ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিভিডেন্ড ঘোষণার ব্যর্থতায় দুই কোম্পানির দরপতন

  • পোস্ট হয়েছে : ১৫ মিনিট আগে
  • 2

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) এই সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবচেয়ে বেশি দরপতনের শিকার হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) ব্যাংকটির শেয়ারের মূল্য ৬.১৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১০ টাকা ৬০ পয়সায়। এর মূল কারণ হিসেবে জানা গেছে, তৃতীয়বারের মতো নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন বা ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হওয়া।

সূত্র মতে, ইউসিবির বোর্ড সভা ২৯ ও ৩০ এপ্রিল এবং ১৯ মে পুনঃনির্ধারিত হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অনুমতি না পাওয়ায় প্রতিবারই সভার এজেন্ডা স্থগিত হয়। ফলে ব্যাংকটি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারে না, যা শেয়ার মূল্য কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এছাড়াও, একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকও। গত ১৯ মে নির্ধারিত বোর্ড সভায় ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয় ব্যাংকটি। যার ফলে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১.৯২ শতাংশ কমে ৫ টাকা ৩০ পয়সায় এসে দাঁড়ায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত নির্দেশনা কঠোর করেছে। প্রভিশন ঘাটতি, ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ এবং আদালতের স্থগিতাদেশের আওতায় থাকা ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে অনেক ব্যাংকের মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি, এখন থেকে কেবল চলতি বছরের নিট মুনাফা থেকে ডিভিডেন্ড বিতরণ করা যাবে, আগের বছরের জমাকৃত বা ধরে রাখা আয় থেকে নয়—এমন বিধান ব্যাংকগুলোর বিতরণক্ষমতা আরও সংকুচিত করেছে।

একজন ব্যাংক পরিচালকের ভাষ্য, “আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কিছু শর্ত শিথিল করার আবেদন করেছি। কারণ, এমনকি সামান্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা বাজারে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। তবে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। এই বোর্ডে নিয়োগ পান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউসুফ আলী ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ওবায়দুর রহমান।

এছাড়া, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স লিমিটেড ও ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড থেকে পদত্যাগের শর্তে শরীফ জহির ও মো. তানভীর খানকে ইউসিবিতে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরে অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির ২৯ আগস্ট নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।

এই পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর জন্য অর্থনৈতিক ও বাজারে আস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের শর্ত ও নির্দেশনা পরিবর্তনের মাধ্যমে বাজারের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

বিজনেস আওয়ার/ ২১ মে / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ডিভিডেন্ড ঘোষণার ব্যর্থতায় দুই কোম্পানির দরপতন

পোস্ট হয়েছে : ১৫ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) এই সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবচেয়ে বেশি দরপতনের শিকার হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) ব্যাংকটির শেয়ারের মূল্য ৬.১৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১০ টাকা ৬০ পয়সায়। এর মূল কারণ হিসেবে জানা গেছে, তৃতীয়বারের মতো নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন বা ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হওয়া।

সূত্র মতে, ইউসিবির বোর্ড সভা ২৯ ও ৩০ এপ্রিল এবং ১৯ মে পুনঃনির্ধারিত হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অনুমতি না পাওয়ায় প্রতিবারই সভার এজেন্ডা স্থগিত হয়। ফলে ব্যাংকটি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারে না, যা শেয়ার মূল্য কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এছাড়াও, একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকও। গত ১৯ মে নির্ধারিত বোর্ড সভায় ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয় ব্যাংকটি। যার ফলে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১.৯২ শতাংশ কমে ৫ টাকা ৩০ পয়সায় এসে দাঁড়ায়।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত নির্দেশনা কঠোর করেছে। প্রভিশন ঘাটতি, ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ এবং আদালতের স্থগিতাদেশের আওতায় থাকা ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে অনেক ব্যাংকের মুনাফা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি, এখন থেকে কেবল চলতি বছরের নিট মুনাফা থেকে ডিভিডেন্ড বিতরণ করা যাবে, আগের বছরের জমাকৃত বা ধরে রাখা আয় থেকে নয়—এমন বিধান ব্যাংকগুলোর বিতরণক্ষমতা আরও সংকুচিত করেছে।

একজন ব্যাংক পরিচালকের ভাষ্য, “আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কিছু শর্ত শিথিল করার আবেদন করেছি। কারণ, এমনকি সামান্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা বাজারে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। তবে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে। এই বোর্ডে নিয়োগ পান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউসুফ আলী ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ওবায়দুর রহমান।

এছাড়া, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স লিমিটেড ও ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড থেকে পদত্যাগের শর্তে শরীফ জহির ও মো. তানভীর খানকে ইউসিবিতে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসেবে মনোনীত করা হয়। পরে অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির ২৯ আগস্ট নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।

এই পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর জন্য অর্থনৈতিক ও বাজারে আস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের শর্ত ও নির্দেশনা পরিবর্তনের মাধ্যমে বাজারের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

বিজনেস আওয়ার/ ২১ মে / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: