ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীমা ব্রোকার চালুর খসড়া বিধিমালা প্রকাশ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০২০
  • 53

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকার দেশের নন-লাইফ বীমা ব্যবসার প্রসারে ‘বীমা ব্রোকার’ লাইসেন্স প্রদান বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । বুধবার (১১ নভেম্বর) আইডিআরএ-এর ওয়েবসাইটে খসড়া বিধিমালাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

খসড়া বিধিমালা থেকে জানা গেছে, বীমা ব্রোকার লাইসেন্স পেতে হলে ২ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত এবং ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও যেকোন তফিসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত আকারে প্রারম্ভিক মূলধনের ২০ শতাংশ জমা, নির্ধারিত আচরণবিধি প্রতিপালন এবং পেশাগত ক্ষতিপূরণ বীমা গ্রহণের শর্ত রাখা হয়েছে। শর্তাদি প্রতিপালনে ৩ বছরের জন্য লাইসেন্স ইস্যু করা হবে এবং ৩ বছর পর আবার নবায়ন করতে হবে।

খসড়া বিধিমালা অনুসারে, একজন বীমা ব্রোকারের কার্যাদির মধ্যে রয়েছে- বীমাকারীর পক্ষে বীমা এজেন্ট নিয়োগ করে বা বীমাকারীর জন্য নন-লাইফ বীমা ব্যবসা গ্রহণ করা; বীমাকারী বা পুনর্বীমাকারী অথবা উভয়ের জন্য সরাসরি নন-লাইফ বীমা ব্যবসা সংগ্রহ করা; বীমাকারী বা পুনর্বীমাকারী অথবা উভয়ের জন্য প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কার্য সম্পাদন করা, যা অন্তর্ভূক্ত করবে কিন্তু সীমিত করবে না।

এ ছাড়াও যথোপযুক্ত বীমা আবরণ ও শর্তাদির ওপর উপদেশ প্রদান; দাবির দরকষাকষিত সহায়তা করা; দাবির যথাযথ খতিয়ান রক্ষণাবেক্ষণ করা; পুনর্বীমাকারী ও অন্যান্যদের সহায়তা করতে বীমাকারীর ব্যবসায়ের বিশদ বিবরণসহ খতিয়ান রক্ষণাবেক্ষণ; পুনর্বীমার জন্য পরামর্শ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সেবা প্রদান করা এবং গ্রাহকের (বীমা গ্রহীতা বা বীমাকারী) পক্ষে পুনর্বীমাকারীর সাথে দরকষাকষি করা।

কোন বীমা ব্রোকারকে পারিশ্রমিক (রয়ালটি বা লাইসেন্স ফি বা প্রশাসনিক চার্জ বা ওইরূপ ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত করে) হিসেবে নির্ধারিত হারের অধিক প্রদান করা যাবে না বা পরিশোধ করার চুক্তি করা যাবে না- সরাসরি নন-লাইফ বীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিত প্রিমিয়ামের ১২.৫০ শতাংশ; বীমা এজেন্টের মাধ্যমে নন-লাইফ ব্যবসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিত প্রিমিয়ামের ১৫ শতাংশ, যা থেকে এজেন্টগণকে পরিশোধিত কমিশন বাদ দিতে হবে; অন্য যেকোন সেবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিন প্রিমিয়ামের ৫ শতাংশ।

লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করার আবেদন দাখিলের বীমা ব্রোকারকে নিম্নবর্ণিত ফি পরিশোধ করতে হবে- লাইসেন্স ইস্যুর জন্য ৫০ হাজার টাকা; লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা; প্রতিদিন বিলম্বের জন্য অতিরিক্ত ফির’র পরিমাণ ৫ হাজার টাকা এবং প্রতিলিপি লাইসেন্স ইস্যুর জন্য ৫ হাজার টাকা। এসব ফি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুকুলে ক্রসড চেক, ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারযোগে পরিশোধ করতে হবে।

খসড়া বিধিমালার বিধি ৩ বলা হয়েছে, বীমা ব্রোকারের লাইসেন্স অবশ্যই কেবলমাত্র ওইসব কোম্পানির প্রতি ইস্যু করা হবে যারা অন্যুন নিম্নলিখিত শর্তাদি প্রতিপালন করে- বিধি ৯ এ নির্ধারিত পরিশোধিত মূলধন; বিধি ১০ এ নির্ধারিত সংবিধিবদ্ধ জমা; বিধি ১৮ অনুযায়ী নির্ধারিত আচরণবিধি; বিধি ২০ অনুযায়ী নির্ধারিত পেশাগত ক্ষতিপূরণ বীমা এবং বিধি ২২ অনুযায়ী নির্ধারিত ফি পরিশোধ।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, বীমা আইন ২০১০ এর ১২৬ ধারা মোতাবেক নন-লাইফ বীমাকারীগণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত বীমা ব্রোকারের লাইসেন্সধারী কোম্পানিকে বীমা ব্রোকার হিসেবে নিযুক্ত করতে পারবে। বীমা ব্রোকার নন-লাইফ বীমা ব্যবসার প্রসারে এবং দেশের নন-লাইফ বীমাখাতে পেশাদারিত্ব সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।

বিজনেস আওয়ার/১২ নভেম্বর, ২০২০/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বীমা ব্রোকার চালুর খসড়া বিধিমালা প্রকাশ

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : সরকার দেশের নন-লাইফ বীমা ব্যবসার প্রসারে ‘বীমা ব্রোকার’ লাইসেন্স প্রদান বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । বুধবার (১১ নভেম্বর) আইডিআরএ-এর ওয়েবসাইটে খসড়া বিধিমালাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

খসড়া বিধিমালা থেকে জানা গেছে, বীমা ব্রোকার লাইসেন্স পেতে হলে ২ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত এবং ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও যেকোন তফিসিলি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত আকারে প্রারম্ভিক মূলধনের ২০ শতাংশ জমা, নির্ধারিত আচরণবিধি প্রতিপালন এবং পেশাগত ক্ষতিপূরণ বীমা গ্রহণের শর্ত রাখা হয়েছে। শর্তাদি প্রতিপালনে ৩ বছরের জন্য লাইসেন্স ইস্যু করা হবে এবং ৩ বছর পর আবার নবায়ন করতে হবে।

খসড়া বিধিমালা অনুসারে, একজন বীমা ব্রোকারের কার্যাদির মধ্যে রয়েছে- বীমাকারীর পক্ষে বীমা এজেন্ট নিয়োগ করে বা বীমাকারীর জন্য নন-লাইফ বীমা ব্যবসা গ্রহণ করা; বীমাকারী বা পুনর্বীমাকারী অথবা উভয়ের জন্য সরাসরি নন-লাইফ বীমা ব্যবসা সংগ্রহ করা; বীমাকারী বা পুনর্বীমাকারী অথবা উভয়ের জন্য প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কার্য সম্পাদন করা, যা অন্তর্ভূক্ত করবে কিন্তু সীমিত করবে না।

এ ছাড়াও যথোপযুক্ত বীমা আবরণ ও শর্তাদির ওপর উপদেশ প্রদান; দাবির দরকষাকষিত সহায়তা করা; দাবির যথাযথ খতিয়ান রক্ষণাবেক্ষণ করা; পুনর্বীমাকারী ও অন্যান্যদের সহায়তা করতে বীমাকারীর ব্যবসায়ের বিশদ বিবরণসহ খতিয়ান রক্ষণাবেক্ষণ; পুনর্বীমার জন্য পরামর্শ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সেবা প্রদান করা এবং গ্রাহকের (বীমা গ্রহীতা বা বীমাকারী) পক্ষে পুনর্বীমাকারীর সাথে দরকষাকষি করা।

কোন বীমা ব্রোকারকে পারিশ্রমিক (রয়ালটি বা লাইসেন্স ফি বা প্রশাসনিক চার্জ বা ওইরূপ ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত করে) হিসেবে নির্ধারিত হারের অধিক প্রদান করা যাবে না বা পরিশোধ করার চুক্তি করা যাবে না- সরাসরি নন-লাইফ বীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিত প্রিমিয়ামের ১২.৫০ শতাংশ; বীমা এজেন্টের মাধ্যমে নন-লাইফ ব্যবসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিত প্রিমিয়ামের ১৫ শতাংশ, যা থেকে এজেন্টগণকে পরিশোধিত কমিশন বাদ দিতে হবে; অন্য যেকোন সেবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তির অধীন অর্জিন প্রিমিয়ামের ৫ শতাংশ।

লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করার আবেদন দাখিলের বীমা ব্রোকারকে নিম্নবর্ণিত ফি পরিশোধ করতে হবে- লাইসেন্স ইস্যুর জন্য ৫০ হাজার টাকা; লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা; প্রতিদিন বিলম্বের জন্য অতিরিক্ত ফির’র পরিমাণ ৫ হাজার টাকা এবং প্রতিলিপি লাইসেন্স ইস্যুর জন্য ৫ হাজার টাকা। এসব ফি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুকুলে ক্রসড চেক, ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারযোগে পরিশোধ করতে হবে।

খসড়া বিধিমালার বিধি ৩ বলা হয়েছে, বীমা ব্রোকারের লাইসেন্স অবশ্যই কেবলমাত্র ওইসব কোম্পানির প্রতি ইস্যু করা হবে যারা অন্যুন নিম্নলিখিত শর্তাদি প্রতিপালন করে- বিধি ৯ এ নির্ধারিত পরিশোধিত মূলধন; বিধি ১০ এ নির্ধারিত সংবিধিবদ্ধ জমা; বিধি ১৮ অনুযায়ী নির্ধারিত আচরণবিধি; বিধি ২০ অনুযায়ী নির্ধারিত পেশাগত ক্ষতিপূরণ বীমা এবং বিধি ২২ অনুযায়ী নির্ধারিত ফি পরিশোধ।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, বীমা আইন ২০১০ এর ১২৬ ধারা মোতাবেক নন-লাইফ বীমাকারীগণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত বীমা ব্রোকারের লাইসেন্সধারী কোম্পানিকে বীমা ব্রোকার হিসেবে নিযুক্ত করতে পারবে। বীমা ব্রোকার নন-লাইফ বীমা ব্যবসার প্রসারে এবং দেশের নন-লাইফ বীমাখাতে পেশাদারিত্ব সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।

বিজনেস আওয়ার/১২ নভেম্বর, ২০২০/এস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: