ঢাকা , মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩ মাস পর গাজায় প্রবেশ করলো মানবিক সহায়তা

  • পোস্ট হয়েছে : ৪ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: টানা তিনমাসের অবরোধের পর অবশেষে গাজায় প্রবেশ করেছে মানবিক সহায়তা। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় শিশুখাদ্যসহ জরুরি সহায়তা বহনকারী পাঁচটি ট্রাক প্রবেশ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা কোগাট।

গাজায় খাদ্যসংকটের ফলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থেকে ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলো ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চাপের কথা স্বীকার করেছে ইহুদি দেশটি। একারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই গাজা উপত্যকায় ত্রান পাঠাতে ইসরায়েল সম্মতি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য এই সহায়তাকে তিনি ‘জলাশয়ে একটি বিন্দুর মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন।

টম ফ্লেচার বলেন, গাজায় প্রচুর পরিমাণে সহায়তা প্রয়োজন। মার্চ মাসে ইসরায়েল যখন সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ করেছিল, তখন প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতো।

তিনি জানান, জাতিসংঘের আরও চারটি ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। সেগুলো মঙ্গলবার প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে কোগাট।

তিনি আরও বলেন, স্থল পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হওয়ায় এসব জরুরি সহায়তা সামগ্রী লুট বা চুরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সম্পদ দিন দিন কমে আসছে।

গত ২ মার্চ সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অযুহাতে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এরপর টানা তিনমাস ধরে চলে এই অবরোধ। একটু একটু করে ফুরিয়ে আসে গাজার খাবার, ওষুধসহ জরুরি সব জিনিস। ক্ষুধার জ্বালায় ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে বাসিন্দাদের প্রাণ। এমনকি ইসরায়েলের বোমা থেকে ক্ষুধাকে বেশি ভয় পেতে শুরু করেন গাজাবাসী।

বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসতে শুরু করে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় সীমিত পরিসরে সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গাজা থেকে অনাহারে ভোগা মানুষের চিত্র আসতে থাকলে মিত্র দেশগুলো ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযানে সমর্থন দিতে পারবে না-এ কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে ইসরায়েলের এই পাঁচ ট্রাক সহায়তাকে ‘একদম অপ্রতুল’ বলে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের জন্য তারা নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নির্মম হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওই বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে একে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর গণহত্যামূলক হামলার জন্য এক বিশাল পুরস্কার বলে তিরস্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

এদিকে গত সপ্তাহের শেষ থেকে গাজাজুড়ে নতুন করে বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। উপত্যকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিস থেকে জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেনারা। প্রায় ১৯ মাসব্যাপী যুদ্ধে এরই মধ্যে শহরের বড় একটি অংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের দাবি জিম্মি মুক্ত করার লক্ষ্যে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে হামাস বলছে, তারা কেবল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়েই জিম্মিদের ছাড়বে।

তাছাড়া সোমবার গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনাও পুর্নব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ইসরায়েল এমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে যাতে গাজার অনেক বাসিন্দা অন্যান্য দেশে স্বেচ্ছায় অভিবাসবন করবেন। যদিও ফিলিস্তিনিরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ইসরায়েলের ওপর মিত্রদের চাপ

এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এই বিশ্বে আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্ররা জানিয়েছে, তারা এই অনাহারের চিত্র দেখতে পারবে না, এসব বন্ধ না হলে তারা আামদের সমর্থন দিতে পারবে না।

গাজায় ইসরায়েলের এই বর্বর হামলাকে সমর্থন জানিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্র সেখানকার খাদ্যসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বিশ্লেষকদের দাবি, নিজের জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থিদের ক্ষোভ কমাতে এই বিবৃতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। কারণ তারা গাজায় সাহায্য প্রবেশ করতে দিতে রাজি ছিলেন না।

নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় সহায়তা দেওয়া হবে সীমিত পরিসরে এবং এটি তত্ত্বাবধান করবে সেনাবাহিনী। হামাস যেন কোনোভাবে এই সহায়তা না পায় তা নিশ্চিত করা হবে। তবে জাতিসংঘের সংস্থা ও ত্রাণ সংগঠনগুলো এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। এভাবে সাহায্য দিলে তা যথেষ্ট মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। তাছাড়া এই পদক্ষেপে সাহায্যকে একটি কৌশলগত অস্ত্রে পরিণত করা হবে, যা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থি। তারা এতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার হুমকি

ফ্রান্স, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের বিবৃতিকে গাজা যুদ্ধ ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের অন্যতম কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে বলে জানিয়েছে দেশগুলো। পাশাপাশি এই পরিকল্পনাকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে তারা।

তাদের ভাষ্যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে ইসরায়েলকে তারা সবসময় সমর্থন করেছে, তবে গাজায় তারা যা করছে তা অতিরঞ্জিত।

এছাড়া নতুন সাহায্য বিতরণ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে একে মানবিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও মন্তব্য করেছে তারা। গত দুই বছরে কানাডা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে ফ্রান্স এককভাবে কতটুকু পদক্ষেপ নিতে পারবে তা পরিষ্কার নয়, কারণ দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

এদিকে সোমবার পৃথক এক বিবৃতিতে জার্মানি, ইতালি, জাপানসহ ১৮ টি দেশ গাজায় পূর্ণ পরিসরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংগঠনগুলোর সহায়তায় গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২০ মে / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

৩ মাস পর গাজায় প্রবেশ করলো মানবিক সহায়তা

পোস্ট হয়েছে : ৪ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: টানা তিনমাসের অবরোধের পর অবশেষে গাজায় প্রবেশ করেছে মানবিক সহায়তা। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় শিশুখাদ্যসহ জরুরি সহায়তা বহনকারী পাঁচটি ট্রাক প্রবেশ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা কোগাট।

গাজায় খাদ্যসংকটের ফলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থেকে ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলো ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চাপের কথা স্বীকার করেছে ইহুদি দেশটি। একারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই গাজা উপত্যকায় ত্রান পাঠাতে ইসরায়েল সম্মতি দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য এই সহায়তাকে তিনি ‘জলাশয়ে একটি বিন্দুর মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন।

টম ফ্লেচার বলেন, গাজায় প্রচুর পরিমাণে সহায়তা প্রয়োজন। মার্চ মাসে ইসরায়েল যখন সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ করেছিল, তখন প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতো।

তিনি জানান, জাতিসংঘের আরও চারটি ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। সেগুলো মঙ্গলবার প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে কোগাট।

তিনি আরও বলেন, স্থল পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হওয়ায় এসব জরুরি সহায়তা সামগ্রী লুট বা চুরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সম্পদ দিন দিন কমে আসছে।

গত ২ মার্চ সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অযুহাতে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এরপর টানা তিনমাস ধরে চলে এই অবরোধ। একটু একটু করে ফুরিয়ে আসে গাজার খাবার, ওষুধসহ জরুরি সব জিনিস। ক্ষুধার জ্বালায় ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে বাসিন্দাদের প্রাণ। এমনকি ইসরায়েলের বোমা থেকে ক্ষুধাকে বেশি ভয় পেতে শুরু করেন গাজাবাসী।

বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসতে শুরু করে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় সীমিত পরিসরে সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গাজা থেকে অনাহারে ভোগা মানুষের চিত্র আসতে থাকলে মিত্র দেশগুলো ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযানে সমর্থন দিতে পারবে না-এ কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে ইসরায়েলের এই পাঁচ ট্রাক সহায়তাকে ‘একদম অপ্রতুল’ বলে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের জন্য তারা নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নির্মম হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওই বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে একে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর গণহত্যামূলক হামলার জন্য এক বিশাল পুরস্কার বলে তিরস্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

এদিকে গত সপ্তাহের শেষ থেকে গাজাজুড়ে নতুন করে বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। উপত্যকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিস থেকে জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেনারা। প্রায় ১৯ মাসব্যাপী যুদ্ধে এরই মধ্যে শহরের বড় একটি অংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের দাবি জিম্মি মুক্ত করার লক্ষ্যে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে হামাস বলছে, তারা কেবল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়েই জিম্মিদের ছাড়বে।

তাছাড়া সোমবার গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনাও পুর্নব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ইসরায়েল এমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে যাতে গাজার অনেক বাসিন্দা অন্যান্য দেশে স্বেচ্ছায় অভিবাসবন করবেন। যদিও ফিলিস্তিনিরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ইসরায়েলের ওপর মিত্রদের চাপ

এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এই বিশ্বে আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্ররা জানিয়েছে, তারা এই অনাহারের চিত্র দেখতে পারবে না, এসব বন্ধ না হলে তারা আামদের সমর্থন দিতে পারবে না।

গাজায় ইসরায়েলের এই বর্বর হামলাকে সমর্থন জানিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্র সেখানকার খাদ্যসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বিশ্লেষকদের দাবি, নিজের জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থিদের ক্ষোভ কমাতে এই বিবৃতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। কারণ তারা গাজায় সাহায্য প্রবেশ করতে দিতে রাজি ছিলেন না।

নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় সহায়তা দেওয়া হবে সীমিত পরিসরে এবং এটি তত্ত্বাবধান করবে সেনাবাহিনী। হামাস যেন কোনোভাবে এই সহায়তা না পায় তা নিশ্চিত করা হবে। তবে জাতিসংঘের সংস্থা ও ত্রাণ সংগঠনগুলো এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। এভাবে সাহায্য দিলে তা যথেষ্ট মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। তাছাড়া এই পদক্ষেপে সাহায্যকে একটি কৌশলগত অস্ত্রে পরিণত করা হবে, যা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থি। তারা এতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার হুমকি

ফ্রান্স, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের বিবৃতিকে গাজা যুদ্ধ ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের অন্যতম কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে বলে জানিয়েছে দেশগুলো। পাশাপাশি এই পরিকল্পনাকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে তারা।

তাদের ভাষ্যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে ইসরায়েলকে তারা সবসময় সমর্থন করেছে, তবে গাজায় তারা যা করছে তা অতিরঞ্জিত।

এছাড়া নতুন সাহায্য বিতরণ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে একে মানবিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও মন্তব্য করেছে তারা। গত দুই বছরে কানাডা পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে ফ্রান্স এককভাবে কতটুকু পদক্ষেপ নিতে পারবে তা পরিষ্কার নয়, কারণ দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

এদিকে সোমবার পৃথক এক বিবৃতিতে জার্মানি, ইতালি, জাপানসহ ১৮ টি দেশ গাজায় পূর্ণ পরিসরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংগঠনগুলোর সহায়তায় গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ২০ মে / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: