ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৩ কোম্পানির নগদের চেয়ে বোনাস বেশি, দিতে হবে অতিরিক্ত ১০.৮৮ কোটি টাকার ট্যাক্স

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য মোট লভ্যাংশের কমপক্ষে অর্ধেক নগদ দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। অন্যথায় অতিরিক্ত করারোপের শাস্তির আওতায় পড়তে হবে। এই বিধানের পরেও ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় ১৩ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ নগদের থেকে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। যাতে করে কোম্পানিগুলোকে জরিমানাস্বরুপ বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রদান করতে হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের আয়কর পরিপত্র অনুযায়ি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে বোনাস লভ্যাংশের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি বোনাসের পরিমাণ নগদের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে পুরো বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

এই বিধানের পরেও এখন পর্যন্ত ১৩ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

ওই ১৩ কোম্পানির মধ্যে ৪টির পর্ষদ বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে সেটা বোনাসের চেয়ে কম। কিন্তু ৯ কোম্পানির পর্ষদ পুরোটাই বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

আরও পড়ুন……
২৫ টাকা ইস্যু মূল্যের বেঙ্গল উইন্ডসোরের ‘নো’ ডিভিডেন্ড
ওষুধ কোম্পানি হয়েও করোনায় সেন্ট্রাল ফার্মার বড় লোকসান
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স নিয়ে বিএসইসির কঠোর অবস্থান, কি পেল বিনিয়োগকারীরা!
রাইটে বড় অর্থ সংগ্রহের পরেও জিপিএইচ ইস্পাতের নিয়মিত বোনাস শেয়ার ঘোষণা
গোল্ডেন হার্ভেস্টের রাইটে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের বছর পার না হতেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড
শেয়ারবাজারে উচ্চ মূল্যে শেয়ার ইস্যুর পর থেকেই তসরিফার মুনাফা নিম্নমুখী, এবার বড় লোকসান

বিধান অনুযায়ি, ১৩ কোম্পানিকে বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত করের জরিমানা দিতে হবে। যে অর্থ কোম্পানি থেকেই দেওয়া হবে। এতে করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদেরই ক্ষতি হবে।

নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করায় কোম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে মোট ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিতর্কিত ড্রাগণ সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস। এ কোম্পানিটিকে ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে সব কোম্পানির ক্ষেত্রেই বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) বোনাস শেয়ারকে নগদে রুপান্তরের মাধ্যমে শাস্তি এড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোম্পানি সচিব বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘এ’ ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য এখন অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতে হবে। কিছু করার নাই। আমরা যদি যে পরিমাণ অতিরিক্ত ট্যাক্স দেব, সেটা নগদ লভ্যাংশ দিতাম, তাতে কাজ হতো না। কারন ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকতে গেলে অতিরিক্ত ট্যাক্সের জরিমানা থেকে রক্ষা পেতে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। আবার অতিরিক্ত ট্যাক্স না দিয়ে ১-২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে চাইলে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নেমে যেতে হবে। কারন ১-২ শতাংশ নগদের সঙ্গে সর্বোচ্চ ওই পরিমাণই বোনাস দিতে পারব। না হলে সেই অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতেই হবে।

নিম্নে নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা কোম্পানিগুলোর তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামলভ্যাংশের হারবোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা)জরিমানার পরিমাণ (কোটি টাকা)
ড্রাগণ সোয়েটার১৫% বোনাস২৬.১৯২.৬২
প্যাসিফিক ডেনিমস১০% বোনাস১৬.৫২১.৬৫
নূরানি ডাইং১০% বোনাস১১.১৫১.১২
ইভিন্স টেক্সটাইল৫% বোনাস৮.৭১০.৮৭
কাট্টলি টেক্সটাইল২% নগদ ও ৮% বোনাস৮.৬২০.৮৬
অ্যাডভেন্ট ফার্মা১০% বোনাস৮.৩০০.৮৩
এসোসিয়েটেড অক্সিজেন২% নগদ ও ৮% বোনাস৭.৬০০.৭৬
দেশ গার্মেন্টস৩% বোনাস৭.৩২০.৭৩
ন্যাশনাল ফিড২% নগদ ও ৮% বোনাস৬.৮৫০.৬৯
ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস৫% বোনাস৩.১৯০.৩২
সোনালি পেপার৫% নগদ ও ১০% বোনাস১.৬৬০.১৭
প্রগ্রেসিভ লাইফ১০% বোনাস১.৫১০.১৫
স্টাইলক্রাফট১০% বোনাস১.২৬০.১৩

এ বিষয়ে সোনালি পেপারের সচিব মো. রাশেদুল হোসাইন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখা যাক রেগুলেটরি বডি এ বিষয়ে কোন কোয়ারি করে কিনা। আমরাতো রেগুলেটরি বডির সঙ্গে কথা বলেই ঘোষণা করেছি। এছাড়া কমপক্ষে বোনাস শেয়ারের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার আদেশটি কার্যকর হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত না। বাজেটের ওই বিষয়টি অনুমোদিত কিনা, সেটা জানতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০৮ নভেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

4 thoughts on “১৩ কোম্পানির নগদের চেয়ে বোনাস বেশি, দিতে হবে অতিরিক্ত ১০.৮৮ কোটি টাকার ট্যাক্স

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

১৩ কোম্পানির নগদের চেয়ে বোনাস বেশি, দিতে হবে অতিরিক্ত ১০.৮৮ কোটি টাকার ট্যাক্স

পোস্ট হয়েছে : ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ নভেম্বর ২০২০

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য মোট লভ্যাংশের কমপক্ষে অর্ধেক নগদ দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। অন্যথায় অতিরিক্ত করারোপের শাস্তির আওতায় পড়তে হবে। এই বিধানের পরেও ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় ১৩ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ নগদের থেকে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। যাতে করে কোম্পানিগুলোকে জরিমানাস্বরুপ বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রদান করতে হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের আয়কর পরিপত্র অনুযায়ি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে বোনাস লভ্যাংশের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি বোনাসের পরিমাণ নগদের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে পুরো বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

এই বিধানের পরেও এখন পর্যন্ত ১৩ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

ওই ১৩ কোম্পানির মধ্যে ৪টির পর্ষদ বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে সেটা বোনাসের চেয়ে কম। কিন্তু ৯ কোম্পানির পর্ষদ পুরোটাই বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

আরও পড়ুন……
২৫ টাকা ইস্যু মূল্যের বেঙ্গল উইন্ডসোরের ‘নো’ ডিভিডেন্ড
ওষুধ কোম্পানি হয়েও করোনায় সেন্ট্রাল ফার্মার বড় লোকসান
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স নিয়ে বিএসইসির কঠোর অবস্থান, কি পেল বিনিয়োগকারীরা!
রাইটে বড় অর্থ সংগ্রহের পরেও জিপিএইচ ইস্পাতের নিয়মিত বোনাস শেয়ার ঘোষণা
গোল্ডেন হার্ভেস্টের রাইটে ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহের বছর পার না হতেই ‘নো’ ডিভিডেন্ড
শেয়ারবাজারে উচ্চ মূল্যে শেয়ার ইস্যুর পর থেকেই তসরিফার মুনাফা নিম্নমুখী, এবার বড় লোকসান

বিধান অনুযায়ি, ১৩ কোম্পানিকে বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত করের জরিমানা দিতে হবে। যে অর্থ কোম্পানি থেকেই দেওয়া হবে। এতে করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদেরই ক্ষতি হবে।

নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করায় কোম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে মোট ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিতর্কিত ড্রাগণ সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলস। এ কোম্পানিটিকে ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে সব কোম্পানির ক্ষেত্রেই বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) বোনাস শেয়ারকে নগদে রুপান্তরের মাধ্যমে শাস্তি এড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোম্পানি সচিব বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ‘এ’ ক্যাটাগরি ধরে রাখার জন্য এখন অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতে হবে। কিছু করার নাই। আমরা যদি যে পরিমাণ অতিরিক্ত ট্যাক্স দেব, সেটা নগদ লভ্যাংশ দিতাম, তাতে কাজ হতো না। কারন ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকতে গেলে অতিরিক্ত ট্যাক্সের জরিমানা থেকে রক্ষা পেতে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। আবার অতিরিক্ত ট্যাক্স না দিয়ে ১-২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে চাইলে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নেমে যেতে হবে। কারন ১-২ শতাংশ নগদের সঙ্গে সর্বোচ্চ ওই পরিমাণই বোনাস দিতে পারব। না হলে সেই অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতেই হবে।

নিম্নে নগদের চেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা কোম্পানিগুলোর তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামলভ্যাংশের হারবোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ (কোটি টাকা)জরিমানার পরিমাণ (কোটি টাকা)
ড্রাগণ সোয়েটার১৫% বোনাস২৬.১৯২.৬২
প্যাসিফিক ডেনিমস১০% বোনাস১৬.৫২১.৬৫
নূরানি ডাইং১০% বোনাস১১.১৫১.১২
ইভিন্স টেক্সটাইল৫% বোনাস৮.৭১০.৮৭
কাট্টলি টেক্সটাইল২% নগদ ও ৮% বোনাস৮.৬২০.৮৬
অ্যাডভেন্ট ফার্মা১০% বোনাস৮.৩০০.৮৩
এসোসিয়েটেড অক্সিজেন২% নগদ ও ৮% বোনাস৭.৬০০.৭৬
দেশ গার্মেন্টস৩% বোনাস৭.৩২০.৭৩
ন্যাশনাল ফিড২% নগদ ও ৮% বোনাস৬.৮৫০.৬৯
ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস৫% বোনাস৩.১৯০.৩২
সোনালি পেপার৫% নগদ ও ১০% বোনাস১.৬৬০.১৭
প্রগ্রেসিভ লাইফ১০% বোনাস১.৫১০.১৫
স্টাইলক্রাফট১০% বোনাস১.২৬০.১৩

এ বিষয়ে সোনালি পেপারের সচিব মো. রাশেদুল হোসাইন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখা যাক রেগুলেটরি বডি এ বিষয়ে কোন কোয়ারি করে কিনা। আমরাতো রেগুলেটরি বডির সঙ্গে কথা বলেই ঘোষণা করেছি। এছাড়া কমপক্ষে বোনাস শেয়ারের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার আদেশটি কার্যকর হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত না। বাজেটের ওই বিষয়টি অনুমোদিত কিনা, সেটা জানতে হবে।

বিজনেস আওয়ার/০৮ নভেম্বর, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: