ঢাকা , বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে কমেছে সবজির দাম, চড়া মাছের বাজার

  • পোস্ট হয়েছে : ৫ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজার। প্রতি কেজিতে মাছের দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির দাম।

আজ বুধবার (৭ মে) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহে শসা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬০, বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭০, কাচামরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ ও চিচিঙ্গা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পটল ৪০, গাজর ৫০, করলা ৪০, টমেটো ৩০, লতা ৫০, কাঁচা পেঁপে ৪০, ঢেঁড়স ৪০, জিঙা ৫০, চিচিঙ্গা ৫০, ধুন্দল ৫০, আমঝুরি বেগুন (ছোট বেগুন) ৫০, সজনা ১১০ ও মিস্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৪০ টাকা পিস ও লেবু ৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাছের বাজারে কোনোভাবেই উত্তাপ কমছে না। মাঝেমধ্যে কেজি প্রতি যৎসামান্য দাম কমলেও নিমিষেই হু হু করে বেড়ে যায় মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বেশিরভাগ মাছের দাম। এতে ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। তবুও দাম কমাতে নারাজ বিক্রেতারা।

সিলভার কার্পের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। রুই, কাতল, বাউশ ও মৃগেলের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আকারভেদে অন্যান্য বেশিরভাগ মাছের দামও বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহে বাজারে সিলভার কার্প ১৫০-২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৬০-২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতল ২৫০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৩০ টাকায়। বাউশ (ক্রস, কালো রঙের) ১৯০-৩৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-৩৫০, মৃগেল ১৪০-২০০ কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া ১৮০-২৪০, কৈ ২৩০-৩৫০, পাঙাশ ১৬০-২০০, শিং ২৫০-৫৭০, ট্যাংরা ৪৯০-৭৯০, গুলশা ৩৩০-৯৭০, টাকি ৩১০-৪৮০, পাবদা ৩০০-৩৬০ ও শোল ৫০০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি, গরু-খাসির মাংস ও ডিম স্থিতিশীল অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০, সাদা কক ২৫০, লাল কক ২৫০, গরুর মাংস ৭৫০, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে, মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজি কিনছিলেন আহমদ আলী। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। আহমদ বলেন, গত সপ্তাহে বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়লেও চলতি সপ্তাহে কমেছে। তবে দাম আরও কমানো প্রয়োজন। কারণ বিক্রেতারা ইচ্ছে করে দাম বেশি বাড়িয়ে যৎসামান্য কমায়। বর্তমানে সবজি যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজনের সবজি কিনতে কষ্ট হচ্ছে।

মাছ কিনে বাজার ত্যাগের সময় কথা হয় আবুল কালাম নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকায় সড়ক ভবনে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি করি। ছুটিতে এসে বাজার করতে এসেছি। আমার দুই ছেলে-মেয়ে সিলভার কার্প খেতে পছন্দ করে। তাই এই মাছ তিন কেজি কিনেছি। দাম বাড়ালেও আমাদের মতো ক্রেতাদের কিছুই করার নেই। বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামেই কিনতে বাধ্য সবাই। যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, সে তুলনায় আমাদের বেতন বাড়ছে না। ফলে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা, বাজারে খরচসহ সংসারে আনুষঙ্গিক খরচ করে টাকা জমানো যাচ্ছে না।

সবজি বিক্রেতা ফরিদ মিয়া বলেন, সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সহনীয় পর্যায়ে নেই। কারণ শীত শেষ হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয় সবজি দাম। অনেক সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ফলে এখন দাম কমলেও আগের মতো দামে বিক্রি হচ্ছে না। এতে অনেক ক্রেতা চাহিদার তুলনায় কম কিনছে। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যদিও এই সপ্তাহে পাইকারিভাবে কিছুটা কম দামে কিনতে পারায়, খুচরা পর্যায়ে দাম কিছুটা কমেছে।

একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে মাছ বিক্রেতা মো. তরিকুল্লাহ বলেন, অনেকদিন যাবত মাছ ঊর্ধ্বগতির দিকে। আমরা আড়তদারদের কাছ থেকে মাছ কিনছি। তারা দাম বাড়ানোয় আমাদের কিছুই করার নেই। আমি আড়তদারের কাছ থেকে মাছ কেনার সময় বিক্রির রশিদ দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতাদের এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালানো ঠিক না। অভিযান চালাতে হলে, আড়তে অভিযান চালানো প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, অসাধু বিক্রেতারা সবসময় নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত। তারা মাঝেমধ্যে সিন্ডিকেট করেও বিক্রি করেন। কিন্তু আমরা অভিযান চালানোর পর কিছুদিন ন্যায্য দামে বিক্রি হলেও সুযোগ বুঝে আবারও দাম বাড়াতে চেষ্টা চালানো হয়। বাজারে আমাদের মনিটরিং চলছে। যেকোনো সময় অভিযান চালানো হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ মে / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ময়মনসিংহে কমেছে সবজির দাম, চড়া মাছের বাজার

পোস্ট হয়েছে : ৫ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজার। প্রতি কেজিতে মাছের দাম ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির দাম।

আজ বুধবার (৭ মে) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহে শসা ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এছাড়া বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৬০, বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৭০, কাচামরিচ ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ ও চিচিঙ্গা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পটল ৪০, গাজর ৫০, করলা ৪০, টমেটো ৩০, লতা ৫০, কাঁচা পেঁপে ৪০, ঢেঁড়স ৪০, জিঙা ৫০, চিচিঙ্গা ৫০, ধুন্দল ৫০, আমঝুরি বেগুন (ছোট বেগুন) ৫০, সজনা ১১০ ও মিস্টি লাউ ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৪০ টাকা পিস ও লেবু ৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাছের বাজারে কোনোভাবেই উত্তাপ কমছে না। মাঝেমধ্যে কেজি প্রতি যৎসামান্য দাম কমলেও নিমিষেই হু হু করে বেড়ে যায় মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বেশিরভাগ মাছের দাম। এতে ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। তবুও দাম কমাতে নারাজ বিক্রেতারা।

সিলভার কার্পের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। রুই, কাতল, বাউশ ও মৃগেলের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। আকারভেদে অন্যান্য বেশিরভাগ মাছের দামও বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহে বাজারে সিলভার কার্প ১৫০-২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৬০-২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতল ২৫০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৩০ টাকায়। বাউশ (ক্রস, কালো রঙের) ১৯০-৩৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২০০-৩৫০, মৃগেল ১৪০-২০০ কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেলাপিয়া ১৮০-২৪০, কৈ ২৩০-৩৫০, পাঙাশ ১৬০-২০০, শিং ২৫০-৫৭০, ট্যাংরা ৪৯০-৭৯০, গুলশা ৩৩০-৯৭০, টাকি ৩১০-৪৮০, পাবদা ৩০০-৩৬০ ও শোল ৫০০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি, গরু-খাসির মাংস ও ডিম স্থিতিশীল অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭০, সাদা কক ২৫০, লাল কক ২৫০, গরুর মাংস ৭৫০, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে, মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সবজি কিনছিলেন আহমদ আলী। এসময় কথা হয় তার সঙ্গে। আহমদ বলেন, গত সপ্তাহে বেশিরভাগ সবজির দাম বাড়লেও চলতি সপ্তাহে কমেছে। তবে দাম আরও কমানো প্রয়োজন। কারণ বিক্রেতারা ইচ্ছে করে দাম বেশি বাড়িয়ে যৎসামান্য কমায়। বর্তমানে সবজি যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজনের সবজি কিনতে কষ্ট হচ্ছে।

মাছ কিনে বাজার ত্যাগের সময় কথা হয় আবুল কালাম নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকায় সড়ক ভবনে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি করি। ছুটিতে এসে বাজার করতে এসেছি। আমার দুই ছেলে-মেয়ে সিলভার কার্প খেতে পছন্দ করে। তাই এই মাছ তিন কেজি কিনেছি। দাম বাড়ালেও আমাদের মতো ক্রেতাদের কিছুই করার নেই। বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামেই কিনতে বাধ্য সবাই। যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে, সে তুলনায় আমাদের বেতন বাড়ছে না। ফলে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা, বাজারে খরচসহ সংসারে আনুষঙ্গিক খরচ করে টাকা জমানো যাচ্ছে না।

সবজি বিক্রেতা ফরিদ মিয়া বলেন, সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সহনীয় পর্যায়ে নেই। কারণ শীত শেষ হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয় সবজি দাম। অনেক সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ফলে এখন দাম কমলেও আগের মতো দামে বিক্রি হচ্ছে না। এতে অনেক ক্রেতা চাহিদার তুলনায় কম কিনছে। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যদিও এই সপ্তাহে পাইকারিভাবে কিছুটা কম দামে কিনতে পারায়, খুচরা পর্যায়ে দাম কিছুটা কমেছে।

একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে মাছ বিক্রেতা মো. তরিকুল্লাহ বলেন, অনেকদিন যাবত মাছ ঊর্ধ্বগতির দিকে। আমরা আড়তদারদের কাছ থেকে মাছ কিনছি। তারা দাম বাড়ানোয় আমাদের কিছুই করার নেই। আমি আড়তদারের কাছ থেকে মাছ কেনার সময় বিক্রির রশিদ দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের মতো খুচরা বিক্রেতাদের এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালানো ঠিক না। অভিযান চালাতে হলে, আড়তে অভিযান চালানো প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, অসাধু বিক্রেতারা সবসময় নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত। তারা মাঝেমধ্যে সিন্ডিকেট করেও বিক্রি করেন। কিন্তু আমরা অভিযান চালানোর পর কিছুদিন ন্যায্য দামে বিক্রি হলেও সুযোগ বুঝে আবারও দাম বাড়াতে চেষ্টা চালানো হয়। বাজারে আমাদের মনিটরিং চলছে। যেকোনো সময় অভিযান চালানো হবে।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ মে / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: