বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন রসদ পেয়েছে। গত পাঁচ মাসে রপ্তানি আয়, রেমিটেন্স, রিজার্ভসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে ছিল ইতিবাচক ধারা। ব্যতিক্রম কেবল পুঁজিবাজারে। আলোচিত সময়ে পুঁজিবাজারের স্বাস্থ্য আরও খারাপ হয়েছে। সব মিলিয়ে একটি নাজুক বছর পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার।
গত এক বছরে দেশের পুঁজিবাজারে মূলধনের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। গতকাল সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) তা কমে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৬২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ডিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। তবে দেশের সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংস্কারের মতোই পুঁজিবাজার সংস্কারেও টাস্কফোর্স গঠনসহ নেওয়া হয়েছে অনেকগুলো ইতিবাচক উদ্যোগ।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার অন্যতম পূর্বশর্ত এবং পুঁজিবাজার আর্থিক খাতের প্রধানতম গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি । রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া পুঁজিবাজারে বড়ধরনের বিনিয়োগ সাইডলাইনে এবং বিদেশী বিনিয়োগ অন্য কোন দেশে চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ফলে বর্তমান রাশেদ মাকসুদ কমিশন পুঁজিবাজারকে কেন্দ্র করে আগের শিবলি রুয়াইয়েত কমিশনের বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বিগত ৫ মাসে পুঁজিবাজারে তেমন একটা ইতিবাচক গতি পরিলক্ষিত হয়নি।
২০২৪ সাল দুর্নীতি ও অনিয়মের পাশাপাশি সূচক, শেয়ারের দাম ও বাজার মূলধনের অব্যাহত পতনে বিনিয়োগকারীদের জন্য এক দুঃসহ বছর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুঁজিবাজারের প্রতি দেশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রায় তলানিতে নেমেছে। বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আস্থাহীনতা থেকে লংমার্চ কর্মসূচি এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করেছেন। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির প্রধান ফটকে তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন কিছু বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী।
শেষ হতে চলা বছরের ১ জানুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২৩৩ পয়েন্ট। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বছরের শেষ কার্যদিবসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২১৬ পয়েন্টে। অর্থাৎ, বছরের ব্যবধানে সূচক কমেছে ১ হাজার ৩৮ পয়েন্ট। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ডিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম অর্থসূচককে বলেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বছর। যে পরিমান পুঁজি আমরা হারিয়েছি, এটা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই দুঃখের খবর বা সংবাদ। পুঁজিটা আমারা যে কারণে হারিয়েছি এটার প্রধান করাণ ছিল শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস। ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেক দিন ধরে শেয়ারের দামগুলি আটকানো ছিল। পরে আবার মার্কেট কারেকশন হলো, এটা আরেকটা কারণ।
তিনি বলেন, প্রশ্নবিদ্ধ দ্বদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এবং পরে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের কোন আস্থা ছিল না। এটার প্রতিক্রিয়ায় বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি তুলে নেয়। সারা পৃথিবীতে এটাই হয়, সরকারের ওপর যখন আস্থা থাকে না তখন পুঁজিবাজার থেকে সবাই পুঁজি তুলে নেই। কেননা পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি তুলে নেওয়া সবচেয়ে সহজ কাজ।
তিনি আরো বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পারে আমরা যেভাবে আশা করেছিলাম, বাজার ইতিবাচক ভাবে ফিরে আসবে। তাই এসেছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ফিরে আসাটা খুবই স্বল্পমেয়াদি ছিল। ফলে আস্থাটা স্থায়ী হয় নাই। এর ফলে আবারও বিনিয়োগরীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটার কারণ গত ৪ মাস দিয়ে বিবেচনা করলে ভুল হবে। এটা মূলত শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর থেকে।
ফিরে দেখা গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এতে একধরনের স্থবিরতা নেমে আসে পুঁজিবাজারে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় ৩৫টি বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফায় পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। ফ্লোর প্রত্যাহারের পরই দরপতন শুরু হয়। এতে পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক দরপতনের কারণে মার্চ শেষে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বাজার মূলধন কমে গেছে।
গণআন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল–ইসলাম। রুবাইয়াত কমিশন বিদায়ের পর দায়িত্ব নেয় খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন। পুঁজিবাজারের স্বার্থে ডিএসই ও সিএসই উভয় পর্ষদেও আনা হয় পরিবর্তন।
গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজারে ৫ সদস্যের টাস্কফোর্স
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়া পর প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে ৭ অক্টোবর পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের সুশাসন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার সংস্কারের সুপারিশের জন্য ৫ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। টাস্কফোর্সের কাজ চলমান রয়েছে। ব্যাংকঋণের বদলে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সরকারের নীতি প্রণয়ন এবং এ-সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিএসইসির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের সুপারিশ করাসহ টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭টি। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে টাস্কফোর্স তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন কমিশনে হস্তান্তর করবে।
গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজারে আস্থা-অনাস্থা
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুঁজিবাজর কিছুটা ইতিবাচক অবস্থানে ফিরে আসবে ভেবে প্রথম কয়েক কার্যদিবস বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশা নিয়ে বাজারে ফিরে আসতে শুরু করেছিল। ফলে বাজারে কয়েক দিন চাঙা ভাব পরিলক্ষিত হলেও, আবার লেনদেন গিয়ে ঠেকে তলানিতে। গত ২৮ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচক কমে ৪ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে নেমে আসে, যা ছিল চার বছরের মধ্যে নিম্নতম। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া বিনিয়োগকারীরা আবার চলে গেছে সাইড লাইনে।
পুঁজিবাজারের বর্তমান আস্থাহীনতার জন্য বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের অদক্ষতাকে দায়ি করে পদত্যাগের দাবিতে বারবার বিক্ষোভ, মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিএসইসির ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও)
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২০২৪ সালে ৬ কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করেছে। আর বন্ড ছেড়ে মূলধন সংগ্রহ করেছে ২টি ব্যাংক। মোট তোলা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। গত বছর সংগ্রহ করা হয়েছিল ১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। ২০২২ সালে ছয়টি প্রতিষ্ঠান আইপিওর মধ্যে শেয়ারবাজার থেকে ৬২৬ কোটি ২৬ লাখ ৯ হাজার টাকা তুলেছিল। অবশ্য আগের তথ্য দেখলে শেষ দুই বছরের আইপিওর চিত্র খুবই হতাশাজনক। কারণ, ২০২১ সালে আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৫টি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ উত্তোলনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৪ হাজার টাকা।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে আইপিওর মাধ্যমে বোরাক রিয়েল এস্টেটের ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করার আবেদন বাতিল করেছে নতুন কমিশন। বি ব্রাদার্স গার্মেন্টস নামের একটি কোম্পানির ৫০ কোটি টাকা এবং জেনিথ ইসলামি লাইফের ১৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের আবেদনও বাতিল হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজারে জরিমানার অভ্যুত্থান
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দেশের আর্থিক খাতের দরবেশ হিসাবে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক সমালোচিত। পুঁজিবাজারে সুকুক বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে ৩ হাজার কোট টাকা তোলার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার থেকে রাজনৈতিক বনে যাওয়া তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরু পুঁজিবাজারে অনিয়োমের দায়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন । ১২টি কোম্পানির শেয়ার কারসাজির কারণে সালমান, শাকিব ও হিরুসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭২২ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়েছে ২০২৪ সালে।
এ ছাড়া লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেইস ম্যানেজমেন্টের অংশীদার চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, আরেক অংশীদার হাসান তাহের ইমাম, এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বরখাস্ত সদস্য মতিউর রহমানের।
গণঅভ্যুত্থানের পুঁজিবাজারে মতামত
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজারের স্বার্থে সাড়ে ৪ মাসে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নতুন কমিশন। কারসাজির অভিযোগে কারও কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে। পাশাপাশি টাস্কফোর্সের কাজ চলমান। এখন বিনিয়োগকারীরা আশা নিয়ে তাকিয়ে আছেন ২০২৫ সালের দিকে। আগামী বছরে ভালো কিছু দেখার প্রত্যাশা তাঁদের।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশার আলো দেখেছিলেন। বাজারে চাঙা ভাব ছিল কিছুদিন। কিন্তু একটু ঝলক দেখিয়ে নিভতে থাকে বাতি। গত ২৮ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচক কমে ৪ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে নেমে আসে, যা ছিল চার বছরের মধ্যে নিম্নতম। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার পর্যায়ে চলে আসেন বিনিয়োগকারীরা, যা নতুন কমিশনও ঠেকাতে পারেনি।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম অর্থসূচককে বলেন, আসলে ২০২৪ সাল ঘটনা বহুল বছর। বছর জুড়ে বিভিন্ন কারণে পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন দেখা গেছে। শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করাণে একধরনের স্থবিরতা নেমে আসে পুঁজিবাজারে। এরপর কয়েক দফায় পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার ফ্লোর প্রত্যাহারের পরেও দরপতন অব্যহত থাকে। এতে পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক দরপতনের কারণে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বাজার মূলধন কমে গেছে।
তিনি বলেন, তবে ২০২৩ সালের চেয়ে গড় লেনদেন ২০২৪ সালে কিছুটা বেড়েছে। বাজারের স্বার্থে নতুন কমিশন বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে। সংস্কারে উদ্দেশ্যে টাস্কফোর্স গঠনসহ বিভিন্ন অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন, শেয়ার কারসাজির দায়ে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জারিমান সহ অনেকগুলো ইতবাচক কাজ চলাম আছে। কমিশন আশা করছে, সংস্কার কাজগুলো শেষ হলে আগামী বছরে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বিজনেস আওয়ার/ ৩১ ডিসেম্বর / এ এইচ