ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা অনুকূলে না আসলে স্কুল-কলেজ খুলবে না : প্রধানমন্ত্রী

  • পোস্ট হয়েছে : ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
  • 47

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। তবে অনলাইনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বই বিতরণ উৎসব উদ্বোধনের সময় তিনি এই কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই উৎসবের উদ্বোধন করেন।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়।

আগামীকাল বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২দিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।

সময়মতো বই বিতরণের ব্যবস্থা করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পাঠ কার্যক্রম যেন ঠিকমতো চলে সেজন্য আমরা করোনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে স্কুল শিক্ষার্থীরা। তারা যেন নতুন বইটা পায়, নতুন বইয়ে নিজের নামটা লিখতে পারে, নতুন বইয়ের আনন্দটা পায় সেই চেষ্টা আমরা করেছি।

করোনোর কারণে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। স্কুল খোলা সম্ভব না হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান চলবে। ভর্তির ব্যবস্থাটাও অনলাইনে চলবে।

তিনি বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ছেলেমেয়েদের সময় দেবেন। তারা যেন খেলাধুলা করতে পারের সেই ব্যবস্থা করবেন। তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল রাখবেন। শুধু ঘরে বসে না থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাইকে খোলা ও আলো-বাতাসপূর্ণ জায়গায় বের হওয়ার পরামর্শ দেন।

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই এসব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি বই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য দুই কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১ টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ছয় কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪ টি।

এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে।

এবছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাকে মানসম্মত করার লক্ষ্যে এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এবার বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে বই উৎসব করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের গন্ধ পাবে।

বিজনেস আওয়ার/৩১ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

করোনা অনুকূলে না আসলে স্কুল-কলেজ খুলবে না : প্রধানমন্ত্রী

পোস্ট হয়েছে : ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। তবে অনলাইনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলবে। বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বই বিতরণ উৎসব উদ্বোধনের সময় তিনি এই কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই উৎসবের উদ্বোধন করেন।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র মিলনায়তনে মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হয়।

আগামীকাল বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় বই বিতরণ শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তিন দিন করে মোট ১২দিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই বিতরণ করা হবে।

সময়মতো বই বিতরণের ব্যবস্থা করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পাঠ কার্যক্রম যেন ঠিকমতো চলে সেজন্য আমরা করোনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে স্কুল শিক্ষার্থীরা। তারা যেন নতুন বইটা পায়, নতুন বইয়ে নিজের নামটা লিখতে পারে, নতুন বইয়ের আনন্দটা পায় সেই চেষ্টা আমরা করেছি।

করোনোর কারণে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। স্কুল খোলা সম্ভব না হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান চলবে। ভর্তির ব্যবস্থাটাও অনলাইনে চলবে।

তিনি বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা ছেলেমেয়েদের সময় দেবেন। তারা যেন খেলাধুলা করতে পারের সেই ব্যবস্থা করবেন। তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটা খেয়াল রাখবেন। শুধু ঘরে বসে না থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবাইকে খোলা ও আলো-বাতাসপূর্ণ জায়গায় বের হওয়ার পরামর্শ দেন।

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পয়লা জানুয়ারি বই উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই এসব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। এবার ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি বই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সর্বমোট পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা ১০ কোটি ২৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য দুই কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ৬৭১ টি বই, তৃতীয়-চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ছয় কোটি ৯৬ লাখ, ৯৭ হাজার ৩৭৪ টি।

এর মধ্যে ৯৪ হাজার ২৭৫ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী) শিশুদের জন্য পাঁচটি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার ২৮৮টি বিশেষ ভাষায় বই বিতরণ করা হবে। তবে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষায় শুধুমাত্র বাংলা বইটি পাবে।

এবছর সাঁওতাল ভাষায় পাঠ্যপুস্তক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার ৯ হাজার ১৯৬ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য ব্রেইল পদ্ধতির বই বিতরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষাকে মানসম্মত করার লক্ষ্যে এবং ঝরে পড়ার হার রোধ করতে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে ‘বই উৎসব’ করে আসছে। এবার বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে বই উৎসব করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের গন্ধ পাবে।

বিজনেস আওয়ার/৩১ ডিসেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: