ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউসিবি থেকে দুই হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে আদনান ইমাম

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 26

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে সরানোর অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ জহির গত ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে একটি চিঠিতে এ অভিযোগ করেন।

গত ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ জহির এই অভিযোগ করেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম নিজের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ঋণ গ্রহণ করেছেন, যেমন জেনেক্স ইনফোসিস, জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এ অ্যান্ড পি ভেঞ্চার, এডব্লিউআর ডেভেলপমেন্টস এবং এডব্লিউআর রিয়েল এস্টেট।

অভিযোগে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আলমগীর কবীর অপু এই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণে সহায়তা করেছেন।

শরীফ জহির চিঠিতে উল্লেখ করেন, আলমগীর কবীরকে দ্রুত ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাকে কর্পোরেট ব্যাংকিংয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

তিনি দাবি করেছেন যে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ববর্তী পরিচালনা পর্ষদের সময় ব্যাংকটিতে গুরুতর অনিয়ম ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে, যা ব্যাংকটির আর্থিক স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছে।

শরীফ জহির চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন যে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী পর্ষদ সদস্যদের পদত্যাগে বাধ্য করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংকের পরিচালনায় বসান।

এছাড়া, তিনি সাইফুজ্জামানের স্ত্রীর মাধ্যমে পর্ষদের চেয়ারম্যানত্ব প্রতিষ্ঠা এবং তার ভাইকে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের অভিযোগ করেছেন।

২০২১ সালের শেষে ইউসিবি জেনেক্স ইনফোসিসের ৬০ লাখ ৫৪ হাজার লকড-ইন শেয়ার কিনে প্রায় ৭৮ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

এই শেয়ারের বিক্রেতা আমের ও জাহারা রাসূল ম্যানেজমেন্টকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি তৎকালীন পর্ষদ চেয়ারম্যানের কাছে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। তৎকালীন পর্ষদ স্বতন্ত্রভাবে তাদের প্রস্তাব রিভিউ ও অনুমোদন করে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড-এর (জেনেক্সিল) চেয়ারম্যান এবং শেয়ার বিক্রেতা আমের রাসূল ও জাহারা রাসূল যথাক্রমে আদনান ইমামের শ্যালক ও বোন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড-এর (জেনেক্সিল) চেয়ারম্যান এবং শেয়ার বিক্রেতা আমের রাসূল ও জাহারা রাসূল যথাক্রমে আদনান ইমামের শ্যালক ও বোন।

এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত শুরু করে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান, সাবেক পর্ষদ সদস্য, শেয়ার বিক্রেতা আমের ও জাহারা রাসূল, আদনান ও আলমগীরসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুদককে অনুরোধ জানিয়েছেন জহির।

উল্লেখ্য, ২৯ আগস্ট শরীফ জহির নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে ইউসিবিতে দায়িত্ব শুরু করেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১০ ডিসেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ইউসিবি থেকে দুই হাজার কোটি টাকা সরিয়েছে আদনান ইমাম

পোস্ট হয়েছে : ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে সরানোর অভিযোগ উঠেছে। বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ জহির গত ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে একটি চিঠিতে এ অভিযোগ করেন।

গত ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ জহির এই অভিযোগ করেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম নিজের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ঋণ গ্রহণ করেছেন, যেমন জেনেক্স ইনফোসিস, জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এ অ্যান্ড পি ভেঞ্চার, এডব্লিউআর ডেভেলপমেন্টস এবং এডব্লিউআর রিয়েল এস্টেট।

অভিযোগে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আলমগীর কবীর অপু এই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণে সহায়তা করেছেন।

শরীফ জহির চিঠিতে উল্লেখ করেন, আলমগীর কবীরকে দ্রুত ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাকে কর্পোরেট ব্যাংকিংয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

তিনি দাবি করেছেন যে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ববর্তী পরিচালনা পর্ষদের সময় ব্যাংকটিতে গুরুতর অনিয়ম ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড ঘটেছে, যা ব্যাংকটির আর্থিক স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলেছে।

শরীফ জহির চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন যে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী পর্ষদ সদস্যদের পদত্যাগে বাধ্য করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংকের পরিচালনায় বসান।

এছাড়া, তিনি সাইফুজ্জামানের স্ত্রীর মাধ্যমে পর্ষদের চেয়ারম্যানত্ব প্রতিষ্ঠা এবং তার ভাইকে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের অভিযোগ করেছেন।

২০২১ সালের শেষে ইউসিবি জেনেক্স ইনফোসিসের ৬০ লাখ ৫৪ হাজার লকড-ইন শেয়ার কিনে প্রায় ৭৮ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

এই শেয়ারের বিক্রেতা আমের ও জাহারা রাসূল ম্যানেজমেন্টকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি তৎকালীন পর্ষদ চেয়ারম্যানের কাছে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। তৎকালীন পর্ষদ স্বতন্ত্রভাবে তাদের প্রস্তাব রিভিউ ও অনুমোদন করে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড-এর (জেনেক্সিল) চেয়ারম্যান এবং শেয়ার বিক্রেতা আমের রাসূল ও জাহারা রাসূল যথাক্রমে আদনান ইমামের শ্যালক ও বোন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আদনান ইমাম জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড-এর (জেনেক্সিল) চেয়ারম্যান এবং শেয়ার বিক্রেতা আমের রাসূল ও জাহারা রাসূল যথাক্রমে আদনান ইমামের শ্যালক ও বোন।

এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত শুরু করে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান, সাবেক পর্ষদ সদস্য, শেয়ার বিক্রেতা আমের ও জাহারা রাসূল, আদনান ও আলমগীরসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুদককে অনুরোধ জানিয়েছেন জহির।

উল্লেখ্য, ২৯ আগস্ট শরীফ জহির নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে ইউসিবিতে দায়িত্ব শুরু করেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১০ ডিসেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: