বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, বর্তমানে সমস্যা মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রধান কাজ হবে মানুষের কাছে ছুটে যাওয়া, মানুষের পাশে থাকা। এদেশে সুশাসন কায়েম করা, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান এবং শুদ্ধি অভিযানের যে ব্রত আমাদের নেত্রী হাতে নিয়েছে এই শুদ্ধি অভিযান সফল করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করবে।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে জামালপুর মাদারগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস বলেন, আমরা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটিতে শিক্ষিত যুব সমাজের অন্তভুক্তি ও পেশাজীবী সমাজকে সুযোগ প্রদান করেছি। যারা পলিটিক্স বিমুখ ছিল তাদেরকে আমরা ইনক্লুড করার চেষ্টা করেছি। সবাইকে আমরা পদ দিতে পারি নাই। এইজন্য হয়তবা অনেকে মনক্ষুণ্ণ আছেন। মনক্ষুণ্ণ থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পদপদবী সর্বস্ব রাজনীতিতে আমি আমরা এবং আমাদের নেত্রীও বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, কি পেলাম কি পেলাম সেটা বলার দরকার নেই, কি দিলাম সেটা চিন্তা করেন।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুবলীগ ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বপ্ন বাস্তবায়নে। বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বপ্ন আর জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমার কাছে সমার্থক এবং আপনাদের অনেকের কাছেও। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি। সেই আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রায় সম্পন্ন করেছেন। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে।
যুবলীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেষ ফজলে শামস বলেন, এখন তো যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ নাই। গণবাহিনী নাই, জাসদও আমাদের এলায়েন্সে। তাহলে এখন আমাদের ভূমিকাটা কি? এখন আমাদের অন্যতম ভূমিকা এই যে, বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বপ্ন মধ্যম আয়ের দেশ এই স্বপ্নকে যেন কেউ আমাদের নসাৎ করতে না পারে। সেই স্বপ্নকে যেন কোন বাহিনী কোন কুচক্রী মহল নসাৎ করতে না করে। এই দায়িত্ব কিন্তু যুবলীগের। সেই কারণেই আমরা এই যুবলীগ বঙ্গবন্ধুর সময়েও ভ্যানগার্ড হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে। এখনো শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই যুবলীগের অন্যতম রোল হবে ভ্যানগার্ড হিসাবে।
যুবলীগের কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রায় দুইহাজার প্রার্থীর মধ্য থেকে যোগ্যতা যাচাই বাছাই করে পদ-পদবী দেয়া হয়েছে। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমাদেরও ভুল বলবো না, কিন্তু একটা ডিসিশন নিতে হয়েছে। সামগ্রিক বিষয় যাচাই বাছাই করে কোন না কোন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সেটা হয়ত অনেক কঠিন ছিল। কারণ আমরা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে করার চেষ্টা করেছি। আমরা কেউ ব্যক্তিগত বায়ার্সড বা ব্যক্তিগত পরিচয়ে এগুলো থেকে আমরা বিবেচনা করি না। সুতরাং আপনারা ধৈয্য ধরেন। আপনারা এই পরিবারের সদস্য, আপনারা আমার ভাই আপানারা আমার সাথে থাকেন। দেখবেন আমরা কি করতে পারি।
ব্যক্তিস্বার্থহীন রাজনীতি বঙ্গবন্ধু কন্যার দ্বারাই সম্ভব দাবি করে পরশ বলেন, তার ত্যাগের অভিজ্ঞতাই তাকে এরকম নেতায় পরিণত করেছেন। আমরা ভাগ্যবান এমন একটা নেত্রীর অধিনে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা যুবলীগ আমাদের যুবলীগ রক্ত দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সাথে থাকবে এবং এই দুর্নীতির ক্যান্সার এই দেশের মাটি থেকে উৎখাত করবে ইনশাআল্লাহ।
রাজনীতির পবিত্রতা আমাদের ধরে রাখতে হবে। রাজনীতি যে পেশায় পরিণত হয়েছে, এটা আমাদের এই মনোবৃত্তি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। রাজনীতি কোন পেশা না, রাজনীতিতে আমরা শ্রম দেবো, দেশের জন্য কিছু করার জন্য, সমাজের জন্য কিছু করার জন্য, দেশকে ভালবেসেই রাজনীতি করতে হবে। আশা করি আমরা সেই ধরনের একটা মনোভাব এবং চর্চা আমাদের আনতে হবে।
বিজনেস আওয়ার/২৯ নভেম্বর, ২০২০/কমা