বিনোদন ডেস্ক : গত ১৬ ডিসেম্বর ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া অনন্য মামুন পরিচালিত ‘নবাব এলএল.বি’ ছবিতে পুলিশকে ‘হেয়’ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে অভিনেত্রী স্পর্শিয়ার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, ছবিতে অভিনেত্রী স্পর্শিয়া একজন ধর্ষিতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এখানে পুলিশকে হেয় করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা নেই। পরিচালকই এর জন্য মূলত দায়ী।
পুলিশ জানায়, মামলার প্রথম এজাহারে তিন নম্বর আসামী হিসেবে অর্চিতা স্পর্শিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অপরাধের দায়ভার বিশ্লেষণ করে এজাহার থেকে এই অভিনেত্রীর নাম বাদ দেয়া হয়।
এদিকে এজাহারে প্রথম তিন আসামীর তালিকায় স্পর্শিয়ার নাম রয়েছে, এমন খবরের বিপরীতে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, গণমাধ্যম থেকে জানছি আমিও আছি আসামীর তালিকায়। আমাকেও পুলিশ খুঁজছেন। অথচ আমি সারাদিন নিজ বাসাতেই আছি।
তিনি বলেন, আমি এখনো বলছি, থানা, পুলিশ, ডিবি যারাই আমাকে যখন ডাকবেন আমি হাজির হবো। আমাকে খুঁজতে হবে না। আমি তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। এবং আমি যদি অপরাধ করে থাকি, তবে তার শাস্তিও মেনে নেবো।
স্পর্শিয়া আরও বলেন, ঐ দৃশ্যে অভিনয় করা আমার অপরাধ কি না, সেটা তো জানি না। অপরাধ হলে আমি অপরাধী। এই দৃশ্যটি শুট করার সময় আমি বহুবার বলেছি এটা ঠিক হচ্ছে না। তবে এটাও সত্যি, একজন জুনিয়র শিল্পীর এটুকুও বলার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) মধ্য রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে পরিচালক অনন্য মামুন ও অভিনেতা শাহীন মৃধাকে।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) আদালতে নেওয়া হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের পরিদর্শক নাসিরুল আমিন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা (নম্বর ২১) দায়ের করেন। ওই মামলায় পরিচালক অনন্য মামুন, অভিনেতা শাহীন মৃধাসহ তিন জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ধর্ষণের শিকার এক নারী থানায় পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রশ্নোত্তর দেখানো হয়েছে।
সেখানে ধর্ষণের বর্ণনা ও জিজ্ঞাসাবাদ অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষায় করা হয়েছে। যা সুস্থ বিনোদনের পরিপন্থী হওয়ায় পরিবার-পরিজনসহ একত্রে বসে দেখা সম্ভব নয় এবং যা জনসাধারণের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করবে।
এই ভিডিওটি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য অত্যন্ত মানহানিকর এবং ভিডিওর মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে জনসাধারণের সম্মুখে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৬ ডিসেম্বর ‘নবাব এলএল.বি’ চলচ্চিত্রটির অর্ধেকাংশ ‘আই থিয়েটার’ নামে একটি অনলাইন অ্যাপে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি চলচ্চিত্রটির বাকি অংশ মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু মুক্তি দেওয়া অংশের একটি দৃশ্যে ধর্ষণের শিকার নারীকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদের ওই অংশটুকু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে ভাইরাল হলে সেখানে পুলিশ সম্পর্কে মানুষ নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান। আরও আছেন মাহিয়া মাহি, অর্চিতা স্পর্শিয়া, শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহীন মৃধা প্রমুখ। চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে সেলিব্রেটি প্রডাকশন।
বিজনেস আওয়ার/২৬ ডিসেম্বর, ২০২০/এ