বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম সম্পর্ক স্বামী স্ত্রী। এ সম্পর্কের চেয়ে মিষ্টি ও মধুর কোনো সম্পর্ক নেই। এ সম্পর্ক মধুর হলেই একটি সংসার ও একটি পরিবার সব দিক থেকে সুখী হয়ে উঠে। আর এ সম্পর্কে মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হলেই যতো অশান্তি। দু’জন দুজনার প্রতি একান্ত ভালোবাসাই এ সম্পর্ককে মধুর ও মজবুত করতে পারে।
একে অপরকে প্রাধান্য দেয়া ও ছাড়ের মানসিকতা থাকলেই এ সম্পর্কগুলো খুব মধুময় হয়। এ ক্ষেত্রে দু’জন দু’জনকেই গুরুত্ব দিতে হবে। স্বামীর ওপর যেমন দায়িত্ব স্ত্রীর সব অধিকার আদায় করা তেমনি স্ত্রীর ওপরও দায়িত্ব স্বামীর পরিপূর্ণ আনুগত্য করা। স্বামীর আনুগত্য না করলে পরকালের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা স্বামীর ওপর স্ত্রীর কতিপয় অধিকার সাব্যস্ত করেছেন। বিশেষত আমাদের বোনদের জন্য স্মরণীয় বিষয় হলো-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নারীদের সম্বোধন করে বলেন, তোমাদের জাহান্নামে বেশি যাওয়ার কারণ এ দু’টি। আল্লাহ তায়ালার দ্বীনের রহস্যের ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বেশি আর কে অবগত?
স্বীয় উম্মতের প্রতিটি সদস্যের বিষয়ে আর কে জানবে? রোগ নির্ণয়কারী তারচে’ বেশি কেউ হতে পারে না। রোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থাপত্র প্রদানে তার বিকল্প নেই। নারীদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য তিনি দু’টি ফরমূলা বলে দিয়েছেন। ১. অভিশাপ ও অপবাদ আরোপ করো না। ২. স্বামীর অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো না।
একটি হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের সম্বোধন করে বলেন-
إني أريتكن أكثر أهل النار
আমাকে দেখানো হয়েছে তোমরা জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা। যার দ্বারা প্রতীয়মান হয়-জাহান্নামে পুরুষদের চেয়ে নারীদের সংখ্যা বেশি হবে। এর অর্থ এটা নয়, নারী-নারী হওয়ার কারণে জাহান্নামের উপযুক্ত। বরং অন্য হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কারণ বর্ণনা করেছেন। একবার নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের সম্বোধন করে বলেন, জাহান্নামীদের অধিকাংশই নারী দেখেছি। নারীরা নিবেদন করলেন-
بم يا رسول الله؟
জাহান্নামে নারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ কী? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৌলিকভাবে এর দু’টি কারণ বর্ণনা করেছেন। তা হলো-
تكثرن اللعن و تكفرن العشير
নারীদের মধ্যে দু’টি মন্দ গুণ আছে যা তাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। যে নারী এ দু’টি বিষয় থেকে বেচে যাবে, সে দোযখ থেকে বেচে যাবে। ১ ম কারণ, تكثرن اللعن তোমরা অভিশাপ দিয়ে থাক বেশি। অর্থাৎ একে অপরকে অভিশাপ দেয়ার রেওয়াজ তোমাদের মাঝে বেশি।
সাধারণ সাধারণ কথায় বদ দোয়া দেয়া, অভিশাপ দেয়া, কাউকে ভালো-মন্দ বলা, এমন অপবাদ দেয়া যাতে শরীরে আগুন লেগে যায়, হৃদয় আহত হয়, অন্যকে অস্থির করে দেয়। এ সব কিছুতেই নারীরা বেশি জড়িত।
একটি হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন- تكفرن العشير তোমরা স্বামীর অকৃতজ্ঞতা বেশি কর। সরল সোজা ভদ্র স্বামী তার জান, মাল ও শ্রম ব্যয় করে তোমাদের সন্তুষ্ট করতে চায়, তবে তোমাদের মুখে কৃতজ্ঞতার বাণী প্রায়ই আসে না। বরং মুখ দিয়ে অকৃতজ্ঞতার শব্দই বের হয়। এ দুটি কারণে তোমরা জাহান্নামে বেশি যাবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।
অকৃতজ্ঞতা তো সর্বাবস্থায়ই মন্দ-নিন্দনীয়। আল্লাহ তায়ালার কাছে খুবই অপছন্দনীয়। তাঁর অপছন্দনীয় হওয়ার বিষয়টি অনুমান করা যায় এভাবে-আরবি ভাষা ও শরীয়তের পরিভাষায় অকৃতজ্ঞতার নাম হলো কুফুর। কারণ কুফুর-ই কাফের-এর উৎপত্তিস্থল। যার মূল অর্থ অকৃতজ্ঞতা। কাফেরকে ‘কাফের’ এ জন্য বলা হয়, সে আল্লাহ তায়ালার অকৃতজ্ঞ হয়।
আল্লাহ তায়ালা তাকে এত নেয়ামত দিয়েছেন, তাকে সৃষ্টি করেছেন, প্রতিপালন করেছেন, তার উপর নেয়ামতের বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন, আর সে অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে শরীক সাব্যস্ত করেছে। অথবা এরূপ অনুগ্রহকারী সত্তাকে অস্বীকার করে। এ কারণে অকৃতজ্ঞতার পরিণতি এতটা মারাত্মক।
বিজনেস আওয়ার/১১ নভেম্বর, ২০২০/এ