বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গতকাল (বুধবার) বহুল আলোচিত নাইকো দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম খালেদা জিয়া সহ আটজনকে এই মামলায় খালাস দেন।
এ রায়ের মাধ্যমে, খালেদা জিয়া সবকটি মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন এবং তিনি মোট ৩৭টি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। এই মামলাগুলোর মধ্যে নাশকতা ও মানহানির মামলা ছিল, যেগুলি ২০০৭ সালে জরুরি সরকারের সময়ে এবং ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকারের সময় দায়ের করা হয়েছিল।
নাইকো দুর্নীতি মামলাটি ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর, সেনা সমর্থিত সরকারের সময়ে, কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন চুক্তি করার কারণে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছিল। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, কিন্তু খালেদা জিয়াকে আসামি হিসেবে রাখা হয়।
তবে, গত বছরের মার্চে চার্জ গঠন করা হলে, ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া এবং অন্য আসামিরা এই মামলায় খালাস পেয়ে যান।
- খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রায়কে ঐতিহাসিক এবং দৃষ্টান্তমূলক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “সব আসামি খালাস পাওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট।” – বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালও মন্তব্য করেছেন যে, “নাইকো দুর্নীতি মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল ছিল, এবং খালেদা জিয়া দীর্ঘ সময় পর হলেও ন্যায়বিচার পেয়েছেন।”
খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে মোট ৩৭টি মামলার মধ্যে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সম্পর্কিত দুটি মামলায় তিনি উচ্চ আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। এছাড়া, মানহানি এবং নাশকতার ২৩টি মামলাও আদালত খারিজ করে দিয়েছে।
এদিকে, এক সিনিয়র আইনজীবী গতকাল আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জন্য প্রতীকী ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন। আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, “খালেদা জিয়াকে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে মূল্যায়ন করা উচিত ছিল। তার বিরুদ্ধে অবিচার হয়েছে, এবং তাই প্রতীকী ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।”
এই রায়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে চলমান একাধিক মামলা থেকে মুক্ত হয়েছেন এবং তা তার রাজনৈতিক ও আইনগত অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
বিজনেস আওয়ার/ ২০ ফেব্রুয়ারি / রহমান