ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা

  • পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে
  • 3

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: তহবিল সংকট এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনার প্রতি আস্থার ঘাটতির কারণে যখন কিছু দেশের ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, তখন ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তিন মাসে দেশের ১০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার বিশাল অঙ্কের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার এক ইতিবাচক দিক তুলে ধরে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ব্যাংকগুলো আর্থিক ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকছে এবং তারা বৃহত্তর তারল্যের নিশ্চয়তা দিতে সক্ষম হচ্ছে। এর ফলে আমানতকারীরা এসব ব্যাংকের প্রতি ঝুঁকছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ি, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ডাচ-বাংলা ব্যাংক রেকর্ড ৭ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এর ফলে মার্চে ব্যাংকটির মোট আমানত ৬০ হাজার ২৪৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংকের আমানত ৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা বেড়ে মার্চে ৭৬ হাজার ৫৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এই প্রান্তিকে ৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে, যার ফলে মার্চে এর আমানত ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিটি ব্যাংক তার আমানতে ২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা যোগ করে মোট আমানত ৫৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকায় নিয়ে গেছে।

এই প্রান্তিকে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে: পূবালী ব্যাংকে ২ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে ২ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে ২ হাজার ৮৩ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংকে ১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা এবং ইস্টার্ন ব্যাংকে ১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের স্থিতিশীলতা, কঠোর পরিপালন এবং শক্তিশালী সম্পদ গুণমানের জন্য পরিচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ব্যাংকিং খাতের আমানত (সরকারি ও আন্তঃব্যাংক ব্যতীত) ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এক বছর আগের ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা থেকে ৮.২১ শতাংশ বেশি।

ব্যাংকাররা মনে করছেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত হওয়া এবং একটি নতুন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার ফলে জনসাধারণের উদ্বেগ অনেকটাই কমে এসেছে, যা আমানত বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের ব্যাংকিং খাত আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে বলে আশা করা যায়।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ জুন / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা

পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: তহবিল সংকট এবং ব্যাংক ব্যবস্থাপনার প্রতি আস্থার ঘাটতির কারণে যখন কিছু দেশের ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, তখন ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তিন মাসে দেশের ১০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার বিশাল অঙ্কের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার এক ইতিবাচক দিক তুলে ধরে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ব্যাংকগুলো আর্থিক ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকছে এবং তারা বৃহত্তর তারল্যের নিশ্চয়তা দিতে সক্ষম হচ্ছে। এর ফলে আমানতকারীরা এসব ব্যাংকের প্রতি ঝুঁকছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ি, জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ডাচ-বাংলা ব্যাংক রেকর্ড ৭ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এর ফলে মার্চে ব্যাংকটির মোট আমানত ৬০ হাজার ২৪৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংকের আমানত ৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা বেড়ে মার্চে ৭৬ হাজার ৫৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এই প্রান্তিকে ৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে, যার ফলে মার্চে এর আমানত ১ লাখ ৬২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিটি ব্যাংক তার আমানতে ২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা যোগ করে মোট আমানত ৫৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকায় নিয়ে গেছে।

এই প্রান্তিকে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে: পূবালী ব্যাংকে ২ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে ২ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে ২ হাজার ৮৩ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংকে ১ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা এবং ইস্টার্ন ব্যাংকে ১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের স্থিতিশীলতা, কঠোর পরিপালন এবং শক্তিশালী সম্পদ গুণমানের জন্য পরিচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ব্যাংকিং খাতের আমানত (সরকারি ও আন্তঃব্যাংক ব্যতীত) ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এক বছর আগের ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা থেকে ৮.২১ শতাংশ বেশি।

ব্যাংকাররা মনে করছেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত হওয়া এবং একটি নতুন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার ফলে জনসাধারণের উদ্বেগ অনেকটাই কমে এসেছে, যা আমানত বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের ব্যাংকিং খাত আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে বলে আশা করা যায়।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ জুন / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: