ঢাকা , শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজার মূলধনে যোগ হলো সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

  • পোস্ট হয়েছে : ২ মিনিট আগে
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৪ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়লো। তবে এর আগে ৮ সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকে শেয়ারবাজার।

গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে এক শতাংশের বেশি। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে আড়াই শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দৈনিক গড় লেনদেন বেড়ে পাঁচশ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।

এর আগে গত ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের পর থেকে শেয়ারবাজারে টানা ৮ সপ্তাহ দরপতন হয়। টানা ৮ সপ্তাহের পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এছাড়া প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫৮২ পয়েন্ট। টানা ৮ সপ্তাহ পতনের পর ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। ওই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। ঈদের পর প্রথম সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১৫২ কোটি টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৮২২ কোটি টাকা।

এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। পরের কার্যদিবসেও ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। তবে তৃতীয় কার্যদিবসে দরপতন হয়। অবশ্য পরের দুই কার্যদিবস আবার মূল্যসূচক বাড়ে। এতে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৫৭টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির। এছাড়া ১০৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ।

বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৬১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭৮ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬৫ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে বাড়ে ৪৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ৭১ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৩ শতাংশ। এতে চার সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো ২৫৫ পয়েন্ট।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৬ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৭ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৩২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮৯ শতাংশ।

সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৬২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ৪ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, মিডল্যান্ড ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফাইন ফুডস এবং অলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ জুলাই / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাজার মূলধনে যোগ হলো সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

পোস্ট হয়েছে : ২ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৪ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়লো। তবে এর আগে ৮ সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকে শেয়ারবাজার।

গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে এক শতাংশের বেশি। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে আড়াই শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দৈনিক গড় লেনদেন বেড়ে পাঁচশ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।

এর আগে গত ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের পর থেকে শেয়ারবাজারে টানা ৮ সপ্তাহ দরপতন হয়। টানা ৮ সপ্তাহের পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এছাড়া প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫৮২ পয়েন্ট। টানা ৮ সপ্তাহ পতনের পর ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। ওই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। ঈদের পর প্রথম সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ১৫২ কোটি টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৮২২ কোটি টাকা।

এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। পরের কার্যদিবসেও ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। তবে তৃতীয় কার্যদিবসে দরপতন হয়। অবশ্য পরের দুই কার্যদিবস আবার মূল্যসূচক বাড়ে। এতে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৫৭টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির। এছাড়া ১০৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ।

বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৬১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭৮ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬৫ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে বাড়ে ৪৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ৭১ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৩ শতাংশ। এতে চার সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো ২৫৫ পয়েন্ট।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৬ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭৩ শতাংশ।

এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৭ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৩২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮৯ শতাংশ।

সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৬২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বা ৩৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ৪ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, মিডল্যান্ড ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফাইন ফুডস এবং অলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ জুলাই / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: