বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: অন্যান্য দেশে যেখানে কোম্পানির মৌলভিত্তির ওপর ভিত্তি করে শেয়ারদর বাড়ে বা কমে। কিন্তু আমাদের দেশের শেয়ারবাজারে প্রভাবশালীরা নিজেদের স্বার্থে বাজারটিকে ব্যবহার করেছে। একে অপরের সাথে যোগসাজশে শেয়ারবাজার থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। অথচ কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের আইনগত পদক্ষেপের মুখোমুখি হয়নি কখনোই।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্যসহ সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেয়ার কারসাজি, প্লেসমেন্ট শেয়ার এবং আইপিও প্রক্রিয়ার প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ট্রিলিয়ন টাকার দুর্নীতি হয়েছে। প্রভাবশালী উদ্যোক্তা, ইস্যু ম্যানেজার, অডিটর এবং বিনিয়োগকারীদের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি জড়িত হয়ে বড় ধরনের কারসাজি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এ নেটওয়ার্ক ভাঙতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কাজ করেনি। উল্টো তাদের সহযোগিতা করেছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশের শেয়ারবাজারে কারসাজি একটি অতি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান ‘সার্কুলার ট্রেড’-এর মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের মূল্য বাড়ায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর শেয়ার কারসাজিতে বাজারে বড় ধস নেমেছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরও একই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তা ঠেকাতে বাস্তবমুখী কোনো পদক্ষেপ বা সংস্কার কার্যক্রম চালানো হয়নি।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি মনে করে, বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সার্বিক কাঠামোগত সংস্কার করা প্রয়োজন। বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শক্তিশালী আইনগত কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে বাজারে স্বচ্ছতা, সুরক্ষা এবং স্থিতিশীলতা আনা যায়।
বিজনেস আওয়ার/ ০৪ ডিসেম্বর / এ এইচ