ঢাকা , বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেয়ারবাজারে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানির তালিকায় ওয়ালটন

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শীর্ষ শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) অর্জন করা কোম্পানির তালিকায় বিডিং সম্পন্ন করা ওয়ালটন হাইটেক পার্ক ইন্ডাস্ট্রিজ। যে কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি ইপিএস নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। যেখানে ওয়ালটনের সমান ও বেশি ইপিএসের কোন কোম্পানির শেয়ার দর এখন ৬৯৩ টাকার নিচে নেই।

প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের ওয়ালটনে ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৪ হাজার ১৬২ টাকার সংরক্ষিত আয় (রিটেইন আর্নিংস) রয়েছে। এ কোম্পানিটির ২০১৯ সালের ৩০ জুন নিট সম্পদের পরিমাণ দাড়িঁয়েছে ৭ হাজার ২৯৭ কোটি ৮০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬৮ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারে ২৪৩.১৬ টাকার সম্পদ রয়েছে।

ওয়ালটনের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিট টার্নওভার বা পণ্য বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১৭৭ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার। এই বিক্রি থেকে সব ব্যয় শেষে নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ১১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এতে করে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪৫.৮৭ টাকা।

ওয়ালটনের ইস্যু ম্যানেজার এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়দুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ওয়ালটন একটি ভালো কোম্পানি। এ জাতীয় ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে সহজেই আসার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। যা শেয়ারবাজারের জন্য খুব ভালো হয়।

ওয়ালটনের ইপিএস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি প্রথম সারির কোম্পানিগুলোর তালিকায়। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ অর্থবছরের ইপিএসের বিবেচনায় ওয়ালটন ৮ম স্থানে রয়েছে। এমনকি বহুজাতিক বার্জার পেইন্টস ও গ্রামীণফোনের থেকে ওয়ালটনের ইপিএস বেশি।

শেয়ারবাজারে শীর্ষে থাকা সর্বশেষ অর্থবছরে রেকিট বেনকিজারের ইপিএস হয়েছে ১৩১.০৬ ইপিএস টাকা। এরপরে ম্যারিকো বাংলাদেশের ৮৪.০১ টাকা, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ৮১.৮৩, লিন্ডে বিডির ৮০.৯৩ টাকা, বাটা সুর ৭২.৭৯ টাকা, বিট্রিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৫১.৩৭ টাকা ও রেনেটার ৪৬.৬৩ টাকা। এরপরেই রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পথে থাকা ওয়ালটন। এ কোম্পানির ইপিএস ৪৫.৮৭ টাকা।

এরপরে বার্জার পেইন্টসের ৪৪.১৩ টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৩৫.১১ টাকা, পদ্মা অয়েলের ২৯.০৭ টাকা, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ২৩.৪৫ টাকা, গ্রামীণফোনের ২৫.৫৬ টাকা ও যমুনা অয়েলের ২১.১৯ টাকা ইপিএস রয়েছে।

শেয়ারবাজারে ওয়ালটনের সমান ও বেশি ইপিএস থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন শেয়ার দর অবস্থান করছে বাটা সুর। এ কোম্পানির শেয়ার দর রয়েছে ৬৯৩.২০ টাকায়। আর ওয়ালটন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে ৩১৫ টাকায়। তবে লেনদেন শুরু হওয়ার পরে প্রতিনিয়ত উঠা-নামার সুযোগ থাকবে। 

নিম্নে শেয়ারবাজারে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানিগুলোর ৭ জুনের শেয়ার দরের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইপিএস (টাকা)শেয়ার দর (টাকা)  
রেকিট বেনকিজার১৩১.০৬৩০৯৪.৫
ম্যারিকো বাংলাদেশ৮৪.০১১৫৬২.৫০
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন৮১.৮৩২০৪৬.৩০
লিন্ডে বিডি৮০.৯৩১২৭২.৭০
বাটা সু৭২.৭৯৬৯৩.২০
বিএটিবিসি৫১.৩৭৯০৭.৬০
রেনেটা৪৬.৬৩১০২৬.২০
ওয়ালটন৪৫.৮৭৩১৫ (কাট-অফ প্রাইস)
বার্জার পেইন্টস৪৪.১৩১৩০৮.৬০

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন গঠনের ২৭ বছরে যতগুলো ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম ম্যারিকো বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও বার্জার পেইন্টস। এই ৩ কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোন সর্বোচ্চ ১২.৫৯ টাকা ইপিএস নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

নিম্নে কোম্পানি ৩টির তালিকাভুক্তির সময়কালীন ইপিএসের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামতালিকাভুক্তিইপিএস
ম্যারিকো বাংলাদেশ২০০৯২.৭৮ (১ম প্রান্তিক)
গ্রামীণফোন২০০৯১২.৫৯ টাকা
বার্জার পেইন্টস২০০৬৯.৫৩ টাকা

শেয়ারবাজারে আসার আগেই শেয়ার ইস্যু (প্লেসমেন্ট) নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে একটি গ্রুপ টাকা বের করে নিয়ে যায় বলে বিতর্ক আছে। তবে ওয়ালটন সেদিকে পা বাড়ায়নি। এ কোম্পানির কোন প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হয়নি। যাতে ৩০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের পুরোটাই উদ্যোক্তা/পরিচালকদের দখলে রয়েছে।

বিডিংয়ে ওয়ালটনের কাট-অফ প্রাইস হয়েছে ৩১৫ টাকা। তবে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্টে আইপিওতে শেয়ার ইস্যুর বিধান থাকলেও ওয়ালটন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টে প্রতিটি শেয়ার ২৫২ টাকা করে ইস্যু করবে। অর্থাৎ শুরুতেই আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা প্রতিটি শেয়ারে ৬৩ টাকা লাভবান হবেন।

এ বিষয়ে ওয়ালটনের সচিব পার্থ প্রতিম দাস বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমরা বিনিয়োগকারী তথা পুরো শেয়ারবাজারের স্বার্থে আইপিওতে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টে শেয়ার ইস্যুর আবেদন করেছি। এতে সাধারন বিনিয়োগকারীরা বেশি লাভবান হবেন। যা বিএসইসির অনুমোদনের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে।  

ইপিএসে শীর্ষে থাকা ৯টি কোম্পানির মধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মালিকানার বাহিরে বা লেনদেনযোগ্য (ফ্রি ফ্লোট) শেয়ার বিবেচনায় ওয়ালটনের অবস্থান হবে ষষ্ঠ। অর্থাৎ শীর্ষ ইপিএসের ৩ কোম্পানির লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা ওয়ালটনের থেকে কম। ওয়ালটনের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার রেকিট বেনকিজার, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ও বার্জার পেইন্টসের থেকে বেশি হবে।

নিম্নে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানিগুলোর ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইপিএসলেনদেনযোগ্য শেয়ার
রেকিট বেনকিজার১৩১.০৬০.০৮ কোটি
ম্যারিকো বাংলাদেশ৮৪.০১০.৩২ কোটি
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন৮১.৮৩০.২২ কোটি
লিন্ডে বিডি৮০.৯৩০.৬১ কোটি
বাটা সু৭২.৭৯০.৪১ কোটি
বিএটিবিসি৫১.৩৭৪.৮৮ কোটি
রেনেটা৪৬.৬৩৪.৩৩ কোটি
ওয়ালটন৪৫.৮৭০.২৯ কোটি
বার্জার পেইন্টস৪৪.১৩০.২৩ কোটি

ওয়ালটনের আয়ের ৮৮ শতাংশ আসে রেফ্রিজারেটর বিক্রি থেকে। এছাড়া টেলিভিশন থেকে ৬.১০ শতাংশ, এসি থেকে ৪.৫০ শতাংশ, গৃহস্থালি পণ্য বিক্রি থেকে ১.১০ শতাংশ ও অন্যান্য ইলেকট্রিক পণ্য থেকে ০.৩০ শতাংশ আয় হয়।

কোম্পানিটির ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশীয় বাজারে ৪ হাজার ৫৪৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২২৫ কোটি ১০ লাখ টাকার এসি বিক্রি হয়েছে। নিম্নে ওয়ালটনের গত ৫ অর্থবছরের দেশের বাজারে বিক্রি ও রপ্তানির তথ্য তুলে ধরা হল-

ওয়ালটন ২০২১-২২ অর্থবছরে রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের পরিমাণ ১৮ লাখ ৫১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ লাখ ৭০ হাজার করতে চায়। এছাড়া এসি ৫১ হাজার থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার, কম্প্রেসার ৬ লাখ ৯৭ হাজার থেকে ১৮ লাখ, টেলিভিশন ২ লাখ ৭৩ হাজার থেকে ৮ লাখ ১০ হাজার করতে চায়।

নিম্নে কোম্পানিটির ভবিষ্যত লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরা হল-

ওয়ালটনের কারখানা গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় অবস্থিত। কোম্পানিটির ৪২৯.৬৫ একর জমি রয়েছে। এই জমির মধ্যে কারখানায় উৎপাদন প্লান্টে কাজের জন্য ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ১৭৩ স্কয়ার ফিট জায়গা রয়েছে। যেখানে বাৎসরিক সাড়ে ১৭ লাখ রেফ্রিজারেটর, ৫০ হাজার এসি, ৩ লাখ টিভি ও ১০ লাখ কম্প্রেসার তৈরীর সক্ষমতা রয়েছে। এ কোম্পানিটির দখলে রয়েছে দেশীয় রেফিজারেটর বাজারের ৭০ শতাংশ।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৬ সালের ১৭ এপ্রিল প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে গঠিত। ২০০৮ সালে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৮ সালের ১৪ মে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তর হয়। রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার এবং কম্প্রেশার উৎপাদন দিয়ে যাত্রা শুরু করা ওয়ালটন এখন টেলিভিশনসহ ইলেকট্রিকাল জিনিসপত্র তৈরী করে। এ কোম্পানি মূলত ওয়ালটন এবং মার্সেল ব্র্যান্ডে পণ্য বাজারজাত করে।

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শেয়ারবাজারে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানির তালিকায় ওয়ালটন

পোস্ট হয়েছে : ১২:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শীর্ষ শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) অর্জন করা কোম্পানির তালিকায় বিডিং সম্পন্ন করা ওয়ালটন হাইটেক পার্ক ইন্ডাস্ট্রিজ। যে কোম্পানিটি সবচেয়ে বেশি ইপিএস নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। যেখানে ওয়ালটনের সমান ও বেশি ইপিএসের কোন কোম্পানির শেয়ার দর এখন ৬৯৩ টাকার নিচে নেই।

প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, ৩০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের ওয়ালটনে ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৪ হাজার ১৬২ টাকার সংরক্ষিত আয় (রিটেইন আর্নিংস) রয়েছে। এ কোম্পানিটির ২০১৯ সালের ৩০ জুন নিট সম্পদের পরিমাণ দাড়িঁয়েছে ৭ হাজার ২৯৭ কোটি ৮০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৬৮ টাকা। অর্থাৎ প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারে ২৪৩.১৬ টাকার সম্পদ রয়েছে।

ওয়ালটনের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিট টার্নওভার বা পণ্য বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১৭৭ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার। এই বিক্রি থেকে সব ব্যয় শেষে নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ১১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এতে করে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪৫.৮৭ টাকা।

ওয়ালটনের ইস্যু ম্যানেজার এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. ওবায়দুর রহমান বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ওয়ালটন একটি ভালো কোম্পানি। এ জাতীয় ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে সহজেই আসার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। যা শেয়ারবাজারের জন্য খুব ভালো হয়।

ওয়ালটনের ইপিএস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি প্রথম সারির কোম্পানিগুলোর তালিকায়। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ অর্থবছরের ইপিএসের বিবেচনায় ওয়ালটন ৮ম স্থানে রয়েছে। এমনকি বহুজাতিক বার্জার পেইন্টস ও গ্রামীণফোনের থেকে ওয়ালটনের ইপিএস বেশি।

শেয়ারবাজারে শীর্ষে থাকা সর্বশেষ অর্থবছরে রেকিট বেনকিজারের ইপিএস হয়েছে ১৩১.০৬ ইপিএস টাকা। এরপরে ম্যারিকো বাংলাদেশের ৮৪.০১ টাকা, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ৮১.৮৩, লিন্ডে বিডির ৮০.৯৩ টাকা, বাটা সুর ৭২.৭৯ টাকা, বিট্রিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৫১.৩৭ টাকা ও রেনেটার ৪৬.৬৩ টাকা। এরপরেই রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পথে থাকা ওয়ালটন। এ কোম্পানির ইপিএস ৪৫.৮৭ টাকা।

এরপরে বার্জার পেইন্টসের ৪৪.১৩ টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৩৫.১১ টাকা, পদ্মা অয়েলের ২৯.০৭ টাকা, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ২৩.৪৫ টাকা, গ্রামীণফোনের ২৫.৫৬ টাকা ও যমুনা অয়েলের ২১.১৯ টাকা ইপিএস রয়েছে।

শেয়ারবাজারে ওয়ালটনের সমান ও বেশি ইপিএস থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন শেয়ার দর অবস্থান করছে বাটা সুর। এ কোম্পানির শেয়ার দর রয়েছে ৬৯৩.২০ টাকায়। আর ওয়ালটন শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে ৩১৫ টাকায়। তবে লেনদেন শুরু হওয়ার পরে প্রতিনিয়ত উঠা-নামার সুযোগ থাকবে। 

নিম্নে শেয়ারবাজারে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানিগুলোর ৭ জুনের শেয়ার দরের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইপিএস (টাকা)শেয়ার দর (টাকা)  
রেকিট বেনকিজার১৩১.০৬৩০৯৪.৫
ম্যারিকো বাংলাদেশ৮৪.০১১৫৬২.৫০
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন৮১.৮৩২০৪৬.৩০
লিন্ডে বিডি৮০.৯৩১২৭২.৭০
বাটা সু৭২.৭৯৬৯৩.২০
বিএটিবিসি৫১.৩৭৯০৭.৬০
রেনেটা৪৬.৬৩১০২৬.২০
ওয়ালটন৪৫.৮৭৩১৫ (কাট-অফ প্রাইস)
বার্জার পেইন্টস৪৪.১৩১৩০৮.৬০

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন গঠনের ২৭ বছরে যতগুলো ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম ম্যারিকো বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও বার্জার পেইন্টস। এই ৩ কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোন সর্বোচ্চ ১২.৫৯ টাকা ইপিএস নিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়।

নিম্নে কোম্পানি ৩টির তালিকাভুক্তির সময়কালীন ইপিএসের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামতালিকাভুক্তিইপিএস
ম্যারিকো বাংলাদেশ২০০৯২.৭৮ (১ম প্রান্তিক)
গ্রামীণফোন২০০৯১২.৫৯ টাকা
বার্জার পেইন্টস২০০৬৯.৫৩ টাকা

শেয়ারবাজারে আসার আগেই শেয়ার ইস্যু (প্লেসমেন্ট) নিয়ে নানা সমালোচনা আছে। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে একটি গ্রুপ টাকা বের করে নিয়ে যায় বলে বিতর্ক আছে। তবে ওয়ালটন সেদিকে পা বাড়ায়নি। এ কোম্পানির কোন প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হয়নি। যাতে ৩০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের পুরোটাই উদ্যোক্তা/পরিচালকদের দখলে রয়েছে।

বিডিংয়ে ওয়ালটনের কাট-অফ প্রাইস হয়েছে ৩১৫ টাকা। তবে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্টে আইপিওতে শেয়ার ইস্যুর বিধান থাকলেও ওয়ালটন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টে প্রতিটি শেয়ার ২৫২ টাকা করে ইস্যু করবে। অর্থাৎ শুরুতেই আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা প্রতিটি শেয়ারে ৬৩ টাকা লাভবান হবেন।

এ বিষয়ে ওয়ালটনের সচিব পার্থ প্রতিম দাস বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমরা বিনিয়োগকারী তথা পুরো শেয়ারবাজারের স্বার্থে আইপিওতে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টে শেয়ার ইস্যুর আবেদন করেছি। এতে সাধারন বিনিয়োগকারীরা বেশি লাভবান হবেন। যা বিএসইসির অনুমোদনের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে।  

ইপিএসে শীর্ষে থাকা ৯টি কোম্পানির মধ্যে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মালিকানার বাহিরে বা লেনদেনযোগ্য (ফ্রি ফ্লোট) শেয়ার বিবেচনায় ওয়ালটনের অবস্থান হবে ষষ্ঠ। অর্থাৎ শীর্ষ ইপিএসের ৩ কোম্পানির লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা ওয়ালটনের থেকে কম। ওয়ালটনের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার রেকিট বেনকিজার, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ও বার্জার পেইন্টসের থেকে বেশি হবে।

নিম্নে শীর্ষ ইপিএসের কোম্পানিগুলোর ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের তথ্য তুলে ধরা হল-

কোম্পানির নামইপিএসলেনদেনযোগ্য শেয়ার
রেকিট বেনকিজার১৩১.০৬০.০৮ কোটি
ম্যারিকো বাংলাদেশ৮৪.০১০.৩২ কোটি
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন৮১.৮৩০.২২ কোটি
লিন্ডে বিডি৮০.৯৩০.৬১ কোটি
বাটা সু৭২.৭৯০.৪১ কোটি
বিএটিবিসি৫১.৩৭৪.৮৮ কোটি
রেনেটা৪৬.৬৩৪.৩৩ কোটি
ওয়ালটন৪৫.৮৭০.২৯ কোটি
বার্জার পেইন্টস৪৪.১৩০.২৩ কোটি

ওয়ালটনের আয়ের ৮৮ শতাংশ আসে রেফ্রিজারেটর বিক্রি থেকে। এছাড়া টেলিভিশন থেকে ৬.১০ শতাংশ, এসি থেকে ৪.৫০ শতাংশ, গৃহস্থালি পণ্য বিক্রি থেকে ১.১০ শতাংশ ও অন্যান্য ইলেকট্রিক পণ্য থেকে ০.৩০ শতাংশ আয় হয়।

কোম্পানিটির ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশীয় বাজারে ৪ হাজার ৫৪৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২২৫ কোটি ১০ লাখ টাকার এসি বিক্রি হয়েছে। নিম্নে ওয়ালটনের গত ৫ অর্থবছরের দেশের বাজারে বিক্রি ও রপ্তানির তথ্য তুলে ধরা হল-

ওয়ালটন ২০২১-২২ অর্থবছরে রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের পরিমাণ ১৮ লাখ ৫১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ লাখ ৭০ হাজার করতে চায়। এছাড়া এসি ৫১ হাজার থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার, কম্প্রেসার ৬ লাখ ৯৭ হাজার থেকে ১৮ লাখ, টেলিভিশন ২ লাখ ৭৩ হাজার থেকে ৮ লাখ ১০ হাজার করতে চায়।

নিম্নে কোম্পানিটির ভবিষ্যত লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরা হল-

ওয়ালটনের কারখানা গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় অবস্থিত। কোম্পানিটির ৪২৯.৬৫ একর জমি রয়েছে। এই জমির মধ্যে কারখানায় উৎপাদন প্লান্টে কাজের জন্য ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ১৭৩ স্কয়ার ফিট জায়গা রয়েছে। যেখানে বাৎসরিক সাড়ে ১৭ লাখ রেফ্রিজারেটর, ৫০ হাজার এসি, ৩ লাখ টিভি ও ১০ লাখ কম্প্রেসার তৈরীর সক্ষমতা রয়েছে। এ কোম্পানিটির দখলে রয়েছে দেশীয় রেফিজারেটর বাজারের ৭০ শতাংশ।

ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৬ সালের ১৭ এপ্রিল প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে গঠিত। ২০০৮ সালে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৮ সালের ১৪ মে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তর হয়। রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার এবং কম্প্রেশার উৎপাদন দিয়ে যাত্রা শুরু করা ওয়ালটন এখন টেলিভিশনসহ ইলেকট্রিকাল জিনিসপত্র তৈরী করে। এ কোম্পানি মূলত ওয়ালটন এবং মার্সেল ব্র্যান্ডে পণ্য বাজারজাত করে।

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: