ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হুমায়ূন আহমেদকে হারানোর ১৩ বছর

  • পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে
  • 2

বিনোদন ডেস্ক: বাংলা সাহিত্য ও বিনোদন অঙ্গনের ইতিহাসে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই এক অপূরণীয় শূন্যতা নিয়ে এসেছিল। এই দিনেই না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি এবং নন্দিত চলচ্চিত্রকার, নাট্যকার, গীতিকার হুমায়ূন আহমেদ। আজ তার মৃত্যুর ১৩ বছর।

সময়ের ব্যবধান যতই বাড়ছে, পাঠকের হৃদয়ে তার উপস্থিতি যেন ততই গাঢ় হচ্ছে। নাটক, চলচ্চিত্র ও সাহিত্যে একক আধিপত্য গড়ে তোলা এই মহান মানুষটি অসাধারণ লেখনী ও নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে সাধারণ পাঠক-দর্শকের মন জয় করেছিলেন। তার সৃষ্টি আজও নতুন পাঠকের মনে আলোড়ন তোলে, পুরনো পাঠকের মনে জাগায় স্মৃতির তরঙ্গ।

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরই তার হাতে গড়া গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে ভিড় জমান ভক্ত, সাহিত্যপ্রেমী, নাট্যজন ও শিল্পীরা। সকাল থেকে লিচুতলায় জমে ওঠে শ্রদ্ধার সাগর। কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল, এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণসহ থাকে নানা আয়োজন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি বলে জানা গেছে।

হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্মের বিস্তার এতটাই ব্যাপক, মৃত্যুর ১০ বছর পরও একুশে বইমেলায় বিক্রির শীর্ষে থাকে তার বই। ‘নন্দিত নরকে’, ‘মেঘ বৃষ্টি ও ভালবাসা’, ‘তিথির নীল তোয়ালে’ কিংবা ‘দেয়াল’- সব বইয়ের পাতায় পাতায় আজও পাঠক খুঁজে পান জীবনের রস, হাসি, বেদনা ও রহস্য।

তিনি শুধু সাহিত্যিক নন, ছিলেন এক জননন্দিত নির্মাতাও। ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ সিনেমাগুলো আজও দর্শক মনে জীবন্ত। ছোটপর্দার দিকেও তার অবদান অনন্য। ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘আজ রবিবার’ প্রভৃতি নাটক আজও হাসি ও আবেগের মিশেলে দর্শকের মন জুড়িয়ে দেয়।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন আহমেদের বাবা ছিলেন শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা ফয়েজ। ১৯৭৩ সালে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও সাহিত্যচর্চার জন্য পরে পেশাগত দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। নাটক নির্মাণ শুরু করেন ১৯৮৩ সালে, ‘প্রথম প্রহর’ দিয়ে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে।

তার জীবদ্দশায় পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন জনমানুষের প্রাণের মানুষ। আজও সেভাবেই সম্মানিত হন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জুলাই / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

হুমায়ূন আহমেদকে হারানোর ১৩ বছর

পোস্ট হয়েছে : এক ঘন্টা আগে

বিনোদন ডেস্ক: বাংলা সাহিত্য ও বিনোদন অঙ্গনের ইতিহাসে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই এক অপূরণীয় শূন্যতা নিয়ে এসেছিল। এই দিনেই না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি এবং নন্দিত চলচ্চিত্রকার, নাট্যকার, গীতিকার হুমায়ূন আহমেদ। আজ তার মৃত্যুর ১৩ বছর।

সময়ের ব্যবধান যতই বাড়ছে, পাঠকের হৃদয়ে তার উপস্থিতি যেন ততই গাঢ় হচ্ছে। নাটক, চলচ্চিত্র ও সাহিত্যে একক আধিপত্য গড়ে তোলা এই মহান মানুষটি অসাধারণ লেখনী ও নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে সাধারণ পাঠক-দর্শকের মন জয় করেছিলেন। তার সৃষ্টি আজও নতুন পাঠকের মনে আলোড়ন তোলে, পুরনো পাঠকের মনে জাগায় স্মৃতির তরঙ্গ।

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরই তার হাতে গড়া গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে ভিড় জমান ভক্ত, সাহিত্যপ্রেমী, নাট্যজন ও শিল্পীরা। সকাল থেকে লিচুতলায় জমে ওঠে শ্রদ্ধার সাগর। কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল, এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণসহ থাকে নানা আয়োজন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি বলে জানা গেছে।

হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্মের বিস্তার এতটাই ব্যাপক, মৃত্যুর ১০ বছর পরও একুশে বইমেলায় বিক্রির শীর্ষে থাকে তার বই। ‘নন্দিত নরকে’, ‘মেঘ বৃষ্টি ও ভালবাসা’, ‘তিথির নীল তোয়ালে’ কিংবা ‘দেয়াল’- সব বইয়ের পাতায় পাতায় আজও পাঠক খুঁজে পান জীবনের রস, হাসি, বেদনা ও রহস্য।

তিনি শুধু সাহিত্যিক নন, ছিলেন এক জননন্দিত নির্মাতাও। ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ সিনেমাগুলো আজও দর্শক মনে জীবন্ত। ছোটপর্দার দিকেও তার অবদান অনন্য। ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘আজ রবিবার’ প্রভৃতি নাটক আজও হাসি ও আবেগের মিশেলে দর্শকের মন জুড়িয়ে দেয়।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া হুমায়ূন আহমেদের বাবা ছিলেন শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা ফয়েজ। ১৯৭৩ সালে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও সাহিত্যচর্চার জন্য পরে পেশাগত দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। নাটক নির্মাণ শুরু করেন ১৯৮৩ সালে, ‘প্রথম প্রহর’ দিয়ে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে।

তার জীবদ্দশায় পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন জনমানুষের প্রাণের মানুষ। আজও সেভাবেই সম্মানিত হন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/ ১৯ জুলাই / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: