বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : এখন আগের রাতে ভোট হয়, ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায় না। কোনো কেন্দ্রে শতভাগের বেশি ভোট কাস্টিংও করা হয়। তার পরও সরকার ও কমিশনের বয়ান একই যে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। নিশিরাতের ভোটের সরকার ও বেহায়া নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রযোজনায় এখন চলছে নির্বাচনী সার্কাস। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সারাবিশ্ব জানে যে, বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট আগের রাতেই হয়েছে। গণমাধ্যমসহ সব মাধ্যমে তা প্রকাশিত হলেও সরকারের ভাঁড় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এখনও নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে। এই ইসির অধীনে একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। গণতন্ত্র ধ্বংসে নব্য বাকশালী সরকার ও তাদের মোসাহেব নির্বাচন কমিশনের অপকর্ম শয়তানকেও টপকে গেছে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ইসির অপকর্মের শাস্তির যে দাবি নাগরিক সমাজ করেছে তা এড়ানোর জন্য সিইসিসহ আওয়ামী নেতারা গায়ের জোরে সত্যকে চাপা দিতে চাচ্ছে। এই অপকর্মের বিচার একদিন হবেই।
তিনি বলেন, নাৎসিবাদী আওয়ামী সরকারের নিষ্ঠাবান খাদেম নির্বাচন কমিশনের কারণেই দেশের বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে রক্ত ঝরছে। শুধু পুরুষরাই নয়, এখন নারীদেরও জীবন কেড়ে নিচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। তারই সর্বশেষ শিকার হলেন টাঙ্গাইল জেলাধীন গোপালপুর পৌর মহিলা দলের সভানেত্রী ও মহিলা কমিশনার হাবিজা বেগম।
তাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যেই মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে গুরুতর আহত করে। গত পরশু রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এটি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের একটি কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ড। এই মনুষ্যত্বহীন ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।
রিজভী বলেন, এ দেশ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন নামক শব্দটি চিরতরে উচ্ছেদের পর কেউ যেন এ বিষয়ে টু শব্দ করতে না পারে, সে জন্য দেশব্যাপী বিভিন্ন জনপদে সশস্ত্র আওয়ামী ক্যাডারদের মোতায়েন করেছে বর্তমান সরকার। বিরোধী দলের যে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলেই বা তার পক্ষে কেউ প্রচারণা চালাতে গেলে তাকে জীবন হারাতে হয় কিংবা চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বিনাভোটে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী সরকার এখন বেপরোয়া। তারা নির্বাচন ঘোষণা করবে কিন্তু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে দেবে না। বিরোধী দলের কেউ যদি সাহস করে নির্বাচনে নামে তা হলে তার ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতনের খড়গ। সারা দেশে এখন দুষ্কৃতকারীরাই আওয়ামী লীগ করে। তাই জনগণ এদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পেশাদার ঘাতক, লুণ্ঠনকারী, নিপীড়নকারী ও অন্যের সম্পদ হরণকারীদের মাধ্যমেই এখন আওয়ামী লীগ চলছে। সুতরাং বাংলাদেশে ‘৭১-এর ৯ মাসে যে পরিবেশ বিরাজ করছিল, এখন বাংলাদেশে সেই পরিবেশই বিরাজ করছে।
বিজনেস আওয়ার/২৭ ডিসেম্বর, ২০২০/এ