ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিপসিক-এর ধাক্কায় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ার দামে ধস

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চীনা প্রতিষ্ঠান ডিপসিক একটি এআই-চালিত নতুন চ্যাটবট বাজারে এনেছে, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে উন্মোচিত হয়। ডিপসিক নামের এই চ্যাটবটটি দ্রুত অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া বিনা মূল্যের অ্যাপে পরিণত হয়েছে। ডিপসিকের জনপ্রিয়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্য পড়ার কারণ হয়ে উঠেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিপসিকের তুলনামূলক কম খরচে তৈরি হওয়া এবং তার জনপ্রিয়তা মার্কিন এআই কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। সিলিকন ভ্যালির ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট মার্ক অ্যান্ড্রেসেন এই চ্যাটবটকে এআই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা দাবি করেছে, তাদের অ্যাপ তৈরি করতে খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ লাখ ডলার, যা মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিলিয়ন ডলার খরচের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য।

ডিপসিক দক্ষিণ-পূর্ব চীনের হাংঝৌ শহরে অবস্থিত এবং এটি ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠিত। এর প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং, যিনি আগে হেজ ফান্ডের মাধ্যমে অর্থায়ন করেছেন। তিনি এনভিডিয়ার এ-১০০ চিপের বিশাল মজুত সংগ্রহ করেছিলেন, যা বর্তমানে চীনে রপ্তানি নিষিদ্ধ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়েনফেং ৫০ হাজারের মতো চিপের মালিক ছিলেন, যা সস্তা চিপের সাথে মিশিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে।

ডিপসিকের চ্যাটবট, চ্যাটজিপিটির মতো কাজ করে এবং এটি মানবিক গুণাগুণের সাথে উত্তর দিতে সক্ষম। অ্যাপটি ডাউনলোডের পর দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তবে কিছু ব্যবহারকারী সাইন আপ করতে সমস্যা অনুভব করেছেন।

ডিপসিক তাদের শক্তিশালী এআই অ্যাপ প্রদান করে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী এবং সস্তা চিপ ব্যবহার করে। এ কারণে, ডিপসিকের সাফল্য মার্কিন প্রযুক্তির প্রাধান্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয় এবং নাসডাক সূচক ৩ শতাংশের বেশি কমে যায়।

বিশ্বজুড়ে চিপ নির্মাতা ও ডেটা সেন্টার কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক হারে শেয়ার বিক্রি শুরু করেছেন, যার ফলে এনভিডিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সোমবার এনভিডিয়ার বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার কমেছে, যা মার্কিন ইতিহাসে একদিনে কোনো কোম্পানির সবচেয়ে বড় মূল্যহ্রাস। এখন, প্রশ্ন উঠেছে শক্তিশালী চিপের ভবিষ্যত নিয়ে, কারণ ডিপসিকের সাফল্য দেখিয়েছে যে কম বাজেটেও এআই উন্নয়ন সম্ভব।

বিজনেস আওয়ার/ ২৮ জানুয়ারি / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ডিপসিক-এর ধাক্কায় বড় প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ার দামে ধস

পোস্ট হয়েছে : ০১:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: চীনা প্রতিষ্ঠান ডিপসিক একটি এআই-চালিত নতুন চ্যাটবট বাজারে এনেছে, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে উন্মোচিত হয়। ডিপসিক নামের এই চ্যাটবটটি দ্রুত অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া বিনা মূল্যের অ্যাপে পরিণত হয়েছে। ডিপসিকের জনপ্রিয়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্য পড়ার কারণ হয়ে উঠেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ডিপসিকের তুলনামূলক কম খরচে তৈরি হওয়া এবং তার জনপ্রিয়তা মার্কিন এআই কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। সিলিকন ভ্যালির ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট মার্ক অ্যান্ড্রেসেন এই চ্যাটবটকে এআই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা দাবি করেছে, তাদের অ্যাপ তৈরি করতে খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ লাখ ডলার, যা মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিলিয়ন ডলার খরচের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য।

ডিপসিক দক্ষিণ-পূর্ব চীনের হাংঝৌ শহরে অবস্থিত এবং এটি ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠিত। এর প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং, যিনি আগে হেজ ফান্ডের মাধ্যমে অর্থায়ন করেছেন। তিনি এনভিডিয়ার এ-১০০ চিপের বিশাল মজুত সংগ্রহ করেছিলেন, যা বর্তমানে চীনে রপ্তানি নিষিদ্ধ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়েনফেং ৫০ হাজারের মতো চিপের মালিক ছিলেন, যা সস্তা চিপের সাথে মিশিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে।

ডিপসিকের চ্যাটবট, চ্যাটজিপিটির মতো কাজ করে এবং এটি মানবিক গুণাগুণের সাথে উত্তর দিতে সক্ষম। অ্যাপটি ডাউনলোডের পর দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তবে কিছু ব্যবহারকারী সাইন আপ করতে সমস্যা অনুভব করেছেন।

ডিপসিক তাদের শক্তিশালী এআই অ্যাপ প্রদান করে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী এবং সস্তা চিপ ব্যবহার করে। এ কারণে, ডিপসিকের সাফল্য মার্কিন প্রযুক্তির প্রাধান্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয় এবং নাসডাক সূচক ৩ শতাংশের বেশি কমে যায়।

বিশ্বজুড়ে চিপ নির্মাতা ও ডেটা সেন্টার কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক হারে শেয়ার বিক্রি শুরু করেছেন, যার ফলে এনভিডিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সোমবার এনভিডিয়ার বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার কমেছে, যা মার্কিন ইতিহাসে একদিনে কোনো কোম্পানির সবচেয়ে বড় মূল্যহ্রাস। এখন, প্রশ্ন উঠেছে শক্তিশালী চিপের ভবিষ্যত নিয়ে, কারণ ডিপসিকের সাফল্য দেখিয়েছে যে কম বাজেটেও এআই উন্নয়ন সম্ভব।

বিজনেস আওয়ার/ ২৮ জানুয়ারি / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: