ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাট নৃশংসতা: এজাহারভুক্ত আরো ৫ আসামি গ্রেফতার

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০
  • 89

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (লালমনিরহাট): লালমনিরহাটে মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত কুমার মোহন্ত গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মধ্য রাতে বিভিন্নস্থান থেকে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে মোট গ্রেফতার হলেন ১৬ জন। রোববার (১ নভেম্বর) প্রথম ধাপে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে খাদেম জোবেদ আলীসহ (৬১) আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করে তাদের লালমনিরহাট জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

তবে প্রথম দফায় গ্রেফতার ৫ জনকে হত্যা মামলায় ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন জানায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী। গতকাল সোমবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য থাকলেও সেটি পরিবর্তন করে মঙ্গলবার করা হয়।

প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ওই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক(২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী(৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)।

এই ৫ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। দ্বিতীয় ধাপের গ্রেফতার ৫ হলেন- খাদেম জোবেদ আলী, রাজু (১৯), আনোয়ার হোসেন (৫৫), মানিক (২৬) ও মেরাজুল ইসলাম (১৭)।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার দায়ে নিহতের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (৩১ অক্টোবর) একটি মামলা দায়ের করেন।

নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরীচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।

ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টি.এম.এ মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হত্যার পেছনে ধর্ম অবমাননার কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান।

ঘটনাস্থল তদন্ত করে মসজিদের কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির। এটা স্রেফ একটি গুজব বলে দাবি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল আলম, পাটগ্রাম থানার এসআই শাহজাহান আলী ও বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন।

বিজনেস আওয়ার/০৩ নভেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লালমনিরহাট নৃশংসতা: এজাহারভুক্ত আরো ৫ আসামি গ্রেফতার

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (লালমনিরহাট): লালমনিরহাটে মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত কুমার মোহন্ত গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মধ্য রাতে বিভিন্নস্থান থেকে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে মোট গ্রেফতার হলেন ১৬ জন। রোববার (১ নভেম্বর) প্রথম ধাপে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে খাদেম জোবেদ আলীসহ (৬১) আরো ৫ জনকে গ্রেফতার করে তাদের লালমনিরহাট জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

তবে প্রথম দফায় গ্রেফতার ৫ জনকে হত্যা মামলায় ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন জানায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী। গতকাল সোমবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য থাকলেও সেটি পরিবর্তন করে মঙ্গলবার করা হয়।

প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ওই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক(২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী(৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)।

এই ৫ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। দ্বিতীয় ধাপের গ্রেফতার ৫ হলেন- খাদেম জোবেদ আলী, রাজু (১৯), আনোয়ার হোসেন (৫৫), মানিক (২৬) ও মেরাজুল ইসলাম (১৭)।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার দায়ে নিহতের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (৩১ অক্টোবর) একটি মামলা দায়ের করেন।

নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরীচ্যুত হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।

ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টি.এম.এ মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হত্যার পেছনে ধর্ম অবমাননার কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান।

ঘটনাস্থল তদন্ত করে মসজিদের কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির। এটা স্রেফ একটি গুজব বলে দাবি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল আলম, পাটগ্রাম থানার এসআই শাহজাহান আলী ও বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন।

বিজনেস আওয়ার/০৩ নভেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: