বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা এবং তাদের পদত্যাগের দাবিতে দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। রোববার (৩ জানিয়ারি) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্মসূচিগুলো হলো- দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদ ৭ জানুয়ারি সারাদেশে থানা পর্যায়ে মানববন্ধন এবং আগামী ১০ জানুয়ারি সারাদেশে পৌরসভা এবং মহানগরে মানববন্ধন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য। চালের দাম বেড়েছে, ডালের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, শাক-সবজির দাম বেড়েছে। এটা এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এই কারণে আমরা দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ৭ জানুয়ারি সারাদেশে থানা পর্যায়ে মানববন্ধন করবে বিএনপি।
বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এও মনে করি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে বানিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। এই দাবিটিও আমাদের কর্মসূচিতে থাকবে।
পৌরসভা নির্বাচনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের যে ব্যর্থতা, তাদের যে উদাসীনতা, তাদের যে দুর্নীতি এবং পুরোপুরিভাবে বলা যেতে পারে একটা পক্ষপাতিত্ব নির্বাচন করবার যে উদ্দেশ্য সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা বারবার বক্তব্য রেখে আসছি।
এই নির্বাচন কমিশন তারা ব্যালট বলুন আর ইভিএম বলুন কোনটাতেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার যোগ্য নয়। আমরা মনে করি, এই কমিশন একেবারেই সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হয়েছে। অবিলম্বে কাল বিলম্ব না করে প্রধান নির্বাচনসহ সকল কমিশনারের পদত্যাগ করা উচিত একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ১০ জানুয়ারি পৌর সভা ও মহানগরীতে মানববন্ধন করবে বিএনপি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, চালের দাম বেড়েই চলেছে। যেটা আশঙ্কাজনক এবার চালের উতপাদন কম হয়েছে। যার ফলে মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। সরকার যখন ২০০৮ সালে নির্বাচন করে তখন জনগনের কাছে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলেছিল। তারা বলেছিলো ১০ টাকা কেজি চাল দেবে, বিনা পয়সায় সার দেবে এবং ঘরে ঘরে চাকরি দেবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল পত্রিকায় খবর বেরিয়েয়ে যে, ১০ টাকা কেজি চালের ৭ লাখ কার্ড ভুয়া। এটা সরকারের খাদ্য অধিদফতর বলছে। তাহলে বুঝতে পারেন যে, এটা নিয়ে কি ধরনের দুর্নীতি চলছে। ১০ টাকা কেজি চাল কিনে তা ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে বাজারে। সেটা সরকারি দলের মদদপুষ্ট লোকরা করছে।
ভারত থেকে করোনার টিকা কেনার বিষয়ে ফখরুল বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মানুষ কীভাবে পাবে, কারা পাবে এবং এর সংরক্ষণ ও বিতরণ করার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলেননি। এর একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, টিকার জন্য সরকার নিজে সেরাম ইনস্টিটিউটকে টাকা না দিয়ে বেক্সিমকোর মাধ্যমে কেন দিচ্ছ? বেক্সিমকোর এখানে কত কমিশন আছে, সেটাও জানতে চাই। আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখছি, এই বিষয়টা সরকারের সঙ্গে সরকার ডিল করছে অথবা সরকার সরাসরি সেই কোম্পানির সঙ্গে ডিল করছে।
বিজনেস আওয়ার/০৩ জানুয়ারি, ২০২০/এ