ঢাকা , সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনি বন্দিদের পর্যাপ্ত খাবারও দিচ্ছে না ইসরায়েল

  • পোস্ট হয়েছে : ১০ মিনিট আগে
  • 1

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছেন, দেশটির সরকার ফিলিস্তিনি বন্দিদের ন্যূনতম খাদ্য সরবরাহ থেকেও বঞ্চিত করেছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, বন্দিদের জন্য উন্নত মানের খাবারসহ নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রায় ২৩ মাসে এই প্রথম ইসরায়েলের আদালত দেশটির সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এভাবে রায় দিলেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে আটক করেছে তারা। গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে আটক হওয়া অনেককে মাসের পর মাস শিবির ও কারাগারে রাখার পর অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে অতিরিক্ত ভিড়, অল্প খাবার, চিকিৎসার অভাবসহ রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

তিন সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মত রায়ে বলেন, সরকারকে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন তিনবেলা খাবার সরবরাহ করতেই হবে, যাতে বন্দিদের ‘মৌলিক বেঁচে থাকার শর্ত’ নিশ্চিত হয়।
দুই-এক ভোটে আদালত আরও স্বীকার করেছেন, সরকারের ইচ্ছাকৃত খাদ্যসংকোচন নীতি বন্দিদের মধ্যে অপুষ্টি ও অনাহার সৃষ্টি করেছে।

রায়ে বলা হয়, এখানে আরামদায়ক জীবন বা বিলাসিতার কথা নয়, বরং আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম বেঁচে থাকার শর্ত পূরণের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে খারাপ শত্রুর পথ অনুসরণ করা উচিত নয়।

মৃত্যুর অভিযোগ

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ৬১ বন্দি ইসরায়েলের হেফাজতে মারা গেছেন। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চে এক কিশোর (১৭) অনাহারে মারা গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

সরকারের প্রতিক্রিয়া

কারাগার তদারকির দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বরাবরের মতো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বন্দিদের শুধু ‘আইনে নির্ধারিত সর্বনিম্ন শর্তেই’ রাখা হবে। আদালতের রায়কে তিনি ‘ইসরায়েলের জন্য লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিক্রিয়া

রায়টি আদালতে আবেদন করা মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল (এসিআরআই) ও গিশার বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এএসিআরআই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, ইসরায়েলের কারাগারগুলোকে সরকার ‘নির্যাতন শিবিরে’ পরিণত করেছে।

সংগঠনটির ভাষায়, কোনো রাষ্ট্রের উচিত নয় মানুষকে অনাহারে রাখা। মানুষ মানুষকে না খাইয়ে রাখবে না—সে যা-ই করে থাকুক না কেন।

সূত্র: এপি, ইউএনবি

বিজনেস আওয়ার/ ০৮ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সর্বাধিক পঠিত

ফিলিস্তিনি বন্দিদের পর্যাপ্ত খাবারও দিচ্ছে না ইসরায়েল

পোস্ট হয়েছে : ১০ মিনিট আগে

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছেন, দেশটির সরকার ফিলিস্তিনি বন্দিদের ন্যূনতম খাদ্য সরবরাহ থেকেও বঞ্চিত করেছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, বন্দিদের জন্য উন্নত মানের খাবারসহ নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রায় ২৩ মাসে এই প্রথম ইসরায়েলের আদালত দেশটির সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এভাবে রায় দিলেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে ফিলিস্তিনিদের গণহারে আটক করেছে তারা। গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে আটক হওয়া অনেককে মাসের পর মাস শিবির ও কারাগারে রাখার পর অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে অতিরিক্ত ভিড়, অল্প খাবার, চিকিৎসার অভাবসহ রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

তিন সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মত রায়ে বলেন, সরকারকে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন তিনবেলা খাবার সরবরাহ করতেই হবে, যাতে বন্দিদের ‘মৌলিক বেঁচে থাকার শর্ত’ নিশ্চিত হয়।
দুই-এক ভোটে আদালত আরও স্বীকার করেছেন, সরকারের ইচ্ছাকৃত খাদ্যসংকোচন নীতি বন্দিদের মধ্যে অপুষ্টি ও অনাহার সৃষ্টি করেছে।

রায়ে বলা হয়, এখানে আরামদায়ক জীবন বা বিলাসিতার কথা নয়, বরং আইনে নির্ধারিত ন্যূনতম বেঁচে থাকার শর্ত পূরণের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে খারাপ শত্রুর পথ অনুসরণ করা উচিত নয়।

মৃত্যুর অভিযোগ

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ৬১ বন্দি ইসরায়েলের হেফাজতে মারা গেছেন। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চে এক কিশোর (১৭) অনাহারে মারা গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

সরকারের প্রতিক্রিয়া

কারাগার তদারকির দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বরাবরের মতো কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বন্দিদের শুধু ‘আইনে নির্ধারিত সর্বনিম্ন শর্তেই’ রাখা হবে। আদালতের রায়কে তিনি ‘ইসরায়েলের জন্য লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিক্রিয়া

রায়টি আদালতে আবেদন করা মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল (এসিআরআই) ও গিশার বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এএসিআরআই সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, ইসরায়েলের কারাগারগুলোকে সরকার ‘নির্যাতন শিবিরে’ পরিণত করেছে।

সংগঠনটির ভাষায়, কোনো রাষ্ট্রের উচিত নয় মানুষকে অনাহারে রাখা। মানুষ মানুষকে না খাইয়ে রাখবে না—সে যা-ই করে থাকুক না কেন।

সূত্র: এপি, ইউএনবি

বিজনেস আওয়ার/ ০৮ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: