বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ব্যবসা সম্প্রসারনের লক্ষ্যে শেয়ারবাজারে এসে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের নিয়মিত মুনাফায় সংকুচিত হয়েছে। ভালো ব্যবসা দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করার পর থেকেই কোম্পানিটির ব্যবসা নিয়মিত নিম্নমূখী। তবে এতোদিন মুনাফায় নিম্নমূখী থাকলেও এবার বড় লোকসানের কবলে পড়েছে কোম্পানিটি।
তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে আসে। এ কোম্পানিটি আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ২৬ টাকা করে ইস্যু করে মোট ৬৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। এতে প্রতিটি শেয়ারে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১৬ টাকা। কিন্তু সেই কোম্পানি ৫ বছরের ব্যবধানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় বড় লোকসানে পড়েছে।
কোম্পানিটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন মহিম হাসান। এছাড়া চেয়ারম্যান হিসেবে রফিক হাসান এবং পরিচালক হিসেবে নাইম হাসান, লিরা রিজওয়ানা হাসান ও আঞ্জুমান আরা বেগম রয়েছেন।
তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পূর্ব ২০১৩ সালের ২.৬৪ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে লোকসান হয়েছে ২.৮৭ টাকায়।
এ কোম্পানিটির ইপিএস শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের পর থেকেই নিম্ন ধারায়। দেখা গেছে, ২০১৫-১৬ (জানুয়ারি ১৫-জুন ১৬) এর ১৮ মাসে ইপিএস হয় ৩.০৩ টাকা। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নেমে আসে ১.৩২ টাকায়। এরপরে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১.২৭ টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ০.১২ টাকা ইপিএস হয়। যা সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২.৮৭ টাকা লোকসান হয়েছে।
তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকেই লোকসানে রয়েছে। তবে করোনায় শেষ প্রান্তিকে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায়, পুরো অর্থবছরে লোকসান কিছুটা কম হয়েছে। অন্যথায় শেয়ারপ্রতি ২.৮৭ টাকার লোকসান আরও বাড়তে পারত।
এ কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ০.৭২ টাকা। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ০.২৩ টাকা ও তৃতীয় প্রান্তিকে ১.৮৫ টাকা লোকসান হয়। এতে করে ৯ মাসে লোকসান হয় ২.৮০ টাকা। আর করোনায় যখন স্থবির দেশ, সেই শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন ২০) লোকসান হয়েছে ০.০৮ টাকা। এতে করে পুরো অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২.৮৭ টাকায়।
আরও পড়ুন….
২৫ টাকা ইস্যু মূল্যের বেঙ্গল উইন্ডসোরের ‘নো’ ডিভিডেন্ড
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স নিয়ে বিএসইসির কঠোর অবস্থান, কি পেল বিনিয়োগকারীরা!
গোল্ডেন হার্ভেস্টের রাইটে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের বছর পার না হতেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড
৬৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের তসরিফায় শেয়ারপ্রতি ২.৮৭ টাকা হিসেবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছে ১৯ কোটি ৪ লাখ টাকা।
করোনার কারনে মূলত এবারই দেশের শেয়ারবাজারে ১ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার প্রথা চালু হয়েছে। এ বছর বেশ কিছু কোম্পানির পর্ষদ ১ শতাংশ করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে ২৬ টাকা ইস্যু মূল্যের তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ গত অর্থবছরেই ১ শতাংশ লভ্যাংশে নেমে আসে। আর এবার বড় লোকসানে কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।
২৬ টাকা ইস্যু মূল্যের শেয়ারটি ১০.৬০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল গেইনের বিপরীতে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
বিজনেস আওয়ার/০৩ নভেম্বর, ২০২০/আরএ
One thought on “শেয়ারবাজারে উচ্চ মূল্যে শেয়ার ইস্যুর পর থেকেই মুনাফা নিম্নমুখী, এবার বড় লোকসান”