বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ফের অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪ টাকা পর্যন্ত। এতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। চালের এ অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, অনেক হাসকি মিল বন্ধ হওয়ার কারণে বাজারে চালের সরবরাহ কম। পাশাপাশি, ধানের দাম বেশি। সবকিছু মিলে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। চালের এই দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিৎ শিগগিরই মিল মালিকদের সঙ্গে বসে একটা দাম নির্ধারণ করে দেয়া। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা। না হলে চালের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।
বর্তমানে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৬ টাকায়, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৪ থেকে ৬০ টাকার। অপরদিকে, ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের চালের দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়ে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা হয়েছে। আর মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৪২ থেকে ৪৬ টাকা।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মিনিকেট ও নাজির বা সরু চালের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর মোটা বা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চালের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ।
বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের দাম আমরা বাড়াই না। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়ালে আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হই। মিলে চালের দাম অনেক বেড়েছে, এ কারণে বাজারেও চালের দাম বাড়তি। মূলত: ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দামও বেড়েছে বলে আমাদের ধারণা।
তিনি বলেন, আমি ৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছি। আমার জীবনে আগে কখনও চালের এমন দাম বাড়তে দেখিনি। ধানের দামও অস্বাভাবিক বেড়েছে। চালের এই অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত দ্রুত রশিদ, এরফান, মজুমদার, হান্নান এসব মিল মালিকদের সঙ্গে বসা। তাদের সঙ্গে বসে চালের একটা রেট ধরে (দাম নির্ধারণ) দিলে সুবিধা হবে।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী বলেন, মিল মালিকরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। এখন চালের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে, তার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই। বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে খিলগাঁও তালতলার এক ব্যবসায়ী বলেন, রশিদের মিনিকেট কেজিতে বেড়েছে ৮ টাকা। দুই সপ্তাহের মধ্যে দুই ধাপে এই দাম বেড়েছে। আর রশিদের চালের দাম বাড়ার কারণে অন্যরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ৬২ টাকা কেজির নিচে এখন কোনো খোলা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে না।
রামপুরার ব্যবসায়ী বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারিতে চালের দাম বেড়েই চলেছে। চালের এতো দাম বাড়বে ধারণাও করতে পারিনি। সব থেকে বেশি বেড়েছে মিনিকেট চালের দাম। খোলা মিনিকেট চাল এখন ৬৫-৬৬ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ কিছুদিন আগে এই চাল ৫৬-৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।
বিজনেস আওয়ার/১২ ডিসেম্বর, ২০২০/এ