ঢাকা , রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লোকসানের পাল্লা আরও ভারি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের

  • পোস্ট হয়েছে : ৫ ঘন্টা আগে
  • 4

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কোনো ভাবেই দাঁড়াতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। একদিন উত্থান হলেও পরের কয়েকদিন টানা পতন। এভাবেই চলছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কর্মদিবস কিছুটা উত্থান হলেও রোববার (২২ ডিসেম্বর) পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এই পতনে লোকসানের পাল্লা আরও ভারি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উত্থান হয়েছিল শেয়ারবাজারে। ওই দিন সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে আজ ২৫ পয়েন্ট সূচক হারিয়ে যায় শেয়ারবাজার থেকে। উত্থান হলেও আগের দিন দুই শতাধিক কোম্পানির দর কমেছিল। আর আজ পৌনে তিন শতাধিক কোম্পানির দর কমেছে। আগের দিন বিনিয়োগকারীরা ৬০ কোটি টাকা হারিয়েছিল। তবে আজ পতন হলেও শেয়ারবাজারে ফিরেছে এক হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা।

এদিন সূচকের উত্থানে শুরু হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন। বেলা ১১টা ২২ মিনিট পর্যন্ত উত্থানের মধ্যে থেকেই লেনদেন হচ্ছিল শেয়ারবাজারে। তবে বেলা ১১টা ২৩ মিনিটের দিকে সূচক পতনে নেমে যায়। এরপর আর কখনো উত্থানে ফিরে আসেনি সূচক এবং পতনেই শেষ হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন।

জানা যায়, শনিবার এক বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে অস্থিরতার পেছনে প্লেয়ার ও রেগুলেটরদের অনেক দোষ আছে। তিনি আরো বলেন, আপনারা জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ এ শেয়ার মহা আনন্দে কিনছেন। নূন্যতম কোনো মূল্য নেই, এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। এজন্য একটু কষ্ট করতে হবে। আমি বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। শেয়ারবাজারের প্লেয়ার ও রেগুলেটরদের অনেক দোষ আছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী সঠিক কথাই বলেছেন। শেয়ারবাজারের অস্থিরতার পেছনে প্লেয়ার এবং রেগুলেটরদের ভূমিকা রয়েছে। বাজারকে স্থিরতায় ফিরাতে রেগুলেটরদের সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়া জেড ক্যাটাগরি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা যা বলেছেন তাও একদম সঠিক। বাজারে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে সব সময়ই কারসাজি হয়ে থাকে। অস্তিত্বহীন শেয়ারে বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে এটা বারবার বলার পরও এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ার থেকে অল্প সময়ে এবং অধিক মুনাফা তোলার আশায় বিনিয়োগ করে থাকেন। যা উচিৎ নয়। এসব মানসিকতা পরিহার করে বাজারকে সঠিক ধারায় রাখতে ভালো এবং মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

রোববারের বাজার পর্যালোচনা

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫.১৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে‘ডিএসইএস’ ৫.১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৩.১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৩১২ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আজ লেনদেন ২৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বা ৭ শতাংশ কমেছে।

ডিএসইতে লেনদেন আজ হওয়া ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৬৬টির বা ১৬.৭৯ শতাংশের, কমেছে ২৮১টির বা ৭১.৫০ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৪৬টির বা ১১.৭০ শতাংশের।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৭৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১১০টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৪টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৪ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ ডিসেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লোকসানের পাল্লা আরও ভারি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের

পোস্ট হয়েছে : ৫ ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কোনো ভাবেই দাঁড়াতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। একদিন উত্থান হলেও পরের কয়েকদিন টানা পতন। এভাবেই চলছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কর্মদিবস কিছুটা উত্থান হলেও রোববার (২২ ডিসেম্বর) পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এই পতনে লোকসানের পাল্লা আরও ভারি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উত্থান হয়েছিল শেয়ারবাজারে। ওই দিন সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে আজ ২৫ পয়েন্ট সূচক হারিয়ে যায় শেয়ারবাজার থেকে। উত্থান হলেও আগের দিন দুই শতাধিক কোম্পানির দর কমেছিল। আর আজ পৌনে তিন শতাধিক কোম্পানির দর কমেছে। আগের দিন বিনিয়োগকারীরা ৬০ কোটি টাকা হারিয়েছিল। তবে আজ পতন হলেও শেয়ারবাজারে ফিরেছে এক হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা।

এদিন সূচকের উত্থানে শুরু হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন। বেলা ১১টা ২২ মিনিট পর্যন্ত উত্থানের মধ্যে থেকেই লেনদেন হচ্ছিল শেয়ারবাজারে। তবে বেলা ১১টা ২৩ মিনিটের দিকে সূচক পতনে নেমে যায়। এরপর আর কখনো উত্থানে ফিরে আসেনি সূচক এবং পতনেই শেষ হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন।

জানা যায়, শনিবার এক বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে অস্থিরতার পেছনে প্লেয়ার ও রেগুলেটরদের অনেক দোষ আছে। তিনি আরো বলেন, আপনারা জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ এ শেয়ার মহা আনন্দে কিনছেন। নূন্যতম কোনো মূল্য নেই, এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। এজন্য একটু কষ্ট করতে হবে। আমি বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। শেয়ারবাজারের প্লেয়ার ও রেগুলেটরদের অনেক দোষ আছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী সঠিক কথাই বলেছেন। শেয়ারবাজারের অস্থিরতার পেছনে প্লেয়ার এবং রেগুলেটরদের ভূমিকা রয়েছে। বাজারকে স্থিরতায় ফিরাতে রেগুলেটরদের সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়া জেড ক্যাটাগরি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা যা বলেছেন তাও একদম সঠিক। বাজারে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে সব সময়ই কারসাজি হয়ে থাকে। অস্তিত্বহীন শেয়ারে বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকে এটা বারবার বলার পরও এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ার থেকে অল্প সময়ে এবং অধিক মুনাফা তোলার আশায় বিনিয়োগ করে থাকেন। যা উচিৎ নয়। এসব মানসিকতা পরিহার করে বাজারকে সঠিক ধারায় রাখতে ভালো এবং মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

রোববারের বাজার পর্যালোচনা

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫.১৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে‘ডিএসইএস’ ৫.১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৩.১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে ৩১২ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আজ লেনদেন ২৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বা ৭ শতাংশ কমেছে।

ডিএসইতে লেনদেন আজ হওয়া ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৬৬টির বা ১৬.৭৯ শতাংশের, কমেছে ২৮১টির বা ৭১.৫০ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৪৬টির বা ১১.৭০ শতাংশের।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ১১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৭৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১১০টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৪টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৪ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে।

বিজনেস আওয়ার/ ২২ ডিসেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: