ঢাকা , বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঋণগ্রস্ত পাঁচ কোম্পানির কার্যক্রম তদন্তে বিএসইসির বিশেষ কমিটি

  • পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রমে বিশেষ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এসব কোম্পানি দীর্ঘকাল ধরে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণে জর্জরিত এবং তাদের কার্যক্রমে বিশেষ নজরদারির অংশ হিসেবে এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

কোম্পানিগুলোতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিএসইসি ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তের নির্দেশ দেওয়া কোম্পানিগুলো হলো: বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, শাইনপুকুর সিরামিকস, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস (আরএসআরএম) ও নিউ লাইন ক্লোথিংস। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ও শাইনপুকুর সিরামিকস বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর কোম্পানি।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন: অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান রনি ও সহকারী পরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা।

সম্প্রতি বিএসইসির ইনসপেকশন, ইনকোয়ারি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কোম্পানিগুলোর কারখানা, অফিস, আর্থিক হিসাব এবং ব্যবসায়িক অন্যান্য কার্যক্রম তদন্ত করবে। এছাড়া, সঠিক নথির মাধ্যমে কমিশনের বিধান অনুসারে আয় ও ব্যয় নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারধারণ, আর্থিক প্রতিবেদন, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম), অভ্যন্তরীণ লেনদেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন এবং এসব বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকলে তা যাচাই করবে গঠিত তদন্ত কমিটি।

বিএসইসির তদন্ত আদেশে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এই ৫টি ইস্যুয়ার কোম্পানির সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধানের অধীনে রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়াদি পরিপালন নিশ্চিত করার জন্য অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যার বড় অংশই এখন মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মা

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৪২৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৬০২ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

বেক্সিমকো

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ১০৯ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।

শাইনপুকুর সিরামিকস

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৭ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস

২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ১৯৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।Stock market advisory services

নিউলাইন ক্লোথিংস

২০২১ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৬৯ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।

বিজনেস আওয়ার/ ১৮ জুন / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ঋণগ্রস্ত পাঁচ কোম্পানির কার্যক্রম তদন্তে বিএসইসির বিশেষ কমিটি

পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রমে বিশেষ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এসব কোম্পানি দীর্ঘকাল ধরে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণে জর্জরিত এবং তাদের কার্যক্রমে বিশেষ নজরদারির অংশ হিসেবে এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

কোম্পানিগুলোতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিএসইসি ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তের নির্দেশ দেওয়া কোম্পানিগুলো হলো: বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, শাইনপুকুর সিরামিকস, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস (আরএসআরএম) ও নিউ লাইন ক্লোথিংস। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ও শাইনপুকুর সিরামিকস বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর কোম্পানি।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন: অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান রনি ও সহকারী পরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা।

সম্প্রতি বিএসইসির ইনসপেকশন, ইনকোয়ারি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কোম্পানিগুলোর কারখানা, অফিস, আর্থিক হিসাব এবং ব্যবসায়িক অন্যান্য কার্যক্রম তদন্ত করবে। এছাড়া, সঠিক নথির মাধ্যমে কমিশনের বিধান অনুসারে আয় ও ব্যয় নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারধারণ, আর্থিক প্রতিবেদন, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম), অভ্যন্তরীণ লেনদেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন এবং এসব বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকলে তা যাচাই করবে গঠিত তদন্ত কমিটি।

বিএসইসির তদন্ত আদেশে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এই ৫টি ইস্যুয়ার কোম্পানির সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধানের অধীনে রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়াদি পরিপালন নিশ্চিত করার জন্য অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যার বড় অংশই এখন মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মা

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৪২৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৬০২ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

বেক্সিমকো

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ১০৯ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।

শাইনপুকুর সিরামিকস

২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৭ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস

২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ১৯৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।Stock market advisory services

নিউলাইন ক্লোথিংস

২০২১ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ২১ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৬৯ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মোট ঋণের পরিমাণ ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।

বিজনেস আওয়ার/ ১৮ জুন / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: