স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ ওভারে জয়ের জন্য খুলনা টাইগার্সের প্রয়োজন ১৯ রান। প্রথম বলে বল লং অনে পাঠিয়ে সিঙ্গেলস নেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। পরের দুই বলে স্কয়ার অফ দ্যা উইকেট এবং থার্ড ম্যান অঞ্চলে টানা দুটি চার মারেন আবু হায়দার রনি। কিন্তু রুয়েল মিয়ার করা তৃতীয় বলেই লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ছয় বলে ১৪ রান করা রনি। বাকি দুই বলে দশ রান লাগলে আর সুবিধা করতে পারেননি নাসুম আহমেদ এবং উইকেটের অপরপ্রান্তে থাকা মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। সিলেট স্ট্রাইকার্স ম্যাচ জিতে আট রানে। টানা তিনটি হারের পর এবার টানা দুটি জয় পেল সিলেট।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সতর্ক সূচনা করে খুলনা। পাওয়ার প্লে’তে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি দলটি। চতুর্থ ওভারে নাইম শেখকে বোল্ড করেন নাহিদুল। তার গুড লেংথের ডেলিভারিটি ডাউন দ্যা উইকেটে খেলতে এসে লাইন মিস করে বোল্ড হন ৯ বলে ১১ রান করা নাইম। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ফিরে যান ইমরুল কায়েসও। তানজিম হাসান সাকিবের স্লোয়ারে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন তিন বলে দুই রান করা ইমরুল। এরপর ৮ বলে ১৫ রান করা দারউইশ রাসুলি ফিরে যান। রিস টপলিকে সামনে সজোরে হাঁকাতে গিয়ে তাকেই ক্যাচ দিয়ে দেন এই আফগান ক্রিকেটার। পাওয়ার প্লে’তে তিন উইকেটে ৪৭ করে খুলনা।
পাওয়ার প্লে’তে তিন উইকেট হারানো খুলনার রান তোলার গতি কিছুটা কমে যায়। উইলিয়াম বসিস্তো এবং মিরাজের ব্যাটে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় দলটি। দশ ওভারে ৭৫ রানে পৌঁছায় দলটি। ১২তম ওভারে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৪ বলে ১৫ রান করে রুয়েল মিয়ার শর্ট ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে বল সীমানাছাড়া করতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন খুলনার অধিনায়ক।
একশ রানে পৌঁছানোর আগে আরেক উইকেট হারায় খুলনা। শুরু থেকে রয়েসয়ে খেলা উইলিয়াম বসিস্তো ফিরে যান হাফ সেঞ্চুরির আগেই। রিস টপলির শর্ট স্লোয়ারে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন এই অস্ট্রেলিয়ান। ১৪তম ওভারে একশ রানে পৌঁছায় দলটি। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজের ১৮ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে কক্ষপথে ফিরে দলটি। শেষ দিকে অঙ্কন ১৬ বলে ২৮ এবং আবু হায়দার রনি ছয় বলে ১৪ রান করলেও দল জেতাতে পারেননি। সিলেটের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব, রিস টপলি এবং রুয়েল মিয়া।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর আগে শুরুটা বেশ সাদামাটা করেন সিলেটের দুই ওপেনার রনি তালুকদার এবং রাহকিম কর্নওয়াল। তীয় ওভারে আবু হায়দার রনির ওপর চড়াও হতে গিয়ে ফিরে যান কর্নওয়াল। আবু হায়দার রনির অফ স্টাম্প তাক করা গুড লেংথের ডেলিভারিতে বড় শট খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন কর্নওয়াল। পাঁচ বলে চার রান করে বোল্ড হন তিনি।
এরপর নাসুম আহমেদের লেগ সাইডে তাক করা ফুলার লেংথের ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন সাত বলে দুই রান করা জর্জ মানজি। ১৫ রানে দুই উইকেট হারানো সিলেট পাওয়ার প্লে’তে নেয় দুই উইকেটে ২১ রান। চলমান বিপিএলে এটাই পাওয়ার প্লে’তে নেয়া সর্বনিম্ন রান। পাওয়ার প্লে’র পর অবশ্য জাকির হাসান এবং রনি তালুকদারের দাপটে এগিয়ে যায় সিলেট। ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১২.৫ ওভারে দলীয় একশ রানে পৌঁছায় সিলেট। এই দুজনের জুটির শতরান পূরণ হয় ৫৯ বলে।
রনি- জাকিরের ১০৬ রানের জুটি ভাঙেন আবু হায়দার রনি। ৪৪ বলে ৫৬ রান করা রনি তালুকদারকে ফিরিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তার ওয়াইডে করা গুড লেংথের ডেলিভারিটি লং অফে হাঁকাতে গিয়ে জিয়াউর রহমানের মুঠোয় ধরা পড়েন তালুকদার। তারপর উইকেটে এসে পাঁচ বলে তিনটি ছক্কায় ২০ রান নেন অ্যারন জোন্স। ১৬.১ ওভারের মধ্যে দল পৌঁছে যায় ১৫০ রানে।
জোন্সকে ফেরানোর পরের বলে জাকের আলী অনিককে ফেরান জিয়াউর। তার লেংথ ডেলিভারিটি জাকেরের ব্যাটে লেগে পায়ে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। ১৫০ রানে পাঁচ উইকেট হারায় দলটি। এরপর আর উইকেট হারায়নি সিলেট। জাকির ৪৬ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন, আরিফুল ১৩ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন।
বিজনেস আওয়ার/ ১২ জানুয়ারি / রানা