ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে কুড়িগ্রাম

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২০
  • 64

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (কুড়িগ্রাম) : বাংলাদেশের উত্তরে ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে গতকাল শনিবার থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলমান রয়েছে। গতকালের তাপমাত্রা ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে আজ রোববার কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।

এমন হাড় কাঁপানো ঠান্ডাতে চরম বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। তীব্র ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দিনমজুর, খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কুয়াশার চাদর ভেদ কর দেরিতে সূর্যের দেখা মিললেও তীব্র ঠান্ডার কারণে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশু ও বয়স্কদের বিভিন্ন শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালেও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

একদিকে হিমেল হাওয়া আর অন্যদিকে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। তাছাড়া বন্যায় বসতবাড়ীহারা কয়েক হাজার মানুষ রয়েছেন নিদারুণ শীত কষ্টে। অসহায় জীবন যাপন করছেন খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী মানুষজন। শীত বস্ত্রের অভাবে ভোগান্তিতে রয়েছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ।

চলমান শৈত্যপ্রবাহে দুর্দশা বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষদের। কনকনে ঠান্ডার কারণে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না তারা খেটে খাওয়া মানুষজন। একটু উষ্ণতা পাওয়ার আশায় গ্রামাঞ্চলের শীতবস্ত্রহীন মানুষজন তাকিয়ে থাকছেন সূর্যের আলোর দিকে। ঠান্ডার তীব্রতার কারণে হাট-বাজারে লোকের সমাগম অনেকটাই কম দেখা যাচ্ছে।

শীতের প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ এখন সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন।

চরযাত্রাপুর এলাকার ঘোড়ার গাড়ি চালক আবুল হোসেন জানান, তীব্র ঠান্ডার কারণে আমরা চরের মানুষ ঘর হতে বের হতে পারছি না। আমরা গরম কাপড় গায়ে দিয়ে বের হলেও ঘোড়াগুলোর কী হবে? ঠান্ডায় ঘোড়ার অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোদের দেখা মিললে ঘোড়ার গাড়ি বের করব।

এ প্রসঙ্গে বল্লভেরখাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের চারদিক নদ-নদীবেষ্টিত। নদ-নদী অববাহিকার মানুষজন শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মাত্র ৪৫০টি কম্বল পেয়েছি সরকারিভাবে। যা সব থেকে অসহায় মানুষগুলোর মাঝে বিতরণ করেছি। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ খেটে-খাওয়া ও নিম্ন আয়ের হওয়ায় শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। সকলেই তাকিয়ে থাকে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার দিকে।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রোববার (২০ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে আজও তা চলমান রয়েছে। এই মাসে আরও একটি শৈত্য প্রবাহ হতে পারে। এই শীত ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে গিয়ে শেষ হতে পারে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা এখনও খুব বেশি না। তবে শীতজনিত রোগীদের জন্য উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনান্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২০ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে কুড়িগ্রাম

পোস্ট হয়েছে : ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (কুড়িগ্রাম) : বাংলাদেশের উত্তরে ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে গতকাল শনিবার থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলমান রয়েছে। গতকালের তাপমাত্রা ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে আজ রোববার কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।

এমন হাড় কাঁপানো ঠান্ডাতে চরম বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। তীব্র ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দিনমজুর, খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কুয়াশার চাদর ভেদ কর দেরিতে সূর্যের দেখা মিললেও তীব্র ঠান্ডার কারণে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশু ও বয়স্কদের বিভিন্ন শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালেও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

একদিকে হিমেল হাওয়া আর অন্যদিকে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। তাছাড়া বন্যায় বসতবাড়ীহারা কয়েক হাজার মানুষ রয়েছেন নিদারুণ শীত কষ্টে। অসহায় জীবন যাপন করছেন খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী মানুষজন। শীত বস্ত্রের অভাবে ভোগান্তিতে রয়েছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ।

চলমান শৈত্যপ্রবাহে দুর্দশা বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষদের। কনকনে ঠান্ডার কারণে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না তারা খেটে খাওয়া মানুষজন। একটু উষ্ণতা পাওয়ার আশায় গ্রামাঞ্চলের শীতবস্ত্রহীন মানুষজন তাকিয়ে থাকছেন সূর্যের আলোর দিকে। ঠান্ডার তীব্রতার কারণে হাট-বাজারে লোকের সমাগম অনেকটাই কম দেখা যাচ্ছে।

শীতের প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষ এখন সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছেন।

চরযাত্রাপুর এলাকার ঘোড়ার গাড়ি চালক আবুল হোসেন জানান, তীব্র ঠান্ডার কারণে আমরা চরের মানুষ ঘর হতে বের হতে পারছি না। আমরা গরম কাপড় গায়ে দিয়ে বের হলেও ঘোড়াগুলোর কী হবে? ঠান্ডায় ঘোড়ার অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোদের দেখা মিললে ঘোড়ার গাড়ি বের করব।

এ প্রসঙ্গে বল্লভেরখাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের চারদিক নদ-নদীবেষ্টিত। নদ-নদী অববাহিকার মানুষজন শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মাত্র ৪৫০টি কম্বল পেয়েছি সরকারিভাবে। যা সব থেকে অসহায় মানুষগুলোর মাঝে বিতরণ করেছি। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ খেটে-খাওয়া ও নিম্ন আয়ের হওয়ায় শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। সকলেই তাকিয়ে থাকে সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার দিকে।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রোববার (২০ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে আজও তা চলমান রয়েছে। এই মাসে আরও একটি শৈত্য প্রবাহ হতে পারে। এই শীত ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে গিয়ে শেষ হতে পারে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা এখনও খুব বেশি না। তবে শীতজনিত রোগীদের জন্য উপজেলা মেডিকেল টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনান্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২০ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: