বিজনেস আওয়ার ডেস্ক : রাসূল (সা.) হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব, তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম করো না’। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)
রাসূল (সা.) হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব, তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম করো না’। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)
মানুষের কিছু অভ্যাস ধ্বংস ডেকে আনে। যে সমাজের মানুষের মধ্যে এই অভ্যাসগুলো দেখা দেয়, সেই সমাজে নেমে আসে দুর্যোগ, বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি।
বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘চার ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা অপছন্দ করেন অধিক হারে অত্যাচারী শাসক, শপথকারী বিক্রেতা, অহংকারী দরিদ্র বৃদ্ধ এবং ব্যভিচারী’। (নাসায়ি, হাদিস : ২৫৭৬)
অত্যাচারী শাসক:
অন্যের প্রতি জুলুম ও অত্যাচার মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে। এটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শুধু ফাটলই সৃষ্টি করে। গৃহকর্তা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান, কারো জন্যই এটি হালাল নয়।
রাসূল (সা.) হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব, তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম করো না’। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)
অধিক হারে শপথকারী বিক্রেতা:
উপরোক্ত হাদিসে অধিক হারে শপথকারী বিক্রেতা বলে বোঝানো হয়েছে, যে মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রি করে থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১১)
যারা সৎ ব্যবসায়ী মহান আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তাদের সর্বোচ্চ স্থান দান করবেন। কিন্তু যারা ব্যবসা-বাণিজ্যে অসৎ, তাদের জন্য অপেক্ষা রয়েছে কঠিন শাস্তি।
একদিন রাসূল (সা.) লোকদের কেনাবেচায় জড়িত দেখে বলেন, ‘হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়’! তারা রাসূল (সা.) এর ডাকে সাড়া দিল এবং নিজেদের ঘাড় ও চোখ উঠিয়ে তার দিকে তাকাল। তখন তিনি বললেন, কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে ওঠানো হবে; কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা রক্ষা করে, তারা এর ব্যতিক্রম’। (তিরমিজি, হাদিস : ১২১০)
কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে মানুষকে জিম্মি করে রাখে। তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য গুদামজাত করে দেশজুড়ে হাহাকার সৃষ্টি করে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘গুদামজাতকারী ব্যক্তি পাপাচারী’। (মুসলিম, হাদিস : ৪০১৪)
অহংকারী দরিদ্র:
অহংকার হচ্ছে সব পাপের মূল। একে আরবিতে বলা হয় উম্মুল আমরাজ বা ‘সব রোগের জননী’। বরং বলা যায়, এ জগতের প্রথম পাপই হচ্ছে অহংকার। অহংকার করে শয়তান অভিশপ্ত হয়েছিল। ধনী-গরিব, ছোট-বড়, উঁচু-নিচু সবার জন্যই অহংকার করা মারাত্মক অপরাধ।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মাবুদ এক। সুতরাং যারা আখিরাতে ঈমান রাখে না, তাদের অন্তরে অবিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে গেছে এবং তারা অহংকারে লিপ্ত। স্পষ্ট কথা, তারা যা গোপনে করে তা আল্লাহ জানেন এবং যা প্রকাশ্যে করে তাও। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীকে পছন্দ করেন না’। (সূরা : নাহ্ল, আয়াত : ২২-২৩)
কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা আশ্চর্যের বিষয়। কেননা গরিব মানুষের মধ্যে অহংকারবোধ জাগ্রত হওয়ার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। এ কারণে কোনো গরিব মানুষ যদি অহংকার করে বসে, তা মারাত্মক অপরাধ।
বৃদ্ধ ব্যভিচারী:
বৃদ্ধাবস্থায় ব্যভিচার অত্যন্ত মারাত্মক অপরাধ। এর মানে এই নয় যে যৌবনকালে ব্যভিচার দোষণীয় নয়। বরং ব্যভিচার সর্বাবস্থায়ই মারাত্মক অপরাধ। সাধারণত বৃদ্ধরা ব্যভিচারে লিপ্ত হয় পরকীয়ার জেরে। তা গড়ে ওঠে সাধারণত প্রতিবেশী, পরিচিতজন কিংবা পুরনো বন্ধুর সঙ্গে। রাসূল (সা.) এ বিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন।
একদিন রাসূল (সা.) তার সাহাবিদের ব্যভিচার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তারা বলেন, তা হারাম। আল্লাহ ও তার রাসূল তা হারাম করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির ১০ জন নারীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া জঘন্য অপরাধ’। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১০২)
বিজনেস আওয়ার/১৮ নভেম্বর, ২০২০/এ