ঢাকা , বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি, বোরাক রিয়েল এস্টেটের আইপিও বাতিল

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতির কারণে বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চেয়েছিল।

বিএসইসি এক চিঠির মাধ্যমে জানায়, কোম্পানির আইপিও আবেদন, খসড়া প্রসপেক্টাস এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথি পরীক্ষা করে অসঙ্গতিগুলি পাওয়া যায়। এর ফলে বিএসইসি পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ এর রুল ১৫(৫) অনুযায়ী আইপিও আবেদনটি বাতিল করতে বাধ্য হয়।

বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩-এ প্রদত্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানি আবাসনে বিনিয়োগের সম্পদের মূল্য ৭০০ কোটি ২০ লাখ টাকা ও কর পরবর্তী মুনাফা ৬৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা দেখিয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে সেই বিনিয়োগের লাভ বা লোকসান হিসাব করতে হবে। এর ফলে প্রদর্শিত মুনাফার অবাস্তবতা স্পষ্ট হয়।

বিএসইসি আরও জানায়, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮১ টাকা ৩৭ পয়সা ছিল, যা ২০২৩ সালের ৩০ জুন ১৪৮ টাকা ৫৪ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। তবে ন্যায্য মূল্য ও আসল মূল্যের লাভ বাদ দিলে এটি ৮৫ টাকা ২০ পয়সায় নামবে, যা অতিমূল্যায়নের ইঙ্গিত করে।

এছাড়াও, কোম্পানি ২০২৩ এর ৩০ জুনের আর্থিক তথ্যে অসঙ্গতি এবং সম্ভাব্য অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পেয়েছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর আলী একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির পদে রয়েছেন, যা আইন লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বনানী ডিএনসিসি ইউনিক কমপ্লেক্সের কার্যক্রম সিভিল এভিয়েশন অথরিটির অনুমোদন না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে, যা কোম্পানির আয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এছাড়া, কোম্পানির শেয়ার, সম্পদ, এবং ইনভেন্টরি বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক রাখা হয়েছে, যা খেলাপিতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। এদিকে, কোম্পানি হোটেল প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্য মূল্যায়ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইপিওর বিষয়ে অসম্মতি জানিয়েছে।

কোম্পানিটির আইপিওর ১৫ শতাংশ শেয়ার কর্মচারীদের বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানালেও তাদের বিও নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়নি, যা আইনের অসঙ্গতি। এসব সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও আবেদন বাতিল করেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৬ জানুয়ারি / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি, বোরাক রিয়েল এস্টেটের আইপিও বাতিল

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আর্থিক প্রতিবেদনে নানা অসঙ্গতির কারণে বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চেয়েছিল।

বিএসইসি এক চিঠির মাধ্যমে জানায়, কোম্পানির আইপিও আবেদন, খসড়া প্রসপেক্টাস এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথি পরীক্ষা করে অসঙ্গতিগুলি পাওয়া যায়। এর ফলে বিএসইসি পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ এর রুল ১৫(৫) অনুযায়ী আইপিও আবেদনটি বাতিল করতে বাধ্য হয়।

বোরাক রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২৩-এ প্রদত্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানি আবাসনে বিনিয়োগের সম্পদের মূল্য ৭০০ কোটি ২০ লাখ টাকা ও কর পরবর্তী মুনাফা ৬৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা দেখিয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে সেই বিনিয়োগের লাভ বা লোকসান হিসাব করতে হবে। এর ফলে প্রদর্শিত মুনাফার অবাস্তবতা স্পষ্ট হয়।

বিএসইসি আরও জানায়, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮১ টাকা ৩৭ পয়সা ছিল, যা ২০২৩ সালের ৩০ জুন ১৪৮ টাকা ৫৪ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। তবে ন্যায্য মূল্য ও আসল মূল্যের লাভ বাদ দিলে এটি ৮৫ টাকা ২০ পয়সায় নামবে, যা অতিমূল্যায়নের ইঙ্গিত করে।

এছাড়াও, কোম্পানি ২০২৩ এর ৩০ জুনের আর্থিক তথ্যে অসঙ্গতি এবং সম্ভাব্য অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পেয়েছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নূর আলী একাধিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির পদে রয়েছেন, যা আইন লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বনানী ডিএনসিসি ইউনিক কমপ্লেক্সের কার্যক্রম সিভিল এভিয়েশন অথরিটির অনুমোদন না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে, যা কোম্পানির আয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এছাড়া, কোম্পানির শেয়ার, সম্পদ, এবং ইনভেন্টরি বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক রাখা হয়েছে, যা খেলাপিতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। এদিকে, কোম্পানি হোটেল প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্য মূল্যায়ন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইপিওর বিষয়ে অসম্মতি জানিয়েছে।

কোম্পানিটির আইপিওর ১৫ শতাংশ শেয়ার কর্মচারীদের বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানালেও তাদের বিও নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়নি, যা আইনের অসঙ্গতি। এসব সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিএসইসি কোম্পানিটির আইপিও আবেদন বাতিল করেছে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৬ জানুয়ারি / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: