ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রেমিটেন্স বেড়েছে ৩৭.৫৯ শতাংশ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৩ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই-ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ৯ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার ছিল।

গেলো বছরের ডিসেম্বরে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। আগের মাস নভেম্বরে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের জুলাই অতীতের সব সময়ের চেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

প্রবাসীরা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন দেশে। ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করায় রেমিটেন্স অনেক বেশি অবদান রেখেছে। সাত মাস আগেও গত বছরের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার।

দেশে অধিক হারে রেমিটেন্স আসার কারণ জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, তিনটি কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। প্রথমত, গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার পর অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করতে অনেক প্রবাসী বেশি পরিমাণে অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, আমানতের সুদহার, বিশেষ করে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের বিপরীতে সুদের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। যা কারণে প্রবাসীদের অনেকেই দেশে বিনিয়োগের জন্য অধিক পরিমাণে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হয়েছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ দু’টি কারণই আগামী দিনে অধিক পরিমাণে রেমিটেন্স দেশে আনতে অবদান রাখবে।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের তিন শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া। সরকার ২ শতাংশ এবং কিছু ব্যাংক আরও ১ শতাংশ দিয়ে হচ্ছে। রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহী করার উদ্যোগ ফল দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারিতে বিধিনিষেধের কারণে বিদেশ যাতায়াত বন্ধ থাকায় অর্থ পাচারের পরিমাণও সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। এতে নগদ ডলারের চাহিদাও কমে গেছে। চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে অবৈধ অর্থ ব্যবসায়ীরা ডলারের মূল্য কম দিচ্ছিল, অবৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানো কম লাভজনক।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জানুয়ারি, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রেমিটেন্স বেড়েছে ৩৭.৫৯ শতাংশ

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৩ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই-ডিসেম্বর মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই মাসে ৯ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার ছিল।

গেলো বছরের ডিসেম্বরে দেশে রেমিটেন্স এসেছে ২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। আগের মাস নভেম্বরে এসেছিল ২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের জুলাই অতীতের সব সময়ের চেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

প্রবাসীরা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন দেশে। ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করায় রেমিটেন্স অনেক বেশি অবদান রেখেছে। সাত মাস আগেও গত বছরের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ বিলিয়ন ডলার।

দেশে অধিক হারে রেমিটেন্স আসার কারণ জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, তিনটি কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে। প্রথমত, গত বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ও বন্যার পর অর্থনৈতিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করতে অনেক প্রবাসী বেশি পরিমাণে অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, আমানতের সুদহার, বিশেষ করে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগের বিপরীতে সুদের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। যা কারণে প্রবাসীদের অনেকেই দেশে বিনিয়োগের জন্য অধিক পরিমাণে অর্থ পাঠাতে উৎসাহী হয়েছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এ দু’টি কারণই আগামী দিনে অধিক পরিমাণে রেমিটেন্স দেশে আনতে অবদান রাখবে।

তৃতীয়ত, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের তিন শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া। সরকার ২ শতাংশ এবং কিছু ব্যাংক আরও ১ শতাংশ দিয়ে হচ্ছে। রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহী করার উদ্যোগ ফল দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারিতে বিধিনিষেধের কারণে বিদেশ যাতায়াত বন্ধ থাকায় অর্থ পাচারের পরিমাণও সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। এতে নগদ ডলারের চাহিদাও কমে গেছে। চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে অবৈধ অর্থ ব্যবসায়ীরা ডলারের মূল্য কম দিচ্ছিল, অবৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানো কম লাভজনক।

বিজনেস আওয়ার/০৪ জানুয়ারি, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: