ঢাকা , সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় অভিযান জোরদারে রিজার্ভ সৈন্যদের ডাকছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী

  • পোস্ট হয়েছে : ১২ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার ও বিস্তারের লক্ষ্যে হাজার হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকতে শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চাপ সৃষ্টি এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনাই তাদের লক্ষ্য। নতুন পরিকল্পনার আওতায়, গাজায় ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠের সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তবে সমালোচকরা বলছেন, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও শুরু হওয়া এই অভিযান বন্দিমুক্তির নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় অভিযান ফের সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান শুরু হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে হামাসের হাতে ৫৯ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জনের জীবিত বলে বিশ্বাস করা হয়। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পায়নি।

এই সময়ের মধ্যে গাজার বিশাল এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আবারও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে, গাজায় প্রায় দুই মাস ধরে চলছে মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর অবরোধ। খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কথা জানিয়ে বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা বলছে, এই অবরোধ একটি ‘ক্ষুধানীতি’, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। তবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে টানা ডাকা রিজার্ভ সেনাদের ওপর চাপ বাড়ছে। অনেককে এরই মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়বার ডাকা পড়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে, বন্দিদের পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারকে হামাসের সঙ্গে চুক্তি করে বন্দিমুক্তির পথ খুঁজতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। শনিবার ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। তেল আবিবে এক বন্দির মা চলমান যুদ্ধকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেন।

রোববার গাজায় আরও দুজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। একই দিনে, ইয়েমেন হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত আটজন আহত হন এবং দীর্ঘসময়ের জন্য বিমানবন্দরে প্লেন ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। নেতানিয়াহু এর পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫২ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ১৮ মার্চের পর নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৬ জন।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ মে / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গাজায় অভিযান জোরদারে রিজার্ভ সৈন্যদের ডাকছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী

পোস্ট হয়েছে : ১২ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার ও বিস্তারের লক্ষ্যে হাজার হাজার রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকতে শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চাপ সৃষ্টি এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনাই তাদের লক্ষ্য। নতুন পরিকল্পনার আওতায়, গাজায় ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠের সব ধরনের অবকাঠামো ধ্বংস করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তবে সমালোচকরা বলছেন, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও শুরু হওয়া এই অভিযান বন্দিমুক্তির নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় অভিযান ফের সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান শুরু হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে হামাসের হাতে ৫৯ জন জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জনের জীবিত বলে বিশ্বাস করা হয়। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পায়নি।

এই সময়ের মধ্যে গাজার বিশাল এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আবারও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে, গাজায় প্রায় দুই মাস ধরে চলছে মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর অবরোধ। খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির কথা জানিয়ে বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা বলছে, এই অবরোধ একটি ‘ক্ষুধানীতি’, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। তবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে টানা ডাকা রিজার্ভ সেনাদের ওপর চাপ বাড়ছে। অনেককে এরই মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়বার ডাকা পড়েছে বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে, বন্দিদের পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারকে হামাসের সঙ্গে চুক্তি করে বন্দিমুক্তির পথ খুঁজতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। শনিবার ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। তেল আবিবে এক বন্দির মা চলমান যুদ্ধকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে অভিহিত করেন।

রোববার গাজায় আরও দুজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ। একই দিনে, ইয়েমেন হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত আটজন আহত হন এবং দীর্ঘসময়ের জন্য বিমানবন্দরে প্লেন ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। নেতানিয়াহু এর পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫২ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ১৮ মার্চের পর নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৬ জন।

সূত্র: বিবিসি

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ মে / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: