ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লোকসানের বৃত্তে জিএসপি ফাইন্যান্স, চতুর্থবারের মতো ‘নো ডিভিডেন্ড’

  • পোস্ট হয়েছে : ৮ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ক্রমাগত লোকসানের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড টানা চতুর্থ বছরের মতো শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। একসময় লাভজনক থাকা এই নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি (এনবিএফআই) এখন গভীর সংকটে পড়েছে।

কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতির কারণে এর শেয়ারের দামও কমেছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারটির দাম ৩ টাকা ১০ পয়সায় নেমে আসে, যা বাজারের সর্বনিম্ন দরের মধ্যে অন্যতম।

মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির নিট লোকসান বেড়ে হয়েছে ১৮৫ কোটি ২২ লাখ টাকা, যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৭৯ পয়সা।

একসময় লাভজনক থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সাল থেকে লোকসান গুনছে, যখন তাদের লোকসান ছিল ১৭ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই লোকসান বেড়ে ১৫২.৮৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, যার প্রধান কারণ ছিল ঋণ ও বিনিয়োগের বিপরীতে অস্বাভাবিক উচ্চ প্রভিশন সংরক্ষণ।

কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২০২৪ সালে ১৮ কোটি ৫ পয়সা থেকে কমে ৪ টাকা ৬০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহও ঋণাত্মক রয়েছে, যা আগের বছরের ১ টাকা ৬৯ পয়সা থেকে কমে ১ টাকা ৬ পয়সায় নেমে এসেছে।

ডিএসই-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, জিএসপি ফাইন্যান্স সর্বশেষ ২০২০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এরপর থেকে আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে তারা আর কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনা হয়।

কোম্পানিটি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং শেয়ারহোল্ডারদের চিহ্নিত করার জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ অক্টোবর।

এদিকে, চলতি বছরের প্রথমার্ধেও জিএসপি ফাইন্যান্সের আর্থিক ক্ষতি অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের লোকসান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই সময়ে কোম্পানির লোকসান হয়েছে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান ৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল যথাক্রমে ৪৯ কোটি ৬৯ লাখ এবং ৩ টাকা ১৬ পয়সা।

কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ঋণাত্মক ২০ পয়সায় নেমে এসেছে, যা এক বছর আগে ৪ টাকা ৬০ পয়সা ছিল।

২০১২ সালে তালিকাভুক্ত জিএসপি ফাইন্যান্সের পরিশোধিত মূলধন ১৫৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত স্পন্সর-পরিচালকদের কাছে ১২.০২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৭.৪৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫০.৫১ শতাংশ শেয়ার ছিল।

বিজনেস আওয়ার/০৪ সেপ্টেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সর্বাধিক পঠিত

লোকসানের বৃত্তে জিএসপি ফাইন্যান্স, চতুর্থবারের মতো ‘নো ডিভিডেন্ড’

পোস্ট হয়েছে : ৮ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ক্রমাগত লোকসানের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড টানা চতুর্থ বছরের মতো শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। একসময় লাভজনক থাকা এই নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি (এনবিএফআই) এখন গভীর সংকটে পড়েছে।

কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতির কারণে এর শেয়ারের দামও কমেছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারটির দাম ৩ টাকা ১০ পয়সায় নেমে আসে, যা বাজারের সর্বনিম্ন দরের মধ্যে অন্যতম।

মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটির নিট লোকসান বেড়ে হয়েছে ১৮৫ কোটি ২২ লাখ টাকা, যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৭৯ পয়সা।

একসময় লাভজনক থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সাল থেকে লোকসান গুনছে, যখন তাদের লোকসান ছিল ১৭ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে এই লোকসান বেড়ে ১৫২.৮৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, যার প্রধান কারণ ছিল ঋণ ও বিনিয়োগের বিপরীতে অস্বাভাবিক উচ্চ প্রভিশন সংরক্ষণ।

কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২০২৪ সালে ১৮ কোটি ৫ পয়সা থেকে কমে ৪ টাকা ৬০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহও ঋণাত্মক রয়েছে, যা আগের বছরের ১ টাকা ৬৯ পয়সা থেকে কমে ১ টাকা ৬ পয়সায় নেমে এসেছে।

ডিএসই-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, জিএসপি ফাইন্যান্স সর্বশেষ ২০২০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। এরপর থেকে আর্থিক অবস্থার অবনতির কারণে তারা আর কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনা হয়।

কোম্পানিটি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং শেয়ারহোল্ডারদের চিহ্নিত করার জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ অক্টোবর।

এদিকে, চলতি বছরের প্রথমার্ধেও জিএসপি ফাইন্যান্সের আর্থিক ক্ষতি অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাদের লোকসান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই সময়ে কোম্পানির লোকসান হয়েছে ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান ৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল যথাক্রমে ৪৯ কোটি ৬৯ লাখ এবং ৩ টাকা ১৬ পয়সা।

কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ঋণাত্মক ২০ পয়সায় নেমে এসেছে, যা এক বছর আগে ৪ টাকা ৬০ পয়সা ছিল।

২০১২ সালে তালিকাভুক্ত জিএসপি ফাইন্যান্সের পরিশোধিত মূলধন ১৫৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত স্পন্সর-পরিচালকদের কাছে ১২.০২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৭.৪৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫০.৫১ শতাংশ শেয়ার ছিল।

বিজনেস আওয়ার/০৪ সেপ্টেম্বর / এ এইচ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: