ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকিকে ‘অন্যায় ’ বললো ভারত, ইউরোপ-আমেরিকার কঠোর সমালোচনা

  • পোস্ট হয়েছে : ৩৯ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানির জেরে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানোর হুমকিকে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (৪ আগস্ট) এক কঠোর বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহে যে পরিবর্তন আসে, তা ভারতের আমদানিকে বাধ্যতামূলক করে তোলে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউরোপ যখন [ইউক্রেনে] যুদ্ধ শুরুর পর রুশ জ্বালানির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের এই আমদানিকে উৎসাহ দিয়েছিল বিশ্ব জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অংশ হিসেবে। এখন সেই একই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ আমাদের লক্ষ্যবস্তু করছে।

ট্রাম্প আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। সোমবার ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছেন, আমি ভারতের ওপর শুল্কহার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবো।

বিবৃতিতে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ‘দ্বিচারিতা’ তুলে ধরে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৬৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্যের বাণিজ্য করেছে, ২০২৩ সালে সেবাখাতে আরও ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউরো। শুধু এলএনজি-ই (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) ২০২৪ সালে রেকর্ড ১৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন আমদানি করেছে ইউরোপ, যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

ভারতের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই বাণিজ্যে শুধু জ্বালানি নয়—সার, খনিজ, রাসায়নিক, লোহা ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি এবং পরিবহন সামগ্রীও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেও এখনো রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালেডিয়াম, সার ও বিভিন্ন রাসায়নিক আমদানি করছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর পশ্চিমা দেশগুলো যখন রুশ জ্বালানি বর্জন করে, তখন ভারত মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে শুরু করে। কারণ, রাশিয়া সে সময় তুলনামূলক কম দামে তেল সরবরাহ শুরু করে। সেই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই নয়াদিল্লি এখন বলছে—আমদানি ছিল প্রয়োজন, সুবিধা নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের নতুন এই শুল্ক হুমকি এবং তার জেরে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কেও উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকিকে ‘অন্যায় ’ বললো ভারত, ইউরোপ-আমেরিকার কঠোর সমালোচনা

পোস্ট হয়েছে : ৩৯ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানির জেরে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বাড়ানোর হুমকিকে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (৪ আগস্ট) এক কঠোর বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহে যে পরিবর্তন আসে, তা ভারতের আমদানিকে বাধ্যতামূলক করে তোলে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউরোপ যখন [ইউক্রেনে] যুদ্ধ শুরুর পর রুশ জ্বালানির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের এই আমদানিকে উৎসাহ দিয়েছিল বিশ্ব জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অংশ হিসেবে। এখন সেই একই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ আমাদের লক্ষ্যবস্তু করছে।

ট্রাম্প আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। সোমবার ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছেন, আমি ভারতের ওপর শুল্কহার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবো।

বিবৃতিতে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ‘দ্বিচারিতা’ তুলে ধরে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ৬৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের পণ্যের বাণিজ্য করেছে, ২০২৩ সালে সেবাখাতে আরও ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউরো। শুধু এলএনজি-ই (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) ২০২৪ সালে রেকর্ড ১৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন আমদানি করেছে ইউরোপ, যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

ভারতের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই বাণিজ্যে শুধু জ্বালানি নয়—সার, খনিজ, রাসায়নিক, লোহা ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি এবং পরিবহন সামগ্রীও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেও এখনো রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালেডিয়াম, সার ও বিভিন্ন রাসায়নিক আমদানি করছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর পশ্চিমা দেশগুলো যখন রুশ জ্বালানি বর্জন করে, তখন ভারত মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে শুরু করে। কারণ, রাশিয়া সে সময় তুলনামূলক কম দামে তেল সরবরাহ শুরু করে। সেই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই নয়াদিল্লি এখন বলছে—আমদানি ছিল প্রয়োজন, সুবিধা নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের নতুন এই শুল্ক হুমকি এবং তার জেরে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কেও উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

বিজনেস আওয়ার/ ০৫ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: