ঢাকা , সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সী পার্ল রিসোর্টের শেয়ার কারসাজিকারীদের ১৮৭ কোটি টাকা জরিমানা

  • পোস্ট হয়েছে : ২৩ মিনিট আগে
  • 3

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সী পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৯টি বেসরকারি সংস্থা এবং ৪ ব্যক্তিকে মোট ১৮৭ কোটি ২২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত ৪ মার্চ বিএসইসির কমিশন সভায় এই জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে চিঠি প্রেরণ করবে বলে জানা গেছে।

জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মো. কালাম হোসেনকে সর্বোচ্চ ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে আবু সাদাত মো. ফয়সালকে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জামরুল হাসান মো. ইকবাল গণি এবং মো. আবু নাঈমকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানা করা ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো- ইউডিসি কনস্ট্রাকশন ৬৮ কোটি ০১ লাখ টাকা, ভেনাস বিল্ডার্স ৬৯ কোটি ০১ লাখ টাকা, শতরং অ্যাগ্রো ফিশারিজ ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা, রিদয় পোল্ট্রি ফার্ম ১০ লক্ষ টাকা, হাসান নার্সারি ২ লক্ষ টাকা, আমানল অ্যাগ্রো ফিশারিজ ৪০ লক্ষ টাকা, সাব্বির স্টোর ১০ লক্ষ টাকা, সরকার অ্যাগ্রো ফার্ম ১ লক্ষ টাকা এবং মুক্তা ফিশারিজ ৪ লক্ষ টাকা।

তদন্তে ১ জুলাই ২০২২ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত ছিল, যে সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ৩ জুলাই ২০২২ তারিখে সি পার্লের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা, যা ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অস্বাভাবিক ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১৭ টাকা ৪০ পয়সায় পৌঁছেছে।

এর আগে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর সময়কালের আরেকটি তদন্তে ডিএসইর এক প্রতিবেদনে ১৩ জন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান (সি পার্লের প্লেসমেন্ট হোল্ডার) আইন লঙ্ঘন এবং শেয়ার লেনদেন কারসাজির জন্য চিহ্নিত করা হয়।

এরপর বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ পরবর্তীতে তাদের সকলকে শুনানির জন্য তলব করে। শুনানির পর চার ব্যক্তিকে সতর্কীকরণ এবং অন্য দুজনকে কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই খালাস দেওয়া হয়।

ওই বিভাগ পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য শেয়ার কারসাজি এবং আইনি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সাত ব্যক্তির মামলা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করে। তবে বিএসইসির৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখের কমিশনের সভায় তাদের কেবল সতর্কীকরণ পত্র জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই সময়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা সমালোচনা করে বলেছেন,কারসাজির স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেবল সতর্কতা জারি করা যথেষ্ট হয়নি।

ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়, ৩১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালের মধ্যে সি পার্লের শেয়ারের দাম ২১২ শতাংশের বেশি পেয়েছে, যা ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৩৭ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে, যা প্রতি শেয়ারের দাম ৯৩ টাকা ৬০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোঃ আমিনুল হক এবং অন্যান্যরা সহ সম্ভাব্য সহযোগীরা ১৯টি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সি পার্লের ৭৯ লাখ ৪৩ হাজার শেয়ার কিনেছেন এবং ৭৫ লাখ ০৫ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ক্লায়েন্টদের মোট রিয়ালাইজড ও আনরিয়ালাইজড প্রপিট ছিল ২৮২ কোটি ০৯ লাখ টাকা। ডিএসই আরও উল্লেখ করেছে, তদন্তের সময়কালে মোঃ আমিনুল হক এবং তার সহযোগীরা একাধিকবার নিজেদের মধ্যে সি পার্লের শেয়ার লেনদেনে জড়িত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭মার্চ / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সী পার্ল রিসোর্টের শেয়ার কারসাজিকারীদের ১৮৭ কোটি টাকা জরিমানা

পোস্ট হয়েছে : ২৩ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সী পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৯টি বেসরকারি সংস্থা এবং ৪ ব্যক্তিকে মোট ১৮৭ কোটি ২২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত ৪ মার্চ বিএসইসির কমিশন সভায় এই জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে চিঠি প্রেরণ করবে বলে জানা গেছে।

জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মো. কালাম হোসেনকে সর্বোচ্চ ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে আবু সাদাত মো. ফয়সালকে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, জামরুল হাসান মো. ইকবাল গণি এবং মো. আবু নাঈমকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানা করা ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো- ইউডিসি কনস্ট্রাকশন ৬৮ কোটি ০১ লাখ টাকা, ভেনাস বিল্ডার্স ৬৯ কোটি ০১ লাখ টাকা, শতরং অ্যাগ্রো ফিশারিজ ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা, রিদয় পোল্ট্রি ফার্ম ১০ লক্ষ টাকা, হাসান নার্সারি ২ লক্ষ টাকা, আমানল অ্যাগ্রো ফিশারিজ ৪০ লক্ষ টাকা, সাব্বির স্টোর ১০ লক্ষ টাকা, সরকার অ্যাগ্রো ফার্ম ১ লক্ষ টাকা এবং মুক্তা ফিশারিজ ৪ লক্ষ টাকা।

তদন্তে ১ জুলাই ২০২২ থেকে ১০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত ছিল, যে সময়কালে কারসাজিকারীরা বিভিন্ন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। ৩ জুলাই ২০২২ তারিখে সি পার্লের শেয়ারের দাম ছিল ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা, যা ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অস্বাভাবিক ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১৭ টাকা ৪০ পয়সায় পৌঁছেছে।

এর আগে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর সময়কালের আরেকটি তদন্তে ডিএসইর এক প্রতিবেদনে ১৩ জন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান (সি পার্লের প্লেসমেন্ট হোল্ডার) আইন লঙ্ঘন এবং শেয়ার লেনদেন কারসাজির জন্য চিহ্নিত করা হয়।

এরপর বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ পরবর্তীতে তাদের সকলকে শুনানির জন্য তলব করে। শুনানির পর চার ব্যক্তিকে সতর্কীকরণ এবং অন্য দুজনকে কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই খালাস দেওয়া হয়।

ওই বিভাগ পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য শেয়ার কারসাজি এবং আইনি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সাত ব্যক্তির মামলা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করে। তবে বিএসইসির৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখের কমিশনের সভায় তাদের কেবল সতর্কীকরণ পত্র জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই সময়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা সমালোচনা করে বলেছেন,কারসাজির স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেবল সতর্কতা জারি করা যথেষ্ট হয়নি।

ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়, ৩১ জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালের মধ্যে সি পার্লের শেয়ারের দাম ২১২ শতাংশের বেশি পেয়েছে, যা ৪৪ টাকা থেকে বেড়ে ১৩৭ টাকা ৬০ পয়সা হয়েছে, যা প্রতি শেয়ারের দাম ৯৩ টাকা ৬০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোঃ আমিনুল হক এবং অন্যান্যরা সহ সম্ভাব্য সহযোগীরা ১৯টি বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সি পার্লের ৭৯ লাখ ৪৩ হাজার শেয়ার কিনেছেন এবং ৭৫ লাখ ০৫ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ক্লায়েন্টদের মোট রিয়ালাইজড ও আনরিয়ালাইজড প্রপিট ছিল ২৮২ কোটি ০৯ লাখ টাকা। ডিএসই আরও উল্লেখ করেছে, তদন্তের সময়কালে মোঃ আমিনুল হক এবং তার সহযোগীরা একাধিকবার নিজেদের মধ্যে সি পার্লের শেয়ার লেনদেনে জড়িত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭মার্চ / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: