ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস-সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
  • 54

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : পাইপলাইনের মাধ্যমে বাসাবাড়িতে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরফলে দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক গ্যাস সংযোগের অপেক্ষায় থাকা গ্রাহকরা আর সংযোগ পাবেন না। ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের আবেদনও বাতিল করে জমাকৃত অর্থ ফেরত দেবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানি।

তথ্যমতে, নতুন সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ফি জমা দেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) জ্বালানি বিভাগ গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার আদেশ দিয়েছে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো সভা করে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের প্রায় সবাই অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছেন। বিতরণ কোম্পানিগুলোর স্থানীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। গ্যাস চুরির কারণে জাতীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে। সরকার বিশাল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। গৃহস্থালিতে আর গ্যাস দেওয়া হবে না। রোববার এ বিষয়ে আমরা একটি সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করবো।

দেশে গ্যাস বিতরণের অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। এসব কোম্পানির কর্মকর্তারা রোববার কিংবা সোমবার সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করবেন।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান জানান, গ্যাসের সব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি এবং সক্ষমতা এখন নেই। তাই আশা ঝুলিয়ে না রেখে সরকারের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়া হলো।

এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে দুই শ্রেণির গ্রাহক সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যার একটি হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিকরা। আরেকটি হলো আবাসন কোম্পানিগুলো। তাদের অনেকেই গ্রাহকদের পাইপলাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এখন সেই সংযোগ না পেলে ফ্ল্যাটের বিক্রি কমে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কোনোভাবেই বন্ধ যাচ্ছিলনা। একটি চক্র নানা প্রলোভন দেখিয়ে জনগণকে অবৈধ সংযোগ নিতে বাধ্য করছে। এখন স্থায়ীভাবে আবাসিক সংযোগ বন্ধ হলে অবৈধ সংযোগ নেওয়া অনেকটাই বন্ধ হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস-সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ

পোস্ট হয়েছে : ১২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : পাইপলাইনের মাধ্যমে বাসাবাড়িতে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরফলে দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক গ্যাস সংযোগের অপেক্ষায় থাকা গ্রাহকরা আর সংযোগ পাবেন না। ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের আবেদনও বাতিল করে জমাকৃত অর্থ ফেরত দেবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানি।

তথ্যমতে, নতুন সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ফি জমা দেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) জ্বালানি বিভাগ গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার আদেশ দিয়েছে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো সভা করে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের প্রায় সবাই অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করছেন। বিতরণ কোম্পানিগুলোর স্থানীয় কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশে বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। গ্যাস চুরির কারণে জাতীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে। সরকার বিশাল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পেয়েছি। গৃহস্থালিতে আর গ্যাস দেওয়া হবে না। রোববার এ বিষয়ে আমরা একটি সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করবো।

দেশে গ্যাস বিতরণের অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। এসব কোম্পানির কর্মকর্তারা রোববার কিংবা সোমবার সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করবেন।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান জানান, গ্যাসের সব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি এবং সক্ষমতা এখন নেই। তাই আশা ঝুলিয়ে না রেখে সরকারের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের জানিয়ে দেওয়া হলো।

এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে দুই শ্রেণির গ্রাহক সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যার একটি হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিকরা। আরেকটি হলো আবাসন কোম্পানিগুলো। তাদের অনেকেই গ্রাহকদের পাইপলাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এখন সেই সংযোগ না পেলে ফ্ল্যাটের বিক্রি কমে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কোনোভাবেই বন্ধ যাচ্ছিলনা। একটি চক্র নানা প্রলোভন দেখিয়ে জনগণকে অবৈধ সংযোগ নিতে বাধ্য করছে। এখন স্থায়ীভাবে আবাসিক সংযোগ বন্ধ হলে অবৈধ সংযোগ নেওয়া অনেকটাই বন্ধ হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: