ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে বাদ রেখেই আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা?

  • পোস্ট হয়েছে : ১০ মিনিট আগে
  • 2

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ইতিহাসে এবার প্রথম অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ। বিগত ৪৭ বছর ধরে কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ।

কিন্তু ২০২৫ সালের ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের অংশ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটলো না। কারণ বিদেশি বুক স্টলের তালিকায় নাম নেই বাংলাদেশের। যদিও এ বিষয় নিয়ে পরিষ্কার করে কিছুই জানায়নি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলারস গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায়।

কলকাতা বইমেলায় বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ থাকলেও প্রধান আকর্ষণ থাকে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ানে। বাংলাদেশের সাহিত্যিক, কবিদের লেখা বই কেনার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকে কলকাতার বইপ্রেমী মানুষ।

শুক্রবার ১৫ নভেম্বর কলকাতার পার্ক হোটেলে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে। সেখান থেকেই আসন্ন বইমেলার থিম কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে জার্মানি। থিম কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণ নিয়ে বক্তব্য রাখেন কলকাতার জার্মান ভাইস কনসাল সিমন ক্লাইমপাস এবং কলকাতার গ্যোয়েট ইনস্টিটিউট ডিরেক্টর অ্যাস্ট্রিড ভেগে।

কিন্তু শত বক্তব্যের মাঝেও গণমাধ্যম কর্মীদের উৎসাহ ছিল বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন নিয়ে। থিম কান্ট্রির মোরক উন্মোচনের পরেই পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বলতে পারবো না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। যে পরিস্থিতির মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। তাতে সরকারি কোনো নির্দেশ ছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। নির্দেশ এখনো আসেনি। এছাড়াও এখনো কিছু বলা সম্ভব নয়, বাংলাদেশ অংশ নেবে কিনা।

যদিও আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় কর্মকর্তা তথা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, এখনো সময় আছে। ফলে তারা এখনো আশাবাদী। প্রত্যেক বছরের মতো বিশাল আকারে না হলেও বাংলাদেশ এবারের অংশগ্রহণ করবে।

গিল্ডের সম্পাদক সম্পাদক সুধাংশু দেব বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের অভাব বোধ আমরা করছি। শুধু আমরা নই পশ্চিমবঙ্গের পাঠককুলও হতাশ হবে। বাংলাদেশ অংশ না নিলে আমাদের খারাপ লাগবে। কারণ দীর্ঘ ৪৭ বছরে কলকাতার বইমেলার ইতিহাস বাংলাদেশ নামটা জড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের অংশগ্রহণ পশ্চিমবঙ্গ পাঠকের মধ্যে বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি যে জায়গায় এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি না।

গিল্ডের সাধারণ সম্পাদকসুধাংশু দে আরও জানিয়েছে, যদিও বাংলাদেশের পরিষদ থেকে জানিয়েছিল তারা অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো সরকারি নির্দেশ আসেনি ফলে অনেকটাই হতাশ আমরা।

২০২৫ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা মেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিবছরের মতো এবারও কলকাতার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এবারের বইমেলাতে, ফ্রান্স, আমেরিকা, ইতালি, পেরু, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের বই থাকছে।

এছাড়াও প্রতি বছরের মতো ভারতের অন্যান্য রাজ্য যেমন দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, বিহার আসাম, ঝাড়খান্ডসহ প্রায় সবকটি রাজ্য অংশ নেবে। এবারের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ১০৫০ জনের বেশি প্রকাশনা সংস্থা। এছাড়া থাকছে ২০০-এর বেশি লিটল ম্যাগাজিনসহ অন্যান্য আকর্ষণ।

গত বছর আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ২৭ লাখ বইপ্রেমী মানুষ এসেছিলেন। গোটা বইমেলায় ২৩ কোটি রুপির বই বিক্রি হয়েছিল।

বিজনেস আওয়ার/ ১৬ নভেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাংলাদেশকে বাদ রেখেই আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা?

পোস্ট হয়েছে : ১০ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় ইতিহাসে এবার প্রথম অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ। বিগত ৪৭ বছর ধরে কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ।

কিন্তু ২০২৫ সালের ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের অংশ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটলো না। কারণ বিদেশি বুক স্টলের তালিকায় নাম নেই বাংলাদেশের। যদিও এ বিষয় নিয়ে পরিষ্কার করে কিছুই জানায়নি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলারস গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায়।

কলকাতা বইমেলায় বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ থাকলেও প্রধান আকর্ষণ থাকে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ানে। বাংলাদেশের সাহিত্যিক, কবিদের লেখা বই কেনার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকে কলকাতার বইপ্রেমী মানুষ।

শুক্রবার ১৫ নভেম্বর কলকাতার পার্ক হোটেলে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন হয়েছে। সেখান থেকেই আসন্ন বইমেলার থিম কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে জার্মানি। থিম কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণ নিয়ে বক্তব্য রাখেন কলকাতার জার্মান ভাইস কনসাল সিমন ক্লাইমপাস এবং কলকাতার গ্যোয়েট ইনস্টিটিউট ডিরেক্টর অ্যাস্ট্রিড ভেগে।

কিন্তু শত বক্তব্যের মাঝেও গণমাধ্যম কর্মীদের উৎসাহ ছিল বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন নিয়ে। থিম কান্ট্রির মোরক উন্মোচনের পরেই পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বলতে পারবো না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। যে পরিস্থিতির মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ রয়েছে। তাতে সরকারি কোনো নির্দেশ ছাড়া আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। নির্দেশ এখনো আসেনি। এছাড়াও এখনো কিছু বলা সম্ভব নয়, বাংলাদেশ অংশ নেবে কিনা।

যদিও আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় কর্মকর্তা তথা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, এখনো সময় আছে। ফলে তারা এখনো আশাবাদী। প্রত্যেক বছরের মতো বিশাল আকারে না হলেও বাংলাদেশ এবারের অংশগ্রহণ করবে।

গিল্ডের সম্পাদক সম্পাদক সুধাংশু দেব বলেন, অবশ্যই বাংলাদেশের অভাব বোধ আমরা করছি। শুধু আমরা নই পশ্চিমবঙ্গের পাঠককুলও হতাশ হবে। বাংলাদেশ অংশ না নিলে আমাদের খারাপ লাগবে। কারণ দীর্ঘ ৪৭ বছরে কলকাতার বইমেলার ইতিহাস বাংলাদেশ নামটা জড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের অংশগ্রহণ পশ্চিমবঙ্গ পাঠকের মধ্যে বিশাল জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি যে জায়গায় এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি না।

গিল্ডের সাধারণ সম্পাদকসুধাংশু দে আরও জানিয়েছে, যদিও বাংলাদেশের পরিষদ থেকে জানিয়েছিল তারা অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো সরকারি নির্দেশ আসেনি ফলে অনেকটাই হতাশ আমরা।

২০২৫ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা মেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিবছরের মতো এবারও কলকাতার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এবারের বইমেলাতে, ফ্রান্স, আমেরিকা, ইতালি, পেরু, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের বই থাকছে।

এছাড়াও প্রতি বছরের মতো ভারতের অন্যান্য রাজ্য যেমন দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, বিহার আসাম, ঝাড়খান্ডসহ প্রায় সবকটি রাজ্য অংশ নেবে। এবারের বইমেলায় অংশ নিচ্ছে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ১০৫০ জনের বেশি প্রকাশনা সংস্থা। এছাড়া থাকছে ২০০-এর বেশি লিটল ম্যাগাজিনসহ অন্যান্য আকর্ষণ।

গত বছর আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ২৭ লাখ বইপ্রেমী মানুষ এসেছিলেন। গোটা বইমেলায় ২৩ কোটি রুপির বই বিক্রি হয়েছিল।

বিজনেস আওয়ার/ ১৬ নভেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: