত্তিতে জাহাজ কিনেছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীন থেকে ৬টি জাহাজ কিনেছে শিপিং কর্পোরেশন। এসব জাহাজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সরকারি অর্থায়নে জাহাজ কেনার পর এবারই প্রথম সরকারকে ঋণের টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিপিং কর্পোরেশন।

বর্তমানে কর্পোরেশনের কেনা ওই ছয়টি জাহাজের মধ্যে ৫টি জাহাজ বিভিন্ন রুটে পণ্য পরিবহন করছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনের বন্দরে নোঙর করে থাকা অবস্থায় মিসাইল আক্রমণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ। জাহাজটির বিপরীতে বিমা থাকায় ক্ষতিপুরণ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজনেস আওয়ার/ ০১ নভেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

রেকর্ড সর্বোচ্চ মুনাফায় বিএসসি

পোস্ট হয়েছে : ০৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্টায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসি ৫২ বছরের ইতিহাসে ৩০ জুন, ২০২৪ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৫০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির এমন সফলতায় আজ বৃহস্পতিবার বিএসসি শেয়ারবাজারে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় শীর্ষে উঠেছে। কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহের কারণে মুনাফার সর্বোচ্চ উচ্চতার পাশাপাশি শেয়ারবাজারে দর বৃদ্ধি ও লেনদেনের নেতৃত্বে সমানে সমানে স্থান নিয়েছে।

আগেরদিন বুধবার অনুষ্ঠিত কর্পোরেশনের পর্ষদ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ডের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিপিং কর্পোরেশনের মুনাফা ছিল মাত্র ১৭ কোটি টাকা। ছয় বছরের মধ্যে মুনাফা প্রায় ১,৩৭০ শতাংশ বেড়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৫০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

এদিকে, ২০১৯ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের যেখানে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে, সেখানে ২০২৪ সালে ডিভিডেন্ডের পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তবে আগের বছর ২০২৩ সালেও কোম্পানিটি ২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থানা পরিচালক কমোডোর মাহমুদুল মালেক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্পোরেশনের ব্যবসা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নতুন নতুন গন্তব্যে জাহাজ পরিচালনাসহ নানামুখী উদ্যোগের প্রেক্ষিতে ৫২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে যা হয়নি, তা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছি আমরা। সরকারি অর্থায়নে জাহাজ কিনলেও এবার নিজেদের অর্থায়নে জাহাজ কিনবে শিপিং কর্পোরেশন, যা প্রতিষ্ঠানটির নিজের সক্ষমতার বড় উদহারণ। নতুন জাহাজ যুক্ত হলে জাহাজের বহর বাড়বে, পাশাপাশি ব্যবসারও উন্নয়ন হবে।’

সরকারের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীন সরকারের সঙ্গে জি-টু-জি চুক্তিতে শিপিং কর্পোরেশন ৬টি জাহাজ কিনেছে। বাংলাদেশ সরকার জাহাজ কেনার ওই টাকা চীনকে পরিশোধ করেছে। সরকারের সঙ্গে একটি ঋণ পরিশোধ-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের পর বোর্ড সভায় প্রথম ধাপে ৪৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আগে আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় সরকারকে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন সেই টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। ধাপে ধাপে সব টাকাই পরিশোধ করা হবে।’

এ বিষয়ে বিএসসির কর্মকর্তারা জানান, দুটি জাহাজ কিনতে কর্পোরেশনের ব্যয় হতে পারে ৭৫০ কোটি টাকা থেকে ৮০০ কোটি টাকার মতো। তবে জাহাজ কেনা প্রকল্প প্রস্তাব চুড়ান্ত হওয়ার পর এই ব্যয় কম-বেশি হতে পারে।

এর আগে সরকারি অর্থায়নে জি-টু-জি ভিত্তিতে জাহাজ কিনেছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীন থেকে ৬টি জাহাজ কিনেছে শিপিং কর্পোরেশন। এসব জাহাজ কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সরকারি অর্থায়নে জাহাজ কেনার পর এবারই প্রথম সরকারকে ঋণের টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিপিং কর্পোরেশন।

বর্তমানে কর্পোরেশনের কেনা ওই ছয়টি জাহাজের মধ্যে ৫টি জাহাজ বিভিন্ন রুটে পণ্য পরিবহন করছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনের বন্দরে নোঙর করে থাকা অবস্থায় মিসাইল আক্রমণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ। জাহাজটির বিপরীতে বিমা থাকায় ক্ষতিপুরণ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজনেস আওয়ার/ ০১ নভেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: