দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত পতন এবং করোনা ভাইরাস আতংকে বড় বড় পতন থেকে পুঁজিবাজারে বাঁচাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার ও ইউনিট দরে ফ্লোর প্রাইসের (যে দরের নিচে নামতে পারবে না) সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত ১৯ মার্চ বিএসইসির ওই নির্দেশনা পর বড় পতন থেকে রক্ষা পেয়েছে পুঁজিবাজার। একই সাথে ওই নির্দশনার সুফলের কারণে কিছুটা হলেও উত্থানে সপ্তাহ পার করেছে পুঁজিবাজার।
বিএসইসির নির্দেশনার ফলে বিদায়ী সপ্তাহ চার কার্যদিবসের মধ্যে পুঁজিবাজারে দুই কার্যদিবস উত্থান হয়েছে। বাকি দুই কার্যদিবস পতন হয়েছে। বাড়া-কমার হিসাব শেষে দেখা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে সামান্য উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। এসময়ে সব সূচক বেড়েছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কমেছে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, বিদায়ী সপ্তাহে ৪ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৮৮৭ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ২৫ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ৩৭০ কোটি ৬৭ লাখ ৩৪ হাজার ৮৯৩ টাকা বা ২৯.৪৫ শতাংশ কম হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৫৮ কোটি ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৮ টাকার।
ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২২১ কোটি ৯৫ লাখ ৩৭ হাজার ৭৫৬ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৩১৪ কোটি ৬২ লাখ ২১ হাজার ৪৭৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৯২ কোটি ৬৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭২৩ টাকা কম হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৩ পয়েন্ট বা ০.৮৪ শতাংশ বেড়ি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বা ০.১৪ শতাংশ এবং সিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বা ০.৩৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২১ এবং ১৩৩১ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪০টি বা ৩৯ শতাংশের, কমেছে ১৯৬টির বা ৫৫ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির বা ৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন ১ হাজার ৫০১ কোটি ৮৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা বা ০.৪৮ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১২ হাজার ২৩৫ কোটি ৩৭ লাখ ১০ হাজার টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বাজার মূলধন ছিল ১০ হাজার ৬২৯ কোটি ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকায়।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২০৫ কোটি ৪৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬২ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৬ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১৫১ কোটি ৭০ লাখ ৫১ হাজার ৮০৬ টাকা বা ২৮২ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৪ পয়েন্ট বা ১.৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসসিএক্স ১১৪ পয়েন্ট বা ১.৬৮ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ১০৪ পয়েন্ট বা ১.০৬ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বা ১.৯৬ শতাংশ এবং সিএসআই ৬ পয়েন্ট বা ০.৮৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে, ৯ হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে, ৮১৫ পয়েন্টে এবং ৭২৯ পয়েন্টে।
এ সময়ে সিএসইতে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৩টির বা ৩১ শতাংশের দর বেড়েছে এবং ১৮৪টির বা ৬৯ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। কোনো কোম্পানির শেয়ার দর এ সময়ে কমেনি।