ঢাকা , বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনে তেলের চাহিদা কি আর বাড়বে না?

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • 5

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: চীনে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা পূর্বাভাসের তুলনায় আগেই শীর্ষে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকার-পরিচালিত কাঠামোগত পরিবর্তন এবং ‘নতুন জ্বালানি’র যানবাহন বিক্রি উৎসাহিত করার কারণে এমনটি ঘটতে পারে।

চীনের ভোগব্যবস্থা বৈশ্বিক তেলবাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। মহামারির সময় বাদে এটি সাম্প্রতিক দশকে প্রথমবারের মতো বার্ষিক আমদানির পতন।

চীনে তেলের দুর্বল চাহিদার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারেও। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭০ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক চক্রের পাশাপাশি কাঠামোগত পরিবর্তন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে চাহিদা কমছে।

যুক্তরাজ্যের ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ কিয়েরান টম্পকিনস বলেছেন, চীন একটি কাঠামোগতভাবে তেলের চাহিদা দুর্বল হওয়ার যুগে প্রবেশ করছে। টোকিওর মারুবেনি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক লি জুয়েলিয়ান মনে করেন, চীনের তেলের চাহিদা এরই মধ্যে শীর্ষে পৌঁছে গেছে।

বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রভাব

চীনে তেলের চাহিদা কমার অন্যতম প্রধান কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) ব্যাপক বিস্তার। দেশটিতে গত বছর থেকে ইভির বিক্রি পেট্রোলচালিত গাড়িকে ছাড়িয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরে ইভি চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা ১ দশমিক ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। পরিবহন খাতে পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার কমে যাওয়ায় মোট তেলের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

পাশাপাশি, চীনের সরকার তেল শোধনাগারগুলোর সক্ষমতা কমিয়ে আনারও উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের জ্বালানি সক্ষমতা ও কার্বন হ্রাস কর্মপরিকল্পনায় শোধনাগারের ক্ষমতা বছরে ১০০ কোটি টনের নিচে নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

চীনের সরকার কার্বন নির্গমন শূন্যে নামানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে, একই সময়ে কয়লার ব্যবহার ও আমদানি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের ৭৩ শতাংশ তেলের আমদানি-নির্ভরতা দেশটির জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

জাপানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেটালস অ্যান্ড এনার্জি সিকিউরিটির প্রধান মিকা তাকেহারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ মোকাবিলায় চীন নবায়নযোগ্য ও বিকল্প জ্বালানিতে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছে।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জানুয়ারি / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চীনে তেলের চাহিদা কি আর বাড়বে না?

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: চীনে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা পূর্বাভাসের তুলনায় আগেই শীর্ষে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে সরকার-পরিচালিত কাঠামোগত পরিবর্তন এবং ‘নতুন জ্বালানি’র যানবাহন বিক্রি উৎসাহিত করার কারণে এমনটি ঘটতে পারে।

চীনের ভোগব্যবস্থা বৈশ্বিক তেলবাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। মহামারির সময় বাদে এটি সাম্প্রতিক দশকে প্রথমবারের মতো বার্ষিক আমদানির পতন।

চীনে তেলের দুর্বল চাহিদার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববাজারেও। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭০ ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক চক্রের পাশাপাশি কাঠামোগত পরিবর্তন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে চাহিদা কমছে।

যুক্তরাজ্যের ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ কিয়েরান টম্পকিনস বলেছেন, চীন একটি কাঠামোগতভাবে তেলের চাহিদা দুর্বল হওয়ার যুগে প্রবেশ করছে। টোকিওর মারুবেনি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক লি জুয়েলিয়ান মনে করেন, চীনের তেলের চাহিদা এরই মধ্যে শীর্ষে পৌঁছে গেছে।

বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রভাব

চীনে তেলের চাহিদা কমার অন্যতম প্রধান কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) ব্যাপক বিস্তার। দেশটিতে গত বছর থেকে ইভির বিক্রি পেট্রোলচালিত গাড়িকে ছাড়িয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরে ইভি চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা ১ দশমিক ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। পরিবহন খাতে পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার কমে যাওয়ায় মোট তেলের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

পাশাপাশি, চীনের সরকার তেল শোধনাগারগুলোর সক্ষমতা কমিয়ে আনারও উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের জ্বালানি সক্ষমতা ও কার্বন হ্রাস কর্মপরিকল্পনায় শোধনাগারের ক্ষমতা বছরে ১০০ কোটি টনের নিচে নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

চীনের সরকার কার্বন নির্গমন শূন্যে নামানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে, একই সময়ে কয়লার ব্যবহার ও আমদানি বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের ৭৩ শতাংশ তেলের আমদানি-নির্ভরতা দেশটির জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

জাপানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মেটালস অ্যান্ড এনার্জি সিকিউরিটির প্রধান মিকা তাকেহারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ মোকাবিলায় চীন নবায়নযোগ্য ও বিকল্প জ্বালানিতে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছে।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া

বিজনেস আওয়ার/ ২৭ জানুয়ারি / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: