বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। পুরস্কারটির নাম হবে ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। রোববার (১৩ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের শরৎকালীন ২১০তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই প্রথম জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করল।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ইউনেস্কো শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতিসহ স্বীয় অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গনে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের আর্থিক সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন করে থাকে। ইউনেস্কো অধিক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিমান ব্যক্তি তথা প্রতিষ্ঠানের নামে ২৩টি ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তিত রয়েছে।
মন্ত্রী জানান, প্রতি দুই বছর পর এ পুরস্কার প্রদান করা হবে যার অর্থমান হবে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার। এ পুরস্কারটি প্রথমবারের মত আগামী ২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ইউনেস্কো- এর ৪১ তম সাধারণ সভা চলাকালে প্রদান করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইউনেস্কো তাদের কর্মকাণ্ডে নারী-পুরুষ সমতা এবং যুব উন্নয়নকে নীতিগত প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সে দিক থেকেও এ পুরস্কার ইউনেস্কো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজের অনগ্রসর নারী, অভিবাসী ও প্রবাসী জনগোষ্ঠীর সৃজনশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। এর আগে ১৯৯৯ সালে, ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করার মাধ্যমেও ইউনেস্কো বাংলাদেশকে সম্মানিত করে।
এছাড়া ষাট গম্বুজ মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে এবং বাউল গান, জামদানি, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও শীতল পাটি বিশ্ব অপরিমেয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেছে। আমরা ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের সকল সদস্য রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানাই।
ড. মোমেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন দূরদর্শী চিন্তক ছিলেন। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে তার অংশগ্রহণ, বাক-স্বাধীনতার বিকাশে তার সংগ্রাম, স্বাধীনতার পর বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ সৃষ্টিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
বিজনেস আওয়ার/১৩ ডিসেম্বর, ২০২০/এ